Скачать или смотреть আমি এলেম তারি দ্বারে- বন্দনা সিংহ৷৷ Aami Elem Tari Dware-Bandana Singha৷RabindraSangeet-Prem Parjaay

Rabindra Sangeet // Porjay- Prem

'তোমার দূরের গাথা'
পর্ব- পঁচিশ
আজ গানঘরের নিবেদন
""' সুদূরের পারে '""

বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী বন্দনা সিংহের কন্ঠে রবীন্দ্রনাথের প্রেম পর্যায়ের গান — " আমি এলেম তারি দ্বারে..."
(গত শতকের ছ'য়ের দশকে রেকর্ড করা শিল্পীর এই গানটি ডিজিটাল মিডিয়ায় বিরল... গানঘর আজ শ্রোতাদের জন্য গানটি উপস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে৷)
   • আমি এলেম তারি দ্বারে- বন্দনা সিংহ৷৷ Aami E...  

প্রীতম চক্রবর্ত্তীর কলমে—

১৯৬৪ সালে সুবোধ ঘোষের কাহিনি অবলম্বনে তপন সিংহ নির্মাণ করলেন ছায়াছবি 'জতুগৃহ'৷ মহানায়ক প্রযোজিত ও অভিনীত এই ছবিতে কাজল গুপ্তের লিপে ব্যবহৃত হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের গান- 'আমার যে সব দিতে হবে'... গানটি গেয়েছিলেন বন্দনা সিংহ৷ নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে আর্থিক অনটনের মধ্যেও অন্তরের অনাবিল আনন্দের সার্থক রূপ ধরা পড়েছিল এই গানে৷ শ্রোতাদের মনে জায়গা ক'রে নিয়েছিল গানটি৷ ছবিতে আরও একটি গান গেয়েছিলেন শিল্পী- 'নূপুর বেজে যায় রিনিরিনি'৷ তপন সিংহের 'নির্জন সৈকতে' ছবিতেও রুমা গুহঠাকুরতার সঙ্গে দ্বৈতকন্ঠে গেয়েছিলেন 'দেখো দেখো দেখো শুকতারা আঁখি মেলি চায়'৷ অসিত সেনের জনপ্রিয় ছবি 'উত্তর ফাল্গুনী'তে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের সহশিল্পী হিসেবে গেয়েছেন 'আগুনের পরশমণি'৷ তবে বন্দনা সিংহের প্রথম প্লেব্যাকের শুরু 'সন্ধ্যারাগ' ছবিতে শ্যামল মিত্রের সঙ্গে দ্বৈতকন্ঠে 'হা রে রে রে রে রে' গানটির মধ্য দিয়ে৷ শিল্পীর জন্ম হয়েছিল কান্দি পাইকপাড়া রাজবংশে৷ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিল এই পরিবারের বিশেষ ঘনিষ্ঠতা৷ সেই যোগসূত্র ধরে তাঁর কাছেই বন্দনার সংগীতচর্চার শুরু৷ পরবর্তীকালে সংগীতগুরু হিসেবে পেয়েছিলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় এবং রাজ্যেশ্বর মিত্রকে৷ ১৯৫৭য় 'গীতবিতান' থেকে তিনি 'গীতভারতী' উপাধি লাভ করেন৷ ১৯৬০ সালে মেগাফোন কোম্পানি থেকে প্রকাশ পায় বন্দনার প্রথম রেকর্ড— দুটি রবীন্দ্রসংগীত- 'তোরা যে যা বলিস ভাই' এবং 'আমার একটি কথা বাঁশি জানে'৷ তাঁর রেকর্ড করা উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্রসংগীত গুলি হল- 'বনে এমন ফুল ফুটেছে', 'মম মন উপবনে', 'হৃদয় আমার ওই বুঝি তোর', 'ও আমার চাঁদের আলো', 'প্রাণে গান নাই', 'নিকটে দেখিব তোমারে', 'ওগো আমার প্রাণের ঠাকুর' ইত্যাদি৷ রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষে সত্যজিৎ রায় নির্মিত 'রবীন্দ্রনাথ' তথ্যচিত্রেও গান গেয়েছিলেন বন্দনা৷ রবীন্দ্রসংগীত ছাড়াও অতুলপ্রসাদী এবং দ্বিজেন্দ্রগীতির দক্ষ শিল্পী ছিলেন তিনি৷ এইসব গানের তালিম নিয়েছিলেন অতুলপ্রসাদ সেনের শিষ্য পাহাড়ী সান্যালের কাছ থেকে৷ এ ধরনের গানগুলির মধ্যে তাঁর কন্ঠে জনপ্রিয়- 'আমি সারা সকালটি বসে বসে', 'কাঙাল বলিয়া করিও না হেলা', 'কে গো গাহিলে পথে', 'এসো প্রাণসখা এসো প্রাণে', 'এসো এসো বঁধু', 'আয় রে বসন্ত ও তোর কিরণমাখা পাখা তুলে' প্রভৃতি৷ পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, চন্দ্রকান্ত নন্দীর সুরে তিনি রেকর্ড করেছিলেন দুটি আধুনিক গান- 'তুল তুল পালকের ওড়না দিয়ে' এবং 'বকুল বকুল মেয়েটি'৷ দূরদর্শন এবং আকাশবাণীর নিয়মিত শিল্পী ছিলেন বন্দনা৷ ১৯৫৭ সাল থেকে শুরু করে প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে মঞ্চে গান গেয়ে গেছেন শিল্পী৷ 'মণিহার' ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও গান ছেড়ে অভিনয়ের জগতে পা বাড়াননি; তৈরি করেছিলেন নিজের সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'সুরর্ষি'৷ শেষ জীবনে মঞ্চ থেকে সরে এসে সংগীত-শিক্ষিকা হিসেবেই নিজেকে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, শিল্পীর কথায়- "আমি শেখাতে চাই একেবারে গুরুকুল পদ্ধতিতে৷ যেভাবে আমরা শিখেছি৷ কেউ শিখতে এলে আগে পরীক্ষা করে নেব৷ একই গান বার বার করে গাওয়াব৷ কারণ কটা গান তুলতে পারল সেটা নয়, কতখানি শুদ্ধভাবে রবীন্দ্রনাথের গান গাইতে পারল সেটাই আসল৷" এভাবেই তাঁর হাতে তৈরি হয়েছে বহু ছাত্রছাত্রী৷ অবশ্যই উল্লেখ করতে হয় বন্দনা সিংহের সুযোগ্য পুত্র সংগীত শিল্পী দেবমাল্য চট্টোপাধ্যায়ের নাম, রবি ঠাকুরের গান ছাড়াও সংগীতের বিবিধ ক্ষেত্রে যাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ৷
(তথ্যঋণ- শ্রী দেবমাল্য চট্টোপাধ্যায় এবং 'আজকাল' পত্রিকা)

এমন বরেণ্য শিল্পীর গান শ্রোতাদের শোনাতে পেরে গানঘর আনন্দিত ও গর্বিত৷ এই উপস্থাপনার মধ্য দিয়েই আমরা বিনম্র প্রণতি জানাই শিল্পী বন্দনা সিংহকে৷

বিগত শতকের শিল্পীদের গান শুনুন, শোনান এবং share করুন৷ আমাদের youtube channelটি subscribe করুন... Bell Icon press করতে ভুলবেন না৷৷