Скачать или смотреть বুক রিভিউ লেখার সহজ পদ্ধতি । Raihan A.R. Khan

খুব সহজেই নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করে চমৎকার বুক রিভিউ করা সহজঃ-

১। শুরুতে বইয়ের এমন একটি লাইন যেটি পুরো বইয়ের মূল গল্পকে উপস্থাপন করে।

২।দ্বিতীয় প্যারায় লেখক সম্পর্কে সংক্ষেপে বলতে হবে এবং লেখক এর সঙ্গে বইটির আলোচ্য অংশের সংযোগ উপস্থাপন করতে হবে।

৩। তৃতীয় প্যারায় প্রত্যেকটি চরিত্রকে একটি বিশেষণের দ্বারা প্রকাশ করতে।

৪। চতুর্থ প্যারায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হল বইটির মূল বিষয় সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা।

৫। এ প্যারায় বইটিতে কিসের অভাব রয়েছে অর্থাৎ গঠনমূলক সমালোচনা করতে হবে।

৬। এ প্যারায় বইটির পটভূমি সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে।

৭। সর্বশেষে বইটি জীবনে কী ধরনের প্রভাব ফেলে অর্থাৎ বইটি কী বার্তা বহন করে সেটি ফুটিয়ে তুলতে হবে।

নিম্নে একটি বই রিভিউ এর উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়া হলঃ-

শয়তান
লিও টলস্টয়
প্রকাশনী : বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র

পাঠ প্রতিক্রিয়া:
"জগতের সমস্ত লোকেরই মস্তিষ্ক-বিকৃতি আছে।"- এ মস্তিষ্ক- বিকৃতি বলতে আমরা সাধারণত যে ধরনের অর্থ বুঝে থাকি তা এ উপন্যাসটিতে বোঝানো হয় নি। মানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে কিছু জৈবিক চাহিদা ও চেতনা। জৈবিক চাহিদা মানুষকে কীভাবে উন্মাদ করে তোলে এবং তা যে ভয়ংকর পরিণতির দিকে নিয়ে তা এই উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়।

লেখক লিও টলস্টয়কে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তিনজন লেখকের মধ্যে একজন বলে গণ্য করা হয়। বাকি দুজন হলেন শেকসপিয়ার ও গ্যেটে।আন্না কারেনিনা, ওয়ার অ্যান্ড পিস দুটি তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। এই উপন্যাসে ও পাওয়া যাবে জীবনের জৈবিক চাহিদা সম্পর্কে লেখকের অসাধারণ
পর্যবেক্ষন।

গল্পের শুরু হয়েছে ইউজিন আর্তেনিভের মেয়েদের প্রতি জৈব আকর্ষণ দিয়ে। তারপর নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে গল্প এগিয়ে যায়। এখানে দেখা মিলবে যুবক ইউজিনের কাম উত্তেজনা, আত্মসংযমের চেষ্টা, মানষিক দ্বৈরত। লাস্যময়ী স্টিপানিডার, আর্দশ স্ত্রী লিজা, তর্কবাজ শাশুড়ি ভার্ভারা।

পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ হচ্ছে নিজের সাথে
যুদ্ধ করা। মনের কুপ্রবৃত্তির সাথে যুদ্ধ করা। কিন্তু তা অনেক সময় সম্ভব হয় না কামনার তাড়নায়। যেই কামনাকে লেখক 'শয়তান' বলে উল্লেখ করেছেন। " প্রচন্ড শক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক নিদারুণ মায়াবী..... সে স্টিপানিডা__ তার কবল থেকে উদ্ধার নেই আমার। ও আমাকে পেয়েছে - কাঁধে চেপে বসেছে। হ্যাঁ, শয়তানই তো সে"

আমার কাছে মনে হয়েছে বিয়ের পর মানুষের জৈবিক চাহিদা অনেকটা কমে যায়। লেখকও তাই দেখিয়েছেন কিন্তু কারও প্রতি একবার দুর্বল হয়ে পড়লে সেই জায়গা থেকে ফিরে আসা যে প্রায় অসম্ভব তা ভালোভাবেই ফুটে ওঠে উপন্যাসটিতে।

উপন্যাসটি লেখকের বাস্তবিক অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। লেখক একসময় এক যুবতীর কামবাসনায় উন্মাদ হয়ে উঠেছিলেন। পরবর্তীতে অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করতে পেরেছিলেন শেষ পর্যন্ত।

উপন্যাসটি একটি বার্তা বহন করে। কোন জৈবিক সম্পর্কে জড়ানোর আগে তার ফলাফল কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা ভাবা উচিত। প্রত্যেক সম্পর্কেরই একটা মূল্য থাকে।
Aa