Скачать или смотреть আহলে হাদিস সালাফিরা মুলত কুরআন-সুন্নাহ নয় তাদের শায়েখদের বুঝের অনুসরণ করে।

আহলে হাদিস সালাফিরা মুখে বলে তারা শুধু কিতাব–সুন্নাহ মানে, কিন্তু বাস্তবে কুরআন–সুন্নাহ তারা নিজেদের নির্দিষ্ট শায়েখদের “বুঝ” অনুযায়ীই অনুসরণ করে। কারণ কুরআন–সুন্নাহ নিজে নিজে ব্যাখ্যা দেয় না; ব্যাখ্যা করে মানুষ। আর সেই ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে সালাফিরা সাধারণত ইবন তাইমিয়্যা, ইবন কাইয়্যিম, মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহহাব, আলবানী, ইবন বায, উসাইমীন—এই ধারার শায়েখদের বক্তব্যকেই চূড়ান্ত ধরে নেয়। সাধারণ সালাফি অনুসারী সরাসরি কুরআন–হাদীস থেকে মাসআলা বের করে না; সে দেখে তার শায়েখ কী বলেছেন। যুক্তির দিক থেকে এটাও এক ধরনের তাকলিদ, শুধু পার্থক্য হলো—চার মাযহাবের ইমামের বদলে নির্দিষ্ট কয়েকজন শায়েখের তাকলিদ।

অন্যদিকে যারা সত্যিকার অর্থে সালাফে সালেহিনের পথ ধরে কিতাব–সুন্নাহ অনুসরণ করেন—অর্থাৎ সাহাবা, তাবেয়ি, তাবে-তাবেয়ি এবং চার মাযহাবের ইমামদের সম্মিলিত দিকনির্দেশনায় চলেন—তাদেরকে সালাফিরা প্রায়ই “বিদ‘আতী”, “কবরপূজারী”, “ভ্রষ্ট” ইত্যাদি বলে হেয় করে। অথচ এই ইমামরাই ছিলেন কুরআন–সুন্নাহ বোঝার ক্ষেত্রে উম্মাহর সবচেয়ে বড় মানদণ্ড। ইমাম আবু হানিফা, মালিক, শাফেয়ী, আহমদ—এরা সবাই সালাফের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু তাদের পদ্ধতিকে পাশ কাটিয়ে কেবল এক-দুজন পরবর্তী আলেমের ব্যাখ্যাকে একমাত্র সত্য বানানোই যুক্তির সাথে খাপে খায় না।

আসল সমস্যাটা এখানে—সালাফিরা “সালাফের অনুসরণ” আর “নিজেদের শায়েখদের অনুসরণ” এই দুটোকে গুলিয়ে ফেলে। ফলে যারা উম্মাহর দীর্ঘ ইজমা, চার মাযহাব ও সালাফে সালেহিনের সম্মিলিত বুঝ অনুযায়ী কিতাব–সুন্নাহ মানে, তাদেরকে উল্টো কিতাব–সুন্নাহবিরোধী বানিয়ে উপস্থাপন করা হয়। এটা বাস্তবে কিতাব–সুন্নাহর সম্মান বাড়ায় না, বরং উম্মাহর ভেতরে বিভাজন বাড়ায়।

সংক্ষেপে বললে—
সালাফিরা দাবি করে কিতাব–সুন্নাহর, কিন্তু চলার পথে তারা মূলত তাদের শায়েখদের বুঝের অনুসারী। আর যারা সালাফ ইমামদের দিকনির্দেশনায় কিতাব–সুন্নাহর প্রকৃত অনুসরণ করে, অনেক সময় তাদেরকেই তারা হেয় প্রতিপন্ন করে।
এটাই আজকের বাস্তব চিত্র।