Скачать или смотреть ধানে ব্লাস্ট রোগ দমনের ব্যবস্থা ও সঠিক সমাধান ।

ব্লাস্ট রোগ ধানের অন্যতম মারাত্মক ছত্রাকজনিত রোগ, যা ধানের পাতা, গিড়, কান্ড এবং শীষে আক্রমণ করে। এই রোগ ধানের ফলনকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে পারে। ব্লাস্ট রোগ দমনের জন্য সঠিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং উপযুক্ত সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। ধানে ব্লাস্ট রোগ দমনের কিছু কার্যকর ব্যবস্থা ও সঠিক সমাধান নিচে উল্লেখ করা হলো:

ব্লাস্ট রোগের লক্ষণ: পাতার ব্লাস্ট: পাতায় ডিম্বাকার বা চোখের মতো বাদামী বা ছাই রঙের দাগ দেখা যায়। এগুলোর চারপাশে হলদেটে সাদা আভা থাকে।

গিড় ব্লাস্ট: গাছের গোড়ার দিকে কালো দাগ দেখা যায়। এতে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ভেঙে যায়।
শীষের ব্লাস্ট: ধানের শীষে আক্রমণ হলে শীষে দানা ফোটা ব্যাহত হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে দানা সাদা হয়ে যায়।
ধানে ব্লাস্ট রোগ দমনের কার্যকর পদ্ধতি

১.রোগ প্রতিরোধী জাত নির্বাচন: ব্লাস্ট রোগ দমনে প্রথমেই রোগ প্রতিরোধী ধানের জাত ব্যবহার করা উচিত। যেমন, ব্রি ধান-৩৪, ব্রি ধান-৫০, ব্রি ধান-৬৬, এবং ব্রি ধান-৭১ ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ধানের জাত হিসেবে পরিচিত।

২.সুষম সার ব্যবহার: নাইট্রোজেন সার (ইউরিয়া) অতিরিক্ত প্রয়োগ করলে ব্লাস্ট রোগের সংক্রমণ বাড়তে পারে। তাই নাইট্রোজেনের সঠিক মাত্রা বজায় রেখে সার প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া, পটাশ এবং ফসফেট সার যথাযথ পরিমাণে প্রয়োগ করলে গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

৩.জমিতে সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা: ধানের জমিতে পানি ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, ব্লাস্ট রোগের সংক্রমণ হলে জমিতে পানি ধরে রাখলে রোগের প্রাদুর্ভাব কমে যায়। পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গাছকে সঠিকভাবে রোগমুক্ত রাখা সম্ভব।

৪.ছত্রাকনাশক প্রয়োগ: ব্লাস্ট রোগ নিয়ন্ত্রণে কিছু কার্যকর ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন:
ট্রাইসাইক্লাজোল ৭৫ ডব্লিউপি (বাভিস্টিন) ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
ইসোপ্রোথিওলান বা টিল্ট (প্রোপিকোনাজোল) ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
প্রথমে আক্রমণ দেখা দিলে ১০-১২ দিন অন্তর অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

৫.পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ পদ্ধতি: জমিতে আগের ফসলের অবশিষ্টাংশ বা পরিত্যক্ত গাছের অংশ পরিষ্কার রাখতে হবে, কারণ এগুলোতে ব্লাস্ট রোগের জীবাণু থাকতে পারে। স্বাস্থ্যকর বীজ এবং পরিচ্ছন্ন জমি ব্যবহার করলে ব্লাস্ট রোগের ঝুঁকি কমে।

৬.বীজ শোধন: বীজ শোধন করলে ধানের ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কমে যায়। কার্বেনডাজিম বা টিল্ট জাতীয় ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করা যেতে পারে।

৭.জমিতে সঠিক পরিচর্যা: গাছের ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যাতে গাছের ভিতর আলো ও বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। জমিতে গাছের ঘনত্ব বেশি থাকলে ব্লাস্ট রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে।

অতিরিক্ত টিপস: ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে জমিতে রাতের বেলা সেচ দেওয়া উচিত এবং গাছের নিচে কিছু পানি ধরে রাখা উচিত। সময়মতো রোগনাশক স্প্রে করা এবং জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার ও পানি সরবরাহ করলে রোগের প্রাদুর্ভাব কমবে।

সারসংক্ষেপ: ব্লাস্ট রোগ ধানে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, তবে সঠিক পদ্ধতিতে জমির পরিচর্যা, রোগ প্রতিরোধী জাত নির্বাচন, সুষম সার প্রয়োগ এবং ছত্রাকনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে এই রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ধানের ব্লাস্ট রোগ কেন হয়?, ধানের ব্লাস্ট রোগ, ধানের বিভিন্ন রোগ ও প্রতিকার, ধানের ব্লাস্ট রোগ ও প্রতিকার, ধানের ব্লাস্ট রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার, ধান, ধানের শীষের, ধানের ব্লাস্ট রোগের চিকিৎসা, ধানে ফ্লোরা, Blast, Rice blast disease, Paddy blast disease, Rice disease, pest control, cultural control,
Gmail: [email protected]
Call: 01738007669
ধন্যবাদ🥀