Скачать или смотреть নবীজী বলেন—সরিষা পরিমাণ ঈমানও যদি থাকে, জান্নাতের জন্য যথেষ্ট! মুফতি আরিফ বিন হাবিব

হাদীসের এই বক্তব্যটি মূলত মুসলিমদের আশার আলো জাগায় যে, যদি কারো অন্তরে সামান্য পরিমাণেও (যেমন গম, যব বা সরিষার দানার পরিমাণ) ঈমান থাকে, তাহলে সে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে না। এক সময় সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে।

হাদীসের মূল বক্তব্য:
হাদীসটিতে নবী মুহাম্মদ (সা.) বোঝাতে চেয়েছেন—
ঈমানই চূড়ান্ত রক্ষা-কবচ।

কেউ যদি গুনাহগার হয়েও অন্তরে সামান্য ঈমান রাখে, তাহলে আল্লাহ এক সময় তাকে জাহান্নাম থেকে বের করবেন।
এই হাদীসটি সহীহ মুসলিম ও বুখারিসহ অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে ভিন্ন ভিন্ন রেওয়ায়েতে এসেছে। অনেক রেওয়ায়েতে আছে:

"جعل الله النار حرماً على من قال لا إله إلا الله يبتغي بذلك وجه الله"
– আল্লাহ জাহান্নামকে হারাম করে দিয়েছেন তার ওপর, যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি চায়।

ব্যাখ্যা:
১. ঈমানের গুরুত্ব
ঈমান এমন একটি জিনিস, যার কারণে মানুষ চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে রক্ষা পায়। গম, যব বা সরিষা—এইসব ছোট ছোট জিনিসের তুলনায় ঈমান যদি অতি ক্ষুদ্র পরিমাণেও থাকে, তবুও তা অনেক মূল্যবান।

২. গুনাহর শাস্তি শেষে মুক্তি
কেউ যদি গুনাহ করে, নামাজ না পড়ে বা হারাম কাজে লিপ্ত হয়, কিন্তু তার অন্তরে ঈমান থাকে—তাহলে শাস্তির পরও সে জান্নাতে যাবে। তবে শাস্তি কতটা কঠিন হবে, তা কেবল আল্লাহ জানেন।

৩. আল্লাহর দয়ার পরিচয়
হাদীসটি আল্লাহর অসীম দয়ারও পরিচায়ক। তিনি বান্দার সামান্য ঈমানও বিফলে যেতে দেন না।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়:
চিরকাল জাহান্নামে থাকবে কেবল কাফের ও মুশরিকরা।
মুমিন, যত বড় গুনাহগারই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত জান্নাতে যাবে।
তাওহীদের গুরুত্ব এখানে স্পষ্ট। অর্থাৎ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অন্তরে থাকাটাই পরকালীন মুক্তির মূল চাবিকাঠি।

উপসংহার:
এই হাদীসটি আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করার, গুনাহ থেকে ফিরে আসার এবং আল্লাহর রহমতের আশায় জীবনের পথ সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য এক বিশাল প্রেরণা। আমাদের উচিত, অন্তরে ঈমান দৃঢ় করে রাখা এবং সেই ঈমানকে আমল দিয়ে প্রমাণ করা।

"হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরে ঈমানকে প্রতিষ্ঠিত করে দাও, ও মৃত্যুর সময় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার তাওফিক দাও। আমিন!"