Скачать или смотреть মধুর কন্ঠে হযরত ওমরের নতুন ঘটনা,গভীর মন দিয়ে শুনুনওয়াজ || শুয়াইব আহমদ আশ্রাফী waz

হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) ইসলামের ইতিহাসে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রধান সাহাবীদের অন্যতম।
তাঁর জীবন কাহিনী সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলো:
প্রাথমিক জীবন ও ইসলাম গ্রহণের পূর্বের সময়
জন্ম ও বংশ: তিনি আনুমানিক ৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে মক্কার কুরাইশ বংশের বনু আদি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষা ও দক্ষতা: তৎকালীন আরবে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষিতদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন। তিনি কাব্যচর্চায় দক্ষ ছিলেন এবং কুস্তি, অশ্বারোহণ, ও অসি চালনায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীও ছিলেন।
ইসলামের প্রতি বিরোধিতা: ইসলামের প্রাথমিক দিনগুলোতে হযরত ওমর (রা.) ছিলেন ইসলামের ঘোর বিরোধী। তিনি নও মুসলিমদের প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করতেন।
ইসলাম গ্রহণ ও 'আল-ফারুক' উপাধি লাভ
ইসলাম গ্রহণ: ৬১৬ খ্রিষ্টাব্দে, প্রায় ৩৩ বছর বয়সে, তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণ ইসলামের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। রাসূল (সা.) তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন।
ধর্মান্তরের ঘটনা: তিনি একদা রাসূল (সা.)-কে হত্যা করার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। পথে তাঁর বোন ও ভগ্নিপতির ইসলাম গ্রহণের খবর পেয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে কোরআনের কিছু অংশ (সূরা 'ত্ব-হা') শুনে মুগ্ধ হন এবং ইসলামের সত্যতা উপলব্ধি করেন। এরপর তিনি রাসূল (সা.)-এর কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।
আল-ফারুক উপাধি: ইসলাম গ্রহণের পর নবী করীম (সা.) তাঁকে "আল-ফারুক" উপাধিতে ভূষিত করেন, যার অর্থ 'সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী'। তাঁর ইসলাম গ্রহণের পর মুসলিম সমাজ প্রকাশ্যে কাবা শরীফে নামাজ আদায় করার সাহস পায়।
খিলাফতের সময়কাল (৬৩৪ - ৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ)
দ্বিতীয় খলিফা: হযরত আবু বকর (রা.)-এর ইন্তেকালের পর ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং দশ বছরেরও বেশি সময় শাসনকার্য পরিচালনা করেন।
ন্যায়বিচার ও শাসন: তিনি তাঁর ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর শাসনকাল ছিল সরলতা, কঠোর নীতি, এবং প্রজাদের প্রতি মমতার এক আদর্শ উদাহরণ। তিনি সাধারণ প্রজাদের খোঁজখবর নিতে রাতের অন্ধকারে মদীনার রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন।
সাম্রাজ্যের বিস্তার: তাঁর শাসনামলে মুসলিম সাম্রাজ্যের অভূতপূর্ব বিস্তার ঘটে। পারস্য, সিরিয়া, ইরাক, মিশর এবং জেরুজালেম মুসলিমদের অধীনে আসে।
প্রশাসনিক সংস্কার: তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য একটি উন্নত প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি হিজরি সনের প্রবর্তন করেন।
তিনি দিওয়ান (রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও পেনশন ব্যবস্থা) প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি নিয়মিত পুলিশ ব্যবস্থা এবং বিচারকের (কাজী) পদ তৈরি করেন।
তিনি দরিদ্র ও অভাবীদের জন্য সামাজিক কল্যাণের কর্মসূচি চালু করেন।
শাহাদাত
মৃত্যু: ৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দে, নামাজরত অবস্থায় এক পারস্যদেশীয় ক্রীতদাস আবু লু'লু'আ ফিরোজের ছুরিকাঘাতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন এবং এর কয়েক দিন পর শাহাদাত বরণ করেন।
সমাধি: তাঁকে মদীনার মসজিদে নববীতে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং হযরত আবু বকর (রা.)-এর পাশে দাফন করা হয়।
হযরত ওমর (রা.) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসে এক কিংবদন্তী শাসক, যিনি তাঁর ন্যায়পরায়ণতা, বীরত্ব, এবং সাদাসিধা জীবনযাপনের জন্য আজও মুসলিম ও অমুসলিম সকলের কাছে শ্রদ্ধেয়।
#allah #quran #whatsappstatus #আলহামদুলিল্লাহ #আলহামদুলিল্লাহ #আল্লাহু_আকবর