নাম থেকেই রোগটাকে কিছুটা বোঝা যায়। গ্রিক ভাষায় অ্যাঙ্কাইলস শব্দের অর্থ বেঁকে যাওয়া। আবার অ্যাঙ্কাইলোসিস বলতে বোঝায় শক্ত হয়ে যাওয়া। আর স্পন্ডিলস হল মেরুদণ্ড। অ্যাঙ্কাইলোসিং স্পন্ডিলাইটিস (এএস) হল প্রদাহজনিত রোগ, যার ফলে শিরদাঁড়া কখনও শক্ত হয়ে যায়, আবার কখনও বেঁকে যায়।
রোগের লক্ষণ
অনেক সময়েই মানুষের কোমরে ব্যথা হয় অতিরিক্ত খাটাখাটনির কারণে। সাধারণত দিনের শেষে এমন ব্যথা হতে দেখা যায়। এটা সাধারণ কোমরের ব্যথা, ‘অ্যাঙ্কাইলোসিং স্পন্ডিলাইটিস’ নয়। এর অন্যতম লক্ষণ সারা রাত কোমরে ব্যথা হওয়া, সকালে উঠেও কোমর ধরে থাকা।
কোন বয়সে হতে পারে?
২০ থেকে ৪৫ বছরের পুরুষদের এই রোগ হয়। আবার ১৬ বছরের নীচে কিশোরদের মধ্যেও এই রোগের লক্ষণ দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে কোনও আঘাত ছাড়াই হাঁটু, গোড়ালি কিংবা শরীরের এক বা একাধিক গাঁট ফুলে যায় ও ব্যথা হয়। একে বলা হয়, জুভেনাইল অ্যাঙ্কাইলোসিং স্পন্ডিলাইটিস। মেয়েদের ক্ষেত্রেও এই রোগ হতে পারে, তবে ছেলেদের তুলনায় কম।
পরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়
অ্যাঙ্কাইলোসিং স্পন্ডিলাইটিস নির্ণয় করতে এইচএলএবি-২৭ জিনের পরীক্ষা করা হয়। একে বলা হয়, পিসিআর বা জিন টেস্ট। যাঁদের এই টেস্ট পজ়িটিভ আসে, তাঁদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এটি অটোসোমাল ডমিন্যান্ট ডিজ়িজ়। বাবা মায়ের যদি এই রোগ থাকে, ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে সন্তানেরও এই জিন পাওয়ার। প্রসঙ্গত, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ০.৭ থেকে ১ শতাংশ মানুষ অ্যাঙ্কাইলোসিং স্পন্ডিলাইটিসে ভোগেন। এদের মধ্যে আবার ৯০ শতাংশ ব্যক্তির মধ্যেই এইচএলএবি-২৭ পজ়িটিভ পাওয়া যায়। ডা. রায় বললেন, ‘‘চিকিৎসকেরা পারিবারিক ইতিহাস থেকে জানার চেষ্টা করেন বাবা বা মা, কার তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রোগটি পেয়েছেন।’’
আগে এক্স রে-র মাধ্যমে স্যাক্রো-ইলিয়াক জয়েন্টে পরিবর্তন দেখা দিলে ধরে নেওয়া হত সেই ব্যক্তির এই রোগ হয়েছে। তবে এটি সাধারণত রোগের অ্যাডভান্সড স্টেজের প্রতিফলন। বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ নির্ণয় করতে হলে এমআরআই করার প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক স্তরে একে বলা হয়, নন রেডিয়োগ্রাফিক স্পন্ডাইলো আর্থ্রাইটিস। কিন্তু ৫-৭ বছর বাদে যদি এই রোগ আটকানো না যায় বা রোগী ঠিকমতো নিজের চিকিৎসা না করান, তা হলে সেটা এক্স রে-তে ধরা পড়েই। ডাক্তারি পরিভাষায় এই স্তরের নাম রেডিয়োগ্রাফিক অ্যাঙ্কাইলোসিং স্পন্ডিলাইটিস।
পিসিআর ছাড়া আরও কয়েকটি রক্ত পরীক্ষা করাতে হয়। যেমন, হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা, কারণ এএস-এর রোগীরা অনেক সময়ে রক্তাল্পতায় ভোগেন। করা হয় ই এস আর-সি আর পি টেস্ট। সাধারণত এএস-র রোগীদের ই এস আর-সি আর পি বেশি থাকতে পারে। এগুলির সঙ্গে ইউরিয়া-ক্রিয়েটিনিন টেস্টও করতে বলা হয় রোগীকে। দীর্ঘ দিন ব্যথা কমানোর ওষুধ খাওয়ার কারণে কিডনির সমস্যাও হতে পারে। এই টেস্টের মাধ্যমে সেটাই যাচাই করা হয়।
নিরাময় কী ভাবে হবে?
এই রোগের প্রকোপ কমাতে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা দরকার। যেমন, এক ঘণ্টা শারীরচর্চা করতে হবে। প্রথম ১৫ মিনিট প্রাণায়াম, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ়, স্ট্রেচিং, আর বাকি সময়ে হাঁটাহাঁটি, সাঁতার কিংবা সাইক্লিং। অল্পবয়সিদের ক্ষেত্রে ভলিবল বা বাস্কেটবলের মতো খেলাও কাজে লাগতে পারে, কিন্তু ফুটবল বা রাগবির মতো ‘কন্ট্যাক্ট স্পোর্টস’ চলবে না। কারণ এএস-এ অস্টিয়োপোরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। এখানে শিরদাঁড়া শক্ত হয়ে যাওয়া ও কোমরের হাড় বেড়ে যাওয়ার কারণে রোগী এমনিতেই শারীরিক অস্বস্তিতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে এই শিরদাঁড়া ও কোমরের হাড় ভঙ্গুর হয়ে যেতে থাকে। ফুটবল বা রাগবির মতো খেলায় পড়ে গেলে হাড় ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা ও তার ফলে রোগী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হতে পারেন। বাড়িতে ফিজ়িয়োথেরাপি (সপ্তাহে দু’টি সেশন তিন ঘণ্টা করে) বা কোথাও গিয়ে গ্রুপ থেরাপি করা যায়। এএস-এ আক্রান্ত হলে অনেক সময়ে অবসাদ দেখা দেয়। এই ধরনের গ্রুপ থেরাপি তাঁদের মানসিক ভাবে তরতাজা রাখতে সাহায্য করে।
ঈষদ উষ্ণ পানিতে গোসল করতে হবে ও খেতে হবে গরম খাবার। যাঁরা আলসারেটিভ কোলাইটিসে ভোগেন তাঁদের অনেক সময়েই গরুর দুধ সহ্য হয় না অর্থাৎ তাঁরা ল্যাক্টোজ় ইনটলারেন্ট হয়ে পড়েন। এ ক্ষেত্রে ঘরে পাতা দই কিংবা ছানা খাওয়া যায়। এ ছাড়া, এএস-এর রোগীদের খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ থাকে না। ধূমপানের অভ্যেস থাকলে তা ত্যাগ করা দরকার।
এখন অধিকাংশ মানুষকেই বাড়িতে বসে কাজ করতে হচ্ছে, অনেকে অফিসেও যাচ্ছেন। কম্পিউটারের সামনে দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে হয়। ফলে কোমর, ঘাড়, পিঠে ব্যথা বাড়তে পারে। তার জন্য এক ঘণ্টা অন্তর উঠে কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করা, হাত পা নাড়া ইত্যাদি করতে হবে। এএস-এর রোগীদের অনেকের চোখের সমস্যা দেখা দেয়। এর জন্য ‘রুল অব ২০ বাই ২০ বাই ২০’ পালন করতে হবে। ২০ মিনিট কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকার পরে ২০ ফুট দূরে কিছুক্ষণ তাকাতে হবে। একই সঙ্গে ২০ সেকেন্ড চোখ পিটপিট করতে হবে। কারণ কম্পিউটারে কাজ করার সময়ে সাধারণত আমাদের চোখের পাতা পড়ে না।
এখন এই রোগের অনেক ধরনের চিকিৎসা বেরিয়ে গিয়েছে। তাই অবসাদে ভুগবেন না। নিয়মিত শারীরচর্চা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে সাধারণ জীবনযাপনে ফিরে আসা সম্ভব।
Thanks for watching
Please like, comment, share & subscribe.
[ Dr. Mohammad Mahtab Uddin ]
B.P.T.(DU), P.G.D.(Sports Medicine), C.M.T.B.(India), P.G.T.(Japan)
Special Training in Manipulation (Vellore)
Arthritis, Pain, Paralysis & Rehabilitation Specialists (BSMMU)
[ Pain Cure And Physiotherapy Center ]
Contact us :01684-092074 ( Whatsapp available ) ; 01914499226
20/5, Shohid Colonel Rashid Square(2nd Floor), near Square Hospital
Bir-Uttom Nuruzzaman Sarak, West Panthapath, Dhaka-1205
Website: paincurebd.com; Facebook: fb.com/paincurebd
Email: [email protected]; [email protected]
Информация по комментариям в разработке