Скачать или смотреть সৎসঙ্গের মহিমা , ক্ষণকাল এর অসৎ সঙ্গ ও ভয়ংকর, ভাগবত শ্রবণ মহিমা ...শ্রী অনন্ত কৃষ্ণ জী

📚শ্রীমদ্ভাগবতের স্বরূপ----

শ্রীসনাতন গোস্বামী ভাগবতের স্বরূপ বলছেন, "শ্রীকৃষ্ণঃ পরিবর্ত্তিত", পূর্ণব্রহ্ম কৃষ্ণ শব্দব্রহ্মরূপে পরিবর্তিত। শ্রীগ্রন্থ আর শ্রীগোবিন্দ অভিন্ন।
শ্রীগ্রন্থে দ্বাদশটি স্কন্ধ আছে। কোন কোন আচার্য শ্রীগ্রন্থের ধ্যানে বলেছেন,
প্রথম দ্বিতীয় স্কন্ধ শ্রীকৃষ্ণের দুই চরণ যে চরণ বলি মহারাজ নিজ মস্তকে ধারণ করেছিলেন। গোপীরা যা নিজ বক্ষে ধারণ করেন।

তৃতীয় চর্তুথ স্কন্ধ শ্রীকৃষ্ণের দুই উরু, যে উরুদেশে প্রহ্লাদকে বসিয়েছিলেন নৃসিংহ অবতারে।

পঞ্চম- ষষ্ঠ স্কন্ধ দুই পার্শ্বদেশ যে পাশ্বদেশে মা যশোদা দামবন্ধন করেছিলেন।

সপ্তম অষ্টম স্কন্ধ শ্রীকৃষ্ণের দুই বাহু। যে বাহু দিয়ে শ্রীদাম, সুদাম, অর্জুন সখাদের বক্ষে ধারণ করে।

নবম স্কন্ধ ভগবানের হৃদয়, যে হৃদয়ে থাকে প্রিয় রাধারাণী ।

একাদশস্কন্ধ ভগবানের কপাল। যে কপালে অলকা তিলকা করে শৃঙ্গার করান মা যশোদা।

দ্বাদশ স্কন্ধ হল ভগবানের মস্তক যা ময়ূরপুচ্ছ শোভিত হয়।
আর দশমস্কন্ধ হল ভগবানের শ্রীমুখের হাসি। অধরের মধুর হাসি 'মঞ্জুহাস্যতাম"। শ্রীভগবান সৃষ্টি, স্থিতি, লয়ের কর্তা তিনি সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান, তিনি কৃপাময়--- এসব কথা শোনা হয়েছে। এখন ঋষিগণ জানতে চান ভগবানের মধ্যে হাসি আছে কিনা। আনন্দ আছে কিনা। রস আছে কিনা। ভাগবতের দশম স্কন্ধ এই জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়েছেন।

শ্রীমদ্ভাগবতের পরিচয় দিতে ভাগবত নিজে বলছেন--

নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলং
শুকমুখাদমৃতদ্রবসংযুতম।
পিবত ভাগবতং রসমালয়ং
মুহুরহো রসিকা ভুবি ভাবুকাঃ।।

বেদ কল্পবৃক্ষ। বেদকল্পবৃক্ষের গলিত ফল হচ্ছে শ্রীভাগবত। গাছের আমি দুই প্রকারের পেতে পারি আমরা। আঁকশি দিয়ে আহরণের বলে বা গাছ হতে পেকে নিজের থেকে পড়ে ভূতলে তখন। একটি আবৃত অপরটি গলিত। আহৃত ফল কাঁচা থাকতে পারে। গলিত ফলটি সুপরিপক্ক।

বেদ হল ধর্ম অর্থ কাল মোক্ষ এই পুরুষার্থ লাভ হয় বেদ কল্পতরু। এই কল্পতরু ফল শ্রীভগবান লীলাবর্ণন প্রধান পরমরসময় শ্রীমদ্ভাগবত। জগতে দেখা যায় ফলের আঁটি ও খোসা বাদ দিয়ে কেবলমাত্র রস পান করা হয়, কিন্তু এ ফলের আঁটি বা খোসা নাই, এটার সবই রস। অর্থাৎ শ্রীমদ্ভাগবতের কিছুই পরিত্যজ্য না, সবই পরমাদরে গ্রাহ্য। যদিও শ্রীভগবানের লীলারসময় শ্রীমদ্ভাগবত জগতে অতি দুর্লভ বস্তু, তবুও শ্রীভগবানের কৃপায় অতি সুলভ হয়েছে। এই রস শ্রীভগবান স্বয়ং ব্রহ্মাকে দিয়েকেন, ব্রহ্মা নারদকে, নারদ ব্যাসকে এবং ব্যাস হতে শ্রীশুকদেব আস্বাদন করছেন ও শুকমুখ হতে জগতে এসেছে। বৃক্ষের ফল যদি উচ্চ শাখা হতে ভুমিতে পতিত হয়, তা হলে তা ভেঙে যায়। কিন্তু যদি শাখা প্রশাখা দিয়ে গড়িয়ে আসে আস্তে আস্তে মাটিতে পড়ে তা হলে আর সে সম্ভাবনা থাকে না। শ্রীমদ্ভাগবত ব্রহ্মা নারদ ব্যাসাদি শিষ্যপ্রশিষ্য পরম্পরায় জগতে আসছে, কাজেই উচুঁ থেকে ফল পড়ে ভেঙে যায় নি তা অবিকৃত আছে। শুকপক্ষী যেমন মধুর ফল ছাড়া অন্য কিছুই খায় না, সেইরূপ পরমহংস চুড়ামণি আজন্ম সংসারত্যাগী শ্রীশুকমুনি পরমমধুর শ্রীকৃষ্ণ লীলারস ছাড়া অন্য রস আস্বাদন করেন না, সুতরাং শুকমুখনিগর্লিত এই রসময় ফল পরম মধুর।
অতএব হে ভাবুক রসিকগণ সর্ব্বত্যাগ করে এই রসই আস্বাদন কর। রসাস্বাদনের অধিকার বা আগ্রহ সকলের নেই; কেবল রসিকেরই অধিকার। যে রস বোঝে বা তার রসাস্বাদনে আগ্রহ আছে সেই রসিক। এইজন্য ব্যাসদেব এই রস আস্বাদন করবার জন্য রসিকগণকেই আহ্বান করছেন।

ব্যাসদেব আবার ভাবুকদের আহ্বান করছেন, কারণ রস সকলে চায় বটে, কোনটি প্রকৃত রস, তা কেউ বোঝে না, বুঝলে শ্রীভগবানের রস ছাড়া কেহ অনিত্য বিষয়রসে মত্ত হত না। যাঁরা ভাবুক, তাঁরা কোন রস নিত্য ও চিরস্থায়ী, তা ভাবনা করে রসান্বেষণ করেন, কাজেই ভাবুক রসিকগণ এই বেদকল্পতরুর পরমমধুর সময় ফল আস্বাদন করেণ এই আহ্বান ব্যাসদেবের।

কলিহত জীবের জন্য ভগবানের করুণা এই ভাগবত। যার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন কলিযুগ পাবেন অবতার গৌরহরি।
গৌরহরি আমাদের সঙ্গে ভাগবতের পরিচয় করিয়ে দিলেন। আর ভাগবতের ভক্ত কেমন হয় তা কলিতে জীবকে দেখিয়ে দিলেন গৌরহরি।
🌿🌿🌿🌿🌿🌿
জয় জয় ভাগবত মহাপুরাণ। জয় জয় মধুময় ভগবানের লীলা।