#islamicstories #ইসলামিক_কাহিনী #islamic #motivationalvideo
হযরত শোয়াইব (আ.)-এর যামানায় এক ব্যক্তি দম্ভ করে বলত, "আমি তো কত পাপ করেছি, কত অন্যায় করেছি, কিন্তু আল্লাহ তো আমাকে কোনো শাস্তি দেননি! "
আল্লাহ তায়ালা তখন হযরত শোয়াইব (আ.)-কে ওহীর মাধ্যমে জানালেন, "হে শোয়াইব! ওই বোকা লোকটিকে গিয়ে বলো,সে যা বলছে তা উল্টো। আমি তাকে বহুবার ধরেছি, বহুবার শাস্তি দিয়েছি, কিন্তু সে এতটাই অন্ধ যে, সে টেরই পাচ্ছে না। সে আপাদমস্তক আমার শাস্তির শেকলে বন্দি হয়ে আছে।"
আল্লাহ আ’আলা আরো বললেন, "হে শোয়াইব! তাকে বলো, তার পাপের কারণে তার অন্তরের অবস্থা কালো হাঁড়ির মতো হয়ে গেছে। হাঁড়ি যখন নতুন থাকে, তখন সামান্য ধোঁয়া লাগলে বা কালি পড়লে তা দেখা যায়, কিন্তু হাঁড়ি যখন পুরোপুরি কালো হয়ে যায়, তখন তাতে আরো কালি লাগলে তা আর বোঝা যায় না।"
(একজন ফর্সা মানুষ যদি কামারের কাজ করে, তবে তার মুখে কালি লাগলে সাথে সাথে বোঝা যায় এবং সে ধুয়ে ফেলে। কিন্তু একজন কালো মানুষ যদি কামারের কাজ করে, তবে তার মুখে কালি লাগলে তা বোঝা যায় না। ঠিক তেমনি, মানুষ যখন প্রথম গুনাহ করে, তখন তার বিবেক দংশন করে, সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়। কিন্তু যখন সে বারবার গুনাহ করতে থাকে, তখন তার অন্তর পুরোপুরি কালো হয়ে যায়। তখন আর তার মনে অনুশোচনা জাগে না। গুনাহ করতে তার ভালো লাগে এবং শেষ পর্যন্ত সে ঈমান হারিয়ে ফেলে। পাপের মরিচা তার অন্তরের আয়নাকে নষ্ট করে দেয়। সাদা কাগজে লিখলে পড়া যায়, কিন্তু লেখার ওপর বারবার লিখলে কাগজ কালো হয়ে যায় এবং কিছুই আর পড়া যায় না। )
হযরত শোয়াইব (আ.) যখন লোকটিকে আল্লাহর এই বার্তা শোনালেন, তখন লোকটির মনে একটু ধাক্কা লাগল। সে জিজ্ঞেস করল, "যদি আল্লাহ আমাকে সত্যিই শাস্তি দিয়ে থাকেন, তবে তার নিদর্শন কী? আমি তো সুস্থ আছি, আমার ধন-সম্পদও ঠিক আছে।"
শোয়াইব (আ.) আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেস করলেন, "আল্লাহ! সে শাস্তির প্রমাণ চাইছে।"
আল্লাহ বললেন, "আমি দোষ গোপনকারী, তাই তার সব গোপন কথা ফাঁস করব না। তবে তার পরীক্ষার জন্য আমি একটি নিদর্শনের কথা বলছি। তাকে বলো, আমার শাস্তির নিদর্শন হলো: সে অনেক নামাজ পড়ে, রোযা রাখে, দান-খয়রাত করে এবং অনেক নেক আমল করে।কিন্তু তার ইবাদতে বিন্দুমাত্র স্বাদ পায় না।"
সে ইবাদত করে ঠিকই, কিন্তু তার ইবাদতে কোনো প্রাণ নেই, কোনো মিষ্টি অনুভূতি নেই। তার ইবাদতগুলো হলো এমন আখরোটের মতো, যার ভেতরে কোনো শাঁস নেই, পুরোটাই ফাঁকা। আর শাঁসবিহীন বীজ থেকে যেমন গাছ হয় না, তেমনি প্রাণহীন ইবাদতও আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না এবং তা কোনো ফল দেয় না।"
ঘটনাটির উল্লেখযোগ্য শিক্ষনীয় দিক:
১. পাপের সবচেয়ে বড় শাস্তি হলো ইবাদতের স্বাদ হারিয়ে ফেলা। আল্লাহ যখন কারো ওপর নারাজ হন, তখন তার কাছ থেকে সিজদার আনন্দ কেড়ে নেন।
২. পাপ করতে করতে মানুষের অন্তর যখন মরে যায়, তখন সে আর বুঝতে পারে না যে, সে বিপদে আছে।
৩. ইবাদত শুধু লোকদেখানো শরীরচর্চা নয়, এর জন্য অন্তরের উপস্থিতি ও স্বাদ আবশ্যক।
Информация по комментариям в разработке