সন্তানকে_আদর্শ_মানুষ_বানানো
সন্তানকে আদর্শ মানুষ বানানো প্রতিটি মা–বাবার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব ও স্বপ্ন। এটা কোনো একদিনে হয় না, বরং ধারাবাহিক শিক্ষা, পরিবেশ, স্নেহ-মমতা ও সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে হয়। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক দেওয়া হলো:
১. ঈমান-আখলাক গঠন
আল্লাহভীতি ও ঈমান ছোটবেলা থেকেই শিখান। নামাজ, কুরআন পড়া, দোয়া শেখানোতে গুরুত্ব দিন।
সুন্দর আখলাক শেখান – যেমন সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা, বড়দের সম্মান করা, ছোটদের ভালোবাসা।
২. নিজের আমল দিয়ে উদাহরণ দিন
সন্তানেরা মা-বাবাকে অনুসরণ করে। তাই আগে নিজে নামাজি, সত্, সৎচরিত্রবান হওয়ার চেষ্টা করুন।
ঘরে ঝগড়া-বিবাদ না করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করুন।
৩. ভালো পরিবেশ তৈরি করুন
খারাপ বন্ধু, অশ্লীল মিডিয়া, বাজে সঙ্গ থেকে বাঁচান।
ভালো বই, কুরআন-হাদিস, ইসলামী গল্প, অনুপ্রেরণাদায়ী জীবনী পড়ার সুযোগ দিন।
৪. শিক্ষার সঠিক ভারসাম্য
ধর্মীয় শিক্ষা: কুরআন-হাদিস, ফিকহ, ইসলামি ইতিহাস।
দুনিয়াবি শিক্ষা: স্কুল-কলেজে পড়াশোনায় মনোযোগী করা।
দুই শিক্ষার সমন্বয় করলে আদর্শ মানুষ হওয়া সহজ হয়।
৫. ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব
সন্তানকে শুধু শাসন নয়, ভালোবাসা ও সময় দিন।
তাদের সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন, বন্ধুর মতো আচরণ করুন।
৬. দায়িত্ববোধ শেখান
ঘরের ছোট কাজে যুক্ত করুন (যেমন জিনিসপত্র গুছানো, বাজারে সাহায্য করা)।
নিজের পড়াশোনা, সময়, দায়িত্ব নিজের মতো করে করতে শেখান।
৭. ধৈর্য ও দোয়া
একদিনে পরিবর্তন আশা করবেন না। ধৈর্য ধরে বারবার বুঝান।
সন্তানের জন্য সবসময় সালাতে দোয়া করুন – এটা নবীদের সুন্নাহ।
👉 সংক্ষেপে: আদর্শ মানুষ বানাতে চাইলে আদর্শ পরিবেশ, আদর্শ শিক্ষা এবং আদর্শ উদাহরণ দরকার।
🌼আলহামদুলিল্লাহ 🌸
সন্তানের জন্য কুরআন ও হাদিসে বহু সুন্দর দো‘আ এসেছে। এগুলো নিয়মিত পড়া এবং সন্তানের মাথায় হাত রেখে দোয়া করা খুবই উপকারী। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দো‘আ দিলাম—
---
📖 কুরআনের দো‘আ
1. সন্তানকে নেক বানানোর দো‘আ
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً ۖ إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ
উচ্চারণ: রাব্বি হাব্লী মিল্লাদুন্কা যুর্রিইয়াতান ত্বয়্যিবাহ, ইন্নাকা সামীউদ্ দু‘আ
অর্থ: “হে আমার রব! তুমি আমাকে তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র সন্তান দান করো, নিশ্চয়ই তুমি দোয়া শোনো।”
(সূরা আলে ইমরান: ৩৮)
---
2. সন্তান ও পরিবারকে নেক বানানোর দো‘আ
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
উচ্চারণ: রাব্বানা হাব্ লানা মিন্ আজওয়াজিনা ওয়া যুররিইয়াতিনা কুররাতা আ‘ইউনিঁঁ, ওয়াজ‘আলনা লিল্মুত্তাকীনা ইমামা
অর্থ: “হে আমাদের রব! তুমি আমাদের স্ত্রী-সন্তানদের চোখের শীতলতা দাও এবং আমাদের মুত্তাকিদের জন্য নেতা বানাও।”
(সূরা আল-ফুরকান: ৭৪)
---
3. সন্তানদের ঈমানদার রাখার দো‘আ
رَبِّ اجْعَلْنِي مُقِيمَ الصَّلَاةِ وَمِن ذُرِّيَّتِي ۚ رَبَّنَا وَتَقَبَّلْ دُعَاءِ
উচ্চারণ: রাব্বিজ‘আলনী মুকীমাস্-সালাতি ওয়া মিন যুররিইয়াতী, রাব্বানা ওয়াতাকাব্বাল দু‘আ
অর্থ: “হে আমার রব! আমাকে নামাজ প্রতিষ্ঠাকারী বানাও এবং আমার সন্তানদের মধ্য থেকেও (নামাজ প্রতিষ্ঠাকারী বানাও)। হে আমাদের রব! তুমি আমার দোয়া কবুল কর।”
(সূরা ইবরাহিম: ৪০)
---
🤲 হাদিসে বর্ণিত দো‘আ ও আমল
নবী ﷺ বলেছেন, সন্তান জন্মের সময় আজান ও ইকামত দেওয়া, আর নিয়মিত তার জন্য কল্যাণ কামনা করা।
সন্তানকে মাথায় হাত রেখে এই দোয়া পড়তে পারেন:
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উচ্চারণ: আ‘উযু বিকালিমাতিল্লাহিত-তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিওঁ ওয়া হাাম্মাতিঁঁ, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল্লাম্মাহ
অর্থ: “আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার আশ্রয় চাই, সব শয়তান, বিষধর প্রাণী এবং সকল কুদৃষ্টি থেকে।”
(বুখারি)
---
✅ এ দো‘আগুলো প্রতিদিন সকালে-সন্ধ্যায়, সালাত শেষে বা সন্তানের মাথায় হাত রেখে পড়তে পারেন।
মাহদী_হাসান-মাদানী
01925-144533
Информация по комментариям в разработке