শাপমোচন নৃত্যনাট্য।।"রম্যবীণা"।। কল্যাণী।। (Shapmochan Dance Drama by Ramyabina, Kalyani)

Описание к видео শাপমোচন নৃত্যনাট্য।।"রম্যবীণা"।। কল্যাণী।। (Shapmochan Dance Drama by Ramyabina, Kalyani)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
নৃত্যনাট্য
"শাপমোচন"

বিষয়-সংক্ষেপঃ শাপমোচন কথিকাটি প্রথম পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হয় ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে। রবীব্দ্রনাথ নিজেই এর ভূমিকাতে বলেছেন- যে বৌদ্ধ আখ্যান অবলম্বন করে ‘রাজা’ নাটকটি রচিত হয়েছে, তারই আভাসে শাপমোচন কথিকার রচনা। এর বিষয়বস্তু সৌরসেন ও মধুশ্রীকে কেন্দ্র করে আরম্ভ হয়। গন্ধর্ব সৌরসেন সুরসভায় গীতনায়কদের অগ্রগণ্য একজন সুদর্শন পুরুষ। একদিন তার প্রেয়সী মধুশ্রীর সূর্য-উপাসনা থেকে ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় তার জন্য দুর্ভাবনায় উৎকণ্ঠিত ছিল সৌরসেন। ফলে ইন্দ্রসভায় উর্বশীর নাচের সময় অন্যমনস্কতায় তার মৃদঙ্গের তাল কেটে যায়। ফলস্বরূপ ক্রুদ্ধ ও বিরক্ত দেবরাজ ইন্দ্রের দ্বারা মর্ত্য-নির্বাসন এবং দেহশ্রীবিকৃতির অভিশাপ বর্ষিত হল সৌরসেনের উপর। গন্ধর্বগৃহিণী মধুশ্রী ফিরে এসে যখন শুনল এই অভিশাপবৃত্তান্ত, ইন্দ্রের কাছে তাকেও সমান দণ্ডে দণ্ডিত করার প্রার্থনা করল, যাতে তাদের দুজনকে বিচ্ছেদ যন্ত্রণা সহ্য করতে না হয়। দেবরাজ সম্মত হয়ে বললেন, মর্ত্যে জন্ম গ্রহণ করে, নিজে দুঃখ পেয়ে এবং অন্যকে দুঃখ দিয়েই একজন কুরূপ হিসেবে জন্ম নেওয়া সৌরসেনের আন্তরিক সৌন্দর্যের প্রতি যদি অনুরক্ত হতে পারে মধুশ্রী, তবেই ঘুচবে এই ছন্দঃপাতনের মত গুরুতর অপরাধ। আবার তারা ফিরে আসতে পারবে স্বর্গলোকে। সুরসভার অভিশাপে মরণশীল পৃথিবীতে সৌরসেন ও মধুশ্রী পৃথক রাজকুলে অরুণেশ্বর ও কমলিকা নামে জন্মগ্রহণ করলো।

বিকৃতরূপ অরুণেশ্বরের কাছে কোনোভাবে একদিন রাজকন্যা কমলিকার একটি ছবি এসে পড়ল। রাজার অবচেতন মন বললো- এর সাথে যেন কোন সম্পর্ক জন্মান্তরের। তিনি চিঠি লিখে বিবাহপ্রস্তাব পাঠালেন মদ্ররাজের কাছে, সেই প্রস্তাব মদ্ররাজ সাগ্রহে স্বীকার করলে, রাজকন্যার সখীদের মধ্যে আনন্দের রোল পড়ে গেল। দেহশ্রীবিকৃতির জন্য বিবাহসভায় রাজা নিজে না এসে পাঠালেন তার একান্ত প্রিয় বক্ষোবিহারিণী বীণাকে, তার সাথেই রাজকন্যা কমলিকার মহা আড়ম্বরে বিবাহ অনুষ্ঠিত হল।

কিন্তু পতিগৃহে যাবার পর রাজবধূ কমলিকা লক্ষ্য করে, কেবল রাত্রে তার নিকট রাজার আগমন হয়, তাও সেই ঘর থাকে অন্ধকার। অরুণেশ্বর তার মুখশ্রী না দেখানোর আছিলায় নিজের নিপুণ নৃত্যকলা, আন্তরিক সুরমূর্ছনা আর স্পর্শকাতর বাণী প্রয়োগ করে ভুলিয়ে রাখে রানিকে। শেষে একসময়, রানির পীড়াপীড়িতে অনিচ্ছাসত্ত্বেও রাজা অরুণেশ্বরের বিকৃতমুখশ্রী দর্শন করে কমলিকা। ফল যা হওয়ার তাই হল। অপ্রত্যাশিত আঘাতে প্রচণ্ড অপমানিত আর বঞ্চিত অনুভব করে কমলিকা রাজভবন পরিত্যাগ করে দূরে চলে গেল।
স্খলিতচ্ছন্দ সুরসভার অভিশাপে এই তার নিজে দুঃখ পাওয়া এবং রাজাকে দুঃখ দেওয়া। এইভাবে বেশ কিছুদিন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কাটানোর পর ধীরে ধীরে আত্মগ্লানি অনুভব করে অভিমানিনী কমলিকা। দূর থেকে আসা অরুণেশ্বরের বীণাধ্বনি তাকে অন্তর থেকে অভিভূত করে তুলল। সে অনুভব করল, আন্তরিক সৌন্দর্যের কাছে বাহ্যিক সব সুন্দর অসুন্দর অতি তুচ্ছ, অতি নগণ্য। বীণাধ্বনি অনুসরণ করে সে পৌঁছে গেল রাজার কাছে, নিজেকে সমর্পণ করল তার আন্তরিক রমণীয় প্রিয় দয়িতের কাছে। চিরকালের জন্য মিলন হল অরুণেশ্বর আর কমলিকার। শাপমুক্তি ঘটল সৌরসেন আর মধুশ্রীর।

রবীন্দ্রনাথের উচ্চস্তরীয় প্রেমভাবনার অন্যতম একটি দৃষ্টান্ত এই শাপমোচন কথিকা।

অংশগ্রহণেঃ
রাজা অরুণেশ্বরঃ
নৃত্যে- ডঃ সোমনাথ সরকার
গীতে- রমিত ভাওয়াল
ভাষ্যে- অলোকদ্যুতি নন্দী

রানি কমলিকাঃ
নৃত্যে- রিয়া দাস
গীতে – অজন্তা গুপ্ত ও রাখী রায়
ভাষ্যে- সুনীতা রাম

সৌরসেন ও রাজার সখাঃ
নৃত্যে- রাকেশ সরকার
গীতে- ডঃ অরিজিৎ গুপ্ত

মধুশ্রীঃ
নৃত্যে- শ্রেয়সী গুপ্ত সেনগুপ্ত
গীতে- জলি সেনগুপ্ত

মুখ্য কথক- ডঃ অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়

উর্বশী- নয়নিকা গুপ্ত

ইন্দ্রঃ দিলওয়ার হোসেন

ইন্দ্রাণী ও রাজার সখা- অঙ্কিতা আচার্য চক্রবর্তী

ছত্রধর – অপূর্ব রায়

সখীবৃন্দঃ
নৃত্যে- বিদিশা ঘোষ, সৌমী ভট্টাচার্য, জয়িতা রায় নাথ, সনিয়া চক্রবর্তী এবং কোয়েল দাস
গীতে- শীলা রাম, অরুণা ভট্টাচার্য, সুচরিতা প্রামাণিক, শ্রমণা বিশ্বাস এবং ধানসিড়ি পোদ্দার।

তালবাদ্য- দিব্যেন্দু দে
এস্রাজ- উষ্ণিক তরফদার
সেতার- কানাই চন্দ্র সরকার
মন্দিরা- প্রীতম ছৈয়াল

আলো- পুলক বিশ্বাস ও শিবশঙ্কর গায়েন
শব্দ নিয়ন্ত্রণ- জয় রায়

মঞ্চসজ্জা ও অলঙ্করণ- রিনা মজুমদার, মৌসুমী বক্সী, শ্রেয়সী গুপ্ত সেনগুপ্ত এবং রাখী রায়।
রূপকল্প- অভিজিৎ সেন ও পায়েল তালুকদার

চলদৃশ্যগ্রহণ- দীপ্তেশ্বর মণ্ডল
সকল সহযোগিতায়- সন্তু বিশ্বাস, সায়ন ঘোষ ও অর্ণব ঘোষ

সঙ্গীতানুষঙ্গ পরিচালনাঃ ডঃ অরিজিৎ গুপ্ত
নৃত্যকলা পরিচালনাঃ শ্রী রাকেশ সরকার

অনুষ্ঠান পরিবেষণায়
"রম্যবীণা" কল্যাণী,
এ.পি.জে আব্দুল কালাম সভাগৃহ
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়
০৭/০৪/২০২৪

Комментарии

Информация по комментариям в разработке