#কোরআনের_ধ্বনি।
কোরআনের ধ্বনি।
(১) আল-কোরআন সর্বোশ্রেষ্ট আসমানী কিতাব: পবিত্র কোরআন স্বয়ং আল্লাহর তায়ালার বাণী যা সর্বোশেষ নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর ওপর নাজিল করা হয়েছে। আল-কোরআন আসমানী কিতাবসমূহের সর্বোশেষ কিতাব। এর পর কিয়ামত পর্যন্ত আর কোনো কিতাব নাজিল হবে না। তাই কিয়ামত পর্যন্ত সকল সমস্যার সমাধান সম্বলিত আল-কোরআনই সর্বোশেষ ও সর্বোশ্রেষ্ট আসমানী কিতাব। কোরআনে আল্লাহ বলেন: আলিফ-লাম-রা!এ কিতাব; যা আপনার প্রতি নাজিল করেছি, যাতে আপনি বিশ্বমানবতাকে তাদের প্রতিপালকের আদেশক্রমে অন্দকারাছন্ন জীবন থেকে বের করে আনতে পারেন আলোকোজ্জল রাজপথে। যিনি মহাপরাক্রমশালী, সুপ্রশংসিত। (সূরা: ইব্রাহিম, আয়াত: ১)।
(২) আল-কোরআন বিশ্বজনীন গ্রন্থ: আল-কোরআন নির্দিষ্ট জাতি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, দেশ বা কালকে কেন্দ্র করে নাজিল হয়নি। বরং সর্বোকালের সমগ্র বিশ্বমানবতার হিদায়াতের সওগাত নিয়ে নাজিল হয়েছে। তাই এটা চিরন্তন ও বিশ্বজনীন গ্রন্থ। আল্লাহ তায়ালা বলেন: রমজানের মাস, এ মাসেই কোরআন নাজিল করা হয়েছে , যা মানব জাতির জন্য পুরোপুরি হিদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন শিক্ষা সম্বলিত, যা সত্য সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয়। (সূরা: আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫)।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন: প্রশংসা আল্লাহরই যিনি তাঁর বান্দার প্রতি এ কিতাব নাজিল করেছেন এবং এর মধ্যে কোনো বক্রতা রাখেননি৷ (সূরা: কাহাফ, আয়াত-১)।
(৩) আল কোরআন নির্ভুল ও অতীব বিশুদ্ধ গ্রন্থ: মহান আল্লাহর নাজিলকৃত জীবন বিধান কোরআন নিরভুল ও অতীব বিশুদ্ধ গ্রন্থ। এর মধ্যে কোনো সন্দেহের লেশমাত্র নেই। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: এটি আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই । (সূরা: বাকারা, আয়াত: ১)।
(হে নবী!) আমি সব মানুষের জন্য এ সত্য (বিধানসহ) কিতাব নাজিল করছি৷ (সূরা: আয-যুমার, আয়াত: ৪১)।
হে নবী! তোমার রবের কিতাবের মধ্য থেকে যাকিছু তোমার ওপর অহী করা হয়েছে তা (হুবহু) শুনিয়ে দাও৷ তাঁর বক্তব্য পরিবর্তন করার অধিকার কারো নেই। (সূরা: কাহাফ, আয়াত: ২৭)।
হে মুহাম্মাদ! ওদেরকে বলে দাও, নিজের পক্ষ থেকে এর মধ্যে কোনো পরিবর্তন পরিবর্ধন করা আমার কাজ নয়৷ আমি তো শুধুমাত্র আমার কাছে যে অহী পাঠানো হয়, তার অনুসারী৷ (সূরা: ইউনুস, আয়াত: ১৫)।
(৪) আল-কোরআন পরিপূর্ণ জীবন বিধান: মহাগ্রন্থ আল-কোরআন হচ্ছে সর্বোশেষ পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এতে মানব জাতীর পরিপূর্ণ সব সমস্যার সমাধান রয়েছে। এরপর কোনো আসমানী কিতাব নাজিলের প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ এ গ্রন্থে মানব জীবনের ইহকালিন ও পরকালীন সমস্ত বিষয় উল্লেখ রয়েছে: আমি এ কিতাব তোমার প্রতি নাজিল করেছি, যা সব জিনিস পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে এবং যা সঠিক পথনির্দেশনা, রহমত ও সুসংবাদ বহন করে তাদের জন্য যারা আনুগত্যের শির নত করে দিয়েছে৷ (সূরা: আন-নাহল, আয়াত: ৮৯)।
আর ইসলামকে পরিপূর্ণ জীবন বিধান হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন: আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি, আমার নিয়ামত তোমাদের প্রতি সম্পূর্ণ করেছি এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি। (সূরা: আল-মায়েদা, আয়াত: ৩)।
(৫) আল-কোরআন চিরন্তর চ্যালেঞ্জের মুকাবিলায় নাজিলকৃত গ্রন্থ: যখন এ গ্রন্থ হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর নিকট নাজিল হয় তখন আরবের লোকেরা কোরআনের ভাষার বিশুদ্ধতা, ভাষা অলংকার, রচনাশৈলী, বলিষ্ট যুক্তিধারা, অনুপম বিন্যাস ও ভাষার মাধুর্যে বিমোহিত হয়ে ইসলামের দিকে ধাবিত হতে শুরু করে। কিন্তু কতিপয় ইসলাম বিদ্বেষী কপট মুনাফিক জিদের বশবতী হয়ে একে কবিতা, যাদু বলে নানা অপবাদ রটাতে থাকে। আল্লাহ তায়ালা তাদের লক্ষ্য করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, যদি তোমরা সত্যি ইহা কোনো মানুষের রচনা হয়ে থাকে তা হলে অনুরূপ একটি বাক্য রচনা করে দেখাও। কোরআনে বলা হয়েছে: আর যে কিতাবটি আমি আমার বান্দার ওপর নাজিল করেছি সেটি আমার কিনা- এ ব্যাপারে যদি তোমরা সন্দেহ পোষণ করে থাকো তাহলে তার মতো একটি সূরা তৈরি করে আনো এবং নিজেদের সমস্ত সমর্থক গোষ্ঠীকে ডেকে আনো এক আল্লাহকে ছাড়া আর যার যার চাও তার সাহায্য নাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে এ কাজটি করে দেখাও ৷ (সূরা: আল-বাকারা, আয়াত :২৩)। বলে দাও, যদি মানুষ ও জিন সবাই মিলে কোরআনের মতো কোনো একটি জিনিস আনার চেষ্টা করে তাহলে তারা আনতে পারবে না, তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়ে গেলেও৷ (সূরা: বনী ইসরাঈল, আয়াত: ৮৮) এই চ্যালেঞ্জ মুকাবিলায় সে যুগেই নয় আজকের বিজ্ঞানের যুগে ও কেউ সফল হয়নি। এবং কোনো দিন হবেও না। সকলেই এক বাক্যে পুরানো সে কথাই বলতে বাধ্য হচ্ছে: না- এটা কোন মানুষের বাণী নয়।
(৬) আল-কোরআন মুক্তির একমাত্র পথ: আল-কোরআন অনুসরণেই পথহারা জাতির পথের দিশা পেতে পারে। কোরআন হচ্ছে মুত্তাকীদের জন্য হিদায়েত। কোরআনে এরশাদ হচ্ছে- এটি মানব জাতির জন্য একটি সুস্পষ্ট সর্তকবাণী এবং যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য পথনির্দেশ ও উপদেশ। (সূরা: আলে-ইমরান, আয়াত: ১৩৮)।
আগের রাসূলদেরকেও আমি উজ্জ্বল নিদর্শন ও কিতাব দিয়ে পাঠিয়েছিলাম এবং এখন এ বাণী তোমার প্রতি নাজিল করেছি, যাতে তুমি লোকদের সামনে সেই শিক্ষার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে যেতে থাকো। যা তাদের জন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং যাতে লোকেরা (নিজেরাও) চিন্তা-ভাবনা করে। (সূরা: আন-নাহল, আয়াত: ৪৪)।
(৭) আল-কোরআনের শ্রেষ্ঠত্ব: আল-কোরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ও বড়ত্ব ব্যাপক যে, ইহা যদি পাহাড়ের নাজিল করা হতো তা হলে পাহাড়ও আল্লাহর ভয়ে ধ্বসে যেত: অথচ মানুষের মতো চেতনা শক্তি নেই। কিন্তু আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ চিন্তা-শক্তিসম্পন্ন জীবন হয়েও আল-কোরআনের শ্রেষ্ঠত্ব অনুভব করে না এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন নয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ কোরআনে বলেন: আমি যদি এই কোরআনকে কোনো পাহাড়ের ওপর নাজিল করতাম, তাহলে তুমি দেখতে পেতে তা আল্লাহর ভয়ে ধসে পড়ছে এবং ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে ৷ আমি মানুষের সামনে এসব উদাহরণ এ জন্য পেশ করি যাতে তারা (নিজেদের অবস্থা সম্পর্কে) ভেবে দেখে। (সূরা: আল-হাশর, আয়াত: ২১!
Информация по комментариям в разработке