Скачать или смотреть ১৩ বছর ধরে অবৈধভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন ডা. সংযুক্তা | জানেইনা সেন্ট্রাল হাসপিটাল |Central Hospital |

রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার বিএমডিসি সনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১০ সালে। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে অবৈধভাবে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি। তিনি কিভাবে এতগুলো বছর হাসপাতালটিতে চিকিৎসা দিচ্ছেন তার কোনো সদুত্তর নেই সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।

সম্প্রতি হাসপাতালটিতে অবহেলার শিকার হয়ে নবজাতক সন্তানসহ মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যু হলে আলোচনায় আসেন ডাক্তার সংযুক্তা। গর্ভধারণের শুরু থেকেই এই চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়ে আসছিলেন তিনি।

এরমধ্যে, গত ৯ জুন প্রসব বেদনা শুরু হলে তিনি সন্তান জন্ম দিতে হাসপাতালটিতে আসেন। হাসপাতালে তাকে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনেই ভর্তি করা হয়। তবে সেই সময় চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না।

এ সময় ডা. সংযুক্তার সহকারীরা তার অনুপস্থিতিতেই প্রথমে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। পরে জটিলতা তৈরি হলে করা হয় অস্ত্রোপচার। এতে আঁখির শিশু জন্মের পরপরই মারা যায়। আর সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আঁখিকে নেয়া হয় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে। আটদিন পর গত রোববার মারা যান আঁখিও।

আখিঁর চিকিৎসায় অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেছেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী। এরই মধ্যে ডা. সংযুক্তার দুই সহকারী ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আইসিইউ ও জরুরী সেবার মান সন্তোষজনক না হওয়ায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ডা. সংযুক্তা হাসপাতালটিতে আপাতত কোনো বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দিয়েছে অধিদপ্তর।

ডাক্তার সংযুক্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি বিএমডিসির নিয়মের তোয়াক্কা না করে ১৩ বছর ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন।

সোমবার সেন্ট্রাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গাইনি বিভাগে তালা ঝুলছে। ডাক্তার সংযুক্তা সাহার চেম্বার থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে নামফলক। হাসপাতালের বিভিন্ন স্থান থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে তার নাম।

ডাক্তার সংযুক্তা হাসপাতালটিতে ১৫ বছর ধরে রোগী দেখছেন। তারপরেও তার বিএমডিসির নিবন্ধন নম্বর জানাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে তো ওনার তেমন কোনো পেপার্স নাই। উনি আমাদের কাছে কেবল একটা সিভি দিয়েছিলেন।’

বিএমডিসি বলছে, ২০১০ সালের পর সনদ নবায়ন করেননি ডাক্তার সংযুক্তা। বার বার চিঠি দেয়া হলেও পরোয়া করেননি তিনি। সংস্থাটির রেজিস্ট্রার ডা. লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘২০১০ এর পরে যেহতু ওনার রেজিস্ট্রেশন বৈধ না ওনার সমস্ত চিকিৎসা কার্যসহ যা কিছু উনি করেছেন সবকিছু আনলফুল হয়। সেটি এখন বিচারের বিষয়।’

এর পরও তিনি কীভাবে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিফ কনসালট্যান্ট হন, তার উত্তর দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির উপপরিচালক ডা. এ টি এম নজরুল বলেন, ‘এর উত্তর আমি কিভাবে দেবো বলুন? উনি একজন কনসালটেন্ট, একজন প্রফেসর। এটা তো ওনার দায়িত্বেই ওনার দেয়া উচিৎ। হ্যাঁ, আমাদের গাফিলতি ছিলো আমরা কেন তার পার্সনাল ফাইল দেখে বলি নাই যে আপনার এটা রিনিউ করতে হবে।’

একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন ডাক্তার সংযুক্তা। ২০০৬ সালে রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগ দেন উত্তরার শহীদ মনসুর আলী মেডিকেলে। নানা অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালে চাকরি হারান তিনি।

মেডিকেল কলেজটির অধ্যক্ষ ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, ‘সে রোগীদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করতো, গার্ডিয়ানদের সাথেও করতো এবং ভেরিমাচ ইরেগুলার ছিলো। হাসপাতালে তার পারফরমেন্স ভালো ছিলো না।’

#সংযুক্তা
#সেন্ট্রালহসপিটাল #নবজাতক
#আঁখি # central_hospital