সাতক্ষীরা জেলায় দর্শনীয় স্থান কি কি দেখার আছে । পর্যটন স্থান সমৃদ্ধ সাতক্ষীরা জেলার জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান গুলোর মধ্যে আছে সুন্দরবন, কপোতাক্ষ নদ, নলতা শরীফ, গুনাকরকাটি মাজার, মান্দারবাড়ী সমুদ্র সৈকত, জোড়া শিবমন্দির, দেবহাটা জমিদার বাড়ী, ইছামতি নদী, কলারোয়ার বৌদ্ধ মঠ, লিমপিড গার্ডেন, সোনাবাড়িয়া মঠ মন্দির, জমিদার হরিচরনের বাড়ি, নীলকুঠি, তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ।
What are the sightseeing places in Satkhira district? Popular tourist spots in Satkhira district rich in tourist spots include Sundarbans, Kapotaksha River, Nalta Sharif, Gunakarkati Shrine, Mandarbari Beach, Jora Shiva Temple, Devhata Zamindar Bari, Ichamati River, Kalwara Buddhist Monastery, Limpid Garden, Sonabaria Math Temple, Zamindar Haricharan House , Nilkuthi, Tentulia Jame Masjid.
ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অপার লীলাভূমি সাতক্ষীরা জেলা। জেলাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক দিয়ে দেখলে সাতক্ষীরা জেলার উত্তরে যশোর জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে খুলনা জেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। অবস্থানগত দিক দিয়ে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম সীমান্তে।
সাতক্ষীরা জেলা ২টি পৌরসভা, ৭টি উপজেলা, ৮টি থানা, ৭৮ টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১৪২৩টি গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজেলাও সাতক্ষীরায়। সাতক্ষীরা উপজেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা, আশাশুনি, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর (দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা), তালা ও কলারোয়া।
সাতক্ষীরা একদা রাজা প্রতাপাদিত্যের যশোহর রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। বারোভূঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী এ জেলার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর এলাকায়। বাংলাদেশের মানচিত্রে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে সাতক্ষীরা জেলার অবস্থান। এ জনবসতি প্রাচীনকালে খ্যাত ছিল বুড়ন দ্বীপ নামে। এর পাশে চন্দ্রদ্বীপ, মধুদ্বীপ, সূর্যদ্বীপ, সঙ্গদ্বীপ, জয়দ্বীপ ইত্যাদি দ্বীপ খ্যাত ছোট ছোট ভূখন্ডের অবস্থান পাওয়া যায় প্রাচীন ইতিহাস ও মানচিত্রে। ঠিক কোন সময় থেকে বুড়ন দ্বীপে সমাজবদ্ধভাবে মানুষের বসবাস শুরু হয় তার বিস্তারিত ও সঠিক তথ্য প্রমাণাদি পাওয়া যায় না।
১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে ৭টি থানা নিয়ে সাতক্ষীরা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৮৬৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার অধীনে এই মহকুমার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে সাতক্ষীরা খুলনা জেলার অর্ন্তভূক্ত একটি মহকুমা হিসাবে স্থান লাভ করে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়।
সাতক্ষীরা নামকরণের সর্বশেষ যে মতবাদটি প্রচলিত রয়েছে সে অনুযায়ী সাতক্ষীরায় উৎপাদিত সাতটি বিখ্যাত জিনিসের নাম নিয়েই এ জেলার নামকরণ। পণ্যগুলো হচ্ছে- ওল, ঘোল, কুল, সন্দেশ, মাছ, আম ও গাছের চারা।
সাতক্ষীরার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্রগুলো হলো- বড়দল, পাটকেলঘাটা, পারুলিয়া, আখড়াখোলা, আবাদের হাট, নওয়াবেকি, ঝাউডাঙ্গা, বুধহাটা, কলারোয়া, বসন্তপুর, কালিগঞ্জ, নকিপুর, নাজিমগঞ্জ, ভেটখালি, হবিনগর, হোগলা, বুড়িগোয়ালিনী, বাঁশতলা ইত্যাদি।
মূলত মাছ চাষই সাতক্ষীরার অর্থনীতির মূল ভিত। বিশেষ করে চিংড়ি চাষ। সাতক্ষীরার দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ মৎস চাষের ওপর নির্ভরশীল। সরকারি হিসাব অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলায় প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে ৫৫ হাজার চিংড়ি ঘের (মৎস খামার) রয়েছে। এসব ঘেরের বেশির ভাগেই বাগদা চিংড়ির চাষ হয় এবং বছরে ২২ হাজার মেট্রিক টনের মতো চিংড়ি উৎপাদিত হয়।
বাংলাদেশ থেকে ইউরোপসহ বহিঃবিশ্বে রপ্তানিকৃত শতকরা ৭০ ভাগ চিংড়ি সাতক্ষীরা থেকে উৎপাদিত হয়। সাতক্ষীরার বাগদা ও গলদা চিংড়ি বিশ্বের অনেক জায়গায় হোয়াইট গোল্ড নামে পরিচিত। চিংড়ি চাষের জন্যে প্রয়োজনীয় মাছের পোনা বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও সংগ্রহীত হচ্ছে (সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় এবং শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ও নওয়াবেকির হ্যাচারি থেকে) যা পূর্বে মৎস চাষীদের শতভাগ নির্ভর করতে হতো কক্সবাজারের হ্যাচারীর উপর।
ভোমরা বন্দরে বর্তমানে ৭০০ থেকে ১০০০ শ্রকিমের কর্ম-সংস্থান। জাতীয় অর্থনীতির বিকাশে অপার সম্ভাবনা থাকা সত্বেও ভোমরা স্থল বন্দর আজও পূর্ণাঙ্গ স্থল বন্দরের মর্যাদা পায়নি।
শিক্ষা ক্ষেত্রেও সাতক্ষীরা জেলা বেশ উন্নত। স্বাক্ষরতারহার শিক্ষা প্রতিবেদন শিশু জরিপ ২০১০ অনুসারে এ জেলার মোট ৫৩.৩২ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত। সাতক্ষীরার শিক্ষা কার্যক্রম চলে যশোর শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে।
সাতক্ষীরায় ১টি মেডিকেল কলেজ, ২টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪৪ টি কলেজ, ১৩৫টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৩টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৮৫টি মাদ্রাসা রয়েছে।
বহু প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সাতক্ষীরার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে। প্রবাজপুর শাহী মসজিদ, জমিদার বাড়ি ও যশোরেশ্বরী মন্দির (শ্যামনগর), বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্রমিক নম্বরের আবিষ্কারক খান বাহাদুর আহছান উল্লাহর মাজার-নলতা রওজা শরীফ (কালীগঞ্জ), ব্রিটিশ আমলের পৌরসভা (দেবহাটা) নীলকুঠি (দেবহাটা), মাইচম্পার দরগা (সাতক্ষীরা সদর), বৌদ্ধ মঠ (কলারোয়া), তেঁতুলিয়া মসজিদ (তালা), জমিদার হরিচরণের বাড়ি (শ্যামনগর), জাহাজঘাটা (শ্যামনগর), শতাধিক বছর আগের বটগাছ-‘বনবিবির বটগাছ’ (দেবহাটা), শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহাসিক গোপালপুর স্মৃতিসৌধ, ইশ্বরীপুর হাম্মামখানা, জাহাজ ঘাটা হাম্মামখানা এবং তৎসংলগ্ন প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ, ঝুঁড়িঝাড়া ঢিবি (তালা), দরবার স্তম্ভ, গোবিন্দ দেবের মন্দির ঢিবি, যীশুর র্গীজা (শ্যামনগর), শ্যাম সুন্দর মন্দির, কোঠাবাড়ির থান, ছয়ঘরিয়া জোড়াশিব মন্দির, অন্নপূর্ণা মন্দির, দ্বাদশ শিব মন্দির ও জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ তার মধ্যে অন্যতম।
#touristmaturam #satkhiradistrict #সাতক্ষীরাভ্রমণ #beautifulbangladesh
Facebook Link : / maturam
My Another Channel : / @charukolabd
Информация по комментариям в разработке