সঙ্গীত  প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গীতে দুটি ধারা বহমান– মার্গসঙ্গীত ও দেশিসঙ্গীত। বর্তমানে প্রচলিত রাগসঙ্গীত বা  উচ্চাঙ্গসঙ্গীত মার্গসঙ্গীতের অনুসারী। মার্গসঙ্গীতে রাগরূপায়ণ ও সুরের ভূমিকাই মুখ্য, কথার আবেদন সেখানে গৌণ। আর দেশিসঙ্গীত কথা ও সুর উভয়কেই প্রাধান্য দিয়েছে এবং তা একরৈখিক (melody) পথে বিবর্তিত ও বিকশিত হয়েছে। বাংলা সঙ্গীত প্রধানত দেশিসঙ্গীতের আদর্শেই রচিত ও বিকশিত।
বাংলা ভাষা ও সঙ্গীতের প্রাচীন নিদর্শন  চর্যাপদ। ১৯০৭ সালে  হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে এর  পুথি আবিষ্কার করেন। আবিষ্কৃত পুথিটির নাম চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়। এটি মূলত প্রাপ্ত ৪৭টি গানের সংকলন। খ্রিস্টীয় নবম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে গানগুলি রচিত।
শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে মোট ৩২টি রাগ-রাগিণীর উলেখ আছে। সেগুলি হলো আহের, ককু, কহু, কহু গুর্জরী, কেদার, কোড়া, কোড়া দেশাগ, গুর্জরী, দেশ বরাড়ী, দেশাগ, ধানুষী, পটমঞ্জরী, পাহাড়ী, বঙ্গাল, বঙ্গাল বরাড়ী, বরাড়ী, বসন্ত, বিভাস, বিভাস কহু, বেলাবলী, ভাটিয়ালী, ভৈরবী, মলার, মালব, মালবশ্রী, মাহারঠা, রামগিরি, ললিত, শৌরী, শ্রী, শ্রীরামগিরি ও সিন্ধোড়া। যেসব তালের পরিচয় পাওয়া যায় সেগুলি হলো যতি, ক্রীড়া, একতালী, লঘুশেখর, রূপক, কুড়ুক্ক ও আঠতালা। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে ব্যবহূত ‘শৌরী’ রাগ সম্ভবত চর্যায় ব্যবহূত ‘শবরী’ রাগের  অপভ্রংশ। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে ব্যবহূত কয়েকটি রাগ-রাগিণীর পরিচয় প্রাচীন সঙ্গীতশাস্ত্রে পাওয়া যায়, যেমন আহের (আভীর), কহু (ককুভ), রামগিরি (রামক্রি), ধানুষী (ধানশ্রী), দেশাগ প্রভৃতি।
                         
                    
Информация по комментариям в разработке