Скачать или смотреть টাকাই কি সব কিছু? Niloy shikder//New story//01

সিরিজ: অমূল্য

পর্ব ১: টাকার পেছনে ছুটে চলা

বাংলাদেশের উত্তর প্রান্তের ছোট্ট গ্রাম "মাটিহারা"। কাঁচা রাস্তা, ধানক্ষেত আর পুকুরে ঘেরা এই গ্রামে এক যুবক থাকে, নাম তার সফিক। বয়স ২৫। চোখে বড় বড় স্বপ্ন, কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য তার কাছে নেই টাকা। বাবা একজন কৃষক ছিলেন, বছর দুয়েক আগে মারা গেছেন। মা অসুস্থ, ঘরে বসে কাজ করতে পারেন না। ছোট দুই বোনের দায়িত্বও তার কাঁধে।

সফিক একা বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছিল, “জীবনটা এমন কেন? টাকা ছাড়া কিছুই হয় না। বাবার রেখে যাওয়া সামান্য জমি বিক্রি না করলে তো আমাদের খাবারই জুটত না। সবাই বলে পরিশ্রম কর, ভাগ্য খুলবে। কিন্তু ভাগ্য কি শুধুই পরিশ্রমে হয়? টাকা ছাড়া সবকিছু অসম্ভব।”

গ্রামের পাশেই একটি বাজার। সেখানে হঠাৎ সফিকের বন্ধু রফিক এসে হাজির।
“কিরে, এই বিকেলে এখানে একা বসে আছিস কেন? চল, বাজারে যাই। রশিদ সাহেবের নতুন দোকানের জন্য লোক খুঁজছে, কাজের সুযোগ পেতে পারিস।”

সফিকের চোখে ঝলকানি। সে ভাবল, “এই তো সুযোগ! টাকা রোজগারের প্রথম ধাপ শুরু হবে এখান থেকেই।”

দোকানের কাজ

সফিক বাজারে পৌঁছাল। রশিদ সাহেব গ্রামের নামকরা ব্যবসায়ী, একটু রুক্ষ স্বভাবের মানুষ। তার নতুন মুদি দোকানের জন্য একজন সহকারী দরকার।
“তুমি কাজ করতে চাও?” রশিদ সাহেব সফিককে প্রশ্ন করলেন।
“জি চাচা, আমি কাজ করব। তবে… কত টাকা দিবেন?” সফিক একটু দ্বিধায় থেকে জিজ্ঞেস করল।
“মাসে ১৫০০ টাকা। কাজ অনেক, সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। পারবে?”

১৫০০ টাকা মাসিক আয়ের কথা শুনে সফিক চুপ হয়ে যায়। এতটুকু টাকায় কী করবে সে? কিন্তু কাজ না করলে কিছুই হবে না। সে ভাবল, “এইটুকু দিয়ে শুরু করি। সামনে আরও বড় সুযোগ আসবে।”

প্রথম দিন

দোকানে কাজের প্রথম দিন। কাস্টমারদের তদারকি, মাল সামলানো, আর রশিদ সাহেবের আদেশ মানতে গিয়ে সফিক হাঁপিয়ে ওঠে। বিকেলে এক বয়স্ক লোক দোকানে এলেন। তাকে দেখেই রশিদ সাহেব রেগে আগুন।
“তোমার আবার মাল খাওয়ার ক্ষমতা কই? কর্জ তো আগে শোধ কর।”

বৃদ্ধ কাঁপা গলায় বললেন, “চাচা, আমার ছেলেটা অসুস্থ। একটু চাল আর ডাল দেন। টাকা শোধ করব, কথা দিচ্ছি।”

রশিদ সাহেব বৃদ্ধকে তাড়িয়ে দিলেন। এই দৃশ্য দেখে সফিকের মনে কিছু একটা খোঁচা লাগল। সে নিজের ভেতর থেকে ফিসফিসানির মতো একটা প্রশ্ন শুনতে পেল, “টাকা কি মানুষের চেয়ে বড়?”

মায়ের কথা

সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে সফিক তার মাকে সব ঘটনা বলল।
মা বললেন, “বাবা, টাকা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে, কিন্তু টাকার পেছনে জীবনটাই যদি হারিয়ে ফেলিস, তাহলে বাঁচার মানেটা কী? টাকা জরুরি, কিন্তু মানুষের সম্পর্ক তার চেয়ে বেশি মূল্যবান।”

মায়ের কথা শুনে সফিক কিছু বলল না। তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, “যদি টাকার পেছনে না ছুটি, তাহলে কীভাবে এই দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাব?”

পর্বের শেষ দৃশ্য

সফিক রাতে খাটে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার মনে একটাই প্রশ্ন:
“টাকা ছাড়া সত্যিই কি বাঁচা সম্ভব? নাকি মায়ের মতো ভাবাটা ভুল?”

শেষ প্রশ্ন:
“সফিক কি মায়ের কথায় বদলাবে, নাকি টাকার পেছনে ছুটেই চলবে?”

(পরবর্তী পর্ব: সফিকের নতুন সমস্যার মুখোমুখি হওয়া এবং প্রথম ধাক্কা!)

#story #bangladesh #love