এই ভিডিওতে পৃথিবীর প্রণালীগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এপৃথিবীর সব প্রণালী একসাথে আলোচনা হয়েছে।
সাধারণত চ্যানেল, নালা, সমুদ্রপথ এইগুলো প্রণালীর সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা হয় কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এইগুলো ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। অর্থনৈতিকভাবে অনেক প্রণালীই গুরুত্বপূর্ণ। প্রণালী গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এবং এই পর্যন্ত প্রণালী দখলের জন্য অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।
অনেক কৃত্রিম চ্যানেল স্থলভাগের উপর নির্মিত হয়েছে দুটি জলাধারকে সংযোগ করার জন্য যা খাল নামে পরিচিত, যেমন সুয়েজ খাল। যদিও নদী এবং খাল দুটি হ্রদ অথবা একটি হ্রদ এবং একটি সাগরকে সংযোগ করে, যা প্রণালীর সংজ্ঞার সাথে অনেকাংশেই মিলে যায়। কিন্তু প্রণালীর সাথে নদী এবং খালের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। প্রণালী সাধারণত অনেক বড় এবং বেশি সামুদ্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কিছু ব্যতিক্রমও আছে, যেখানে প্রণালীকে খাল নামে ডাকা হচ্ছে যেমন, পিয়ার্স খাল।
কিছু বিখ্যাত প্রণালী
জিব্রাল্টার প্রণালী (১৪.৩ কি.মি.): ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরকে সংযোজনকারী একমাত্র প্রাকৃতিক পথ
হরমুজ প্রণালী: পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরকে যুক্ত করেছে
মালাক্কা প্রণালী: মালয় উপদ্বীপ এবং সুমাত্রাকে পৃথক করেছে; যুক্ত করেছে ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরকে
ডোভার প্রণালী (৩৪ কি.মি.): ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে পৃথক করেছে এবং ইংলিশ চ্যানেলের মাধ্যমে উত্তর মহাসাগরের সাথে যুক্ত হয়েছে
ম্যাজেলান প্রণালী (২ কি.মি.): আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্ত করেছে এবং দক্ষিণ আমেরিকার মূল ভূখণ্ড থেকে তিয়ের্রা দেল ফুয়েগোকে পৃথক করেছে
বেরিং প্রণালী (৮৫ কি.মি.): উত্তর মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরকে যুক্ত করেছে; আলাস্কা ও সাইবেরিয়াকে পৃথক করেছে
পক প্রণালী: তামিলনাড়ু ও শ্রীলঙ্কাকে পৃথক করেছে। প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ
ডেনমার্ক প্রণালী: উত্তর মহাসাগরকে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে।
হাডসন প্রণালী: কানাডাতে অবস্থিত একটি সমুদ্রপ্রণালী যা পশ্চিমে হাডসন উপসাগর ও ফক্স বেসিনকে পূর্বে ল্যাব্রাডর সাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে।
ফ্লোরিডা প্রণালী:
বাব এল মান্দেব: লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরকে যুক্ত করেছে।
জিব্রাল্টার প্রণালী:
পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত প্রণালী বলা যায় জিব্রাল্টার প্রণালীকে। দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সাগরকে এক করার গুরুদায়িত্ব গ্রহন করেছে এই জিব্রাল্টার প্রণালী। এর পশ্চিমে রয়েছে আটলান্টিক মহাসাগর আর পূর্বে রয়েছে ভূমধ্যসাগর (Mediterranean Sea)। এছাড়া, এটির উত্তর দিকে রয়েছে স্পেন এবং রক অব জিব্রাল্টার আর দক্ষিণ দিকে রয়েছে মরক্কো এবং উত্তর আফ্রিকা। বিমান আবিষ্কারের আগে আটলান্টিক আর ভূমধ্যসাগরের মাঝে প্রায় সকল ব্যবসায়িক বেচাকেনা হতো এই প্রণালীর মাধ্যমে। বর্তমান সময়েও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য এই প্রণালীটি গুরুত্বপূর্ণ।
শুধু ব্যবসা নয়, ভিন্নধর্মী সব সংস্কৃতিকেও এক করেছে এই জিব্রাল্টার প্রণালী। উত্তর দিকে ইউরোপিয়ান ও খ্রিস্টান সংস্কৃতি বজায় রয়েছে, আর দক্ষিণে উত্তর আফ্রিকাতে রয়েছে মুসলিমদের আধিপত্য। এছাড়া, পাখিদের কাছেও জিব্রাল্টার প্রণালী খুব প্রিয় একটি স্থান। প্রতি বছর হাজারো প্রজাতির সামুদ্রিক পাখি ভূমধ্যসাগর থেকে আটলান্টিকে যেতে এই প্রণালী ব্যবহার করে। গ্রিক মিথলজিতে এই প্রণালীকে “হারকিউলিসের পিলার” নামেও অবিহিত করা হয়। এছাড়া, ইউরোপের খুব নিকটবর্তী হওয়ায় অবৈধ অভিবাসীরা আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যেতে এই পথ ব্যবহার করে থাকেন।
মালাক্কা প্রণালী:
৮০৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সরু মালাক্কা প্রণালী মালয় উপদ্বীপ এবং সুমাত্রার ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মাঝে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিপিং লেন। ভারত মহাসাগর আর প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী প্রধান শিপিং চ্যানেল এটি। এশিয়ার অর্থনীতির বিরাট একটি অংশ মালাক্কা প্রণালীর উপর নির্ভর করে। পৃথিবীর মোট রপ্তানি করা পণ্যের ৪ ভাগের ১ ভাগ এই প্রণালী দিয়েই গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে যায়। তবে এই সরু প্রণালীর পক্ষে এতো পণ্যের বোঝা বহন করা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। জলদস্যুদের হামলার আতঙ্ক তো আছেই, তার উপর জাহাজডুবির ঘটনাও এখানে নতুন কিছু নয়।
সরু প্রণালীতে বিশাল সব তেলবাহী জাহাজ ভিড় করায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। থাই সরকার তাই মালাক্কা প্রণালীর বিকল্প হিসাবে ইস্থুমাস অব ক্রা এর মাঝ দিয়ে খাল কেটে ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে নতুন একটি প্রণালী করার পরিকল্পনা করেছিল তবে সেটা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। মালাক্কা প্রণালীর উপকূলে অবস্থিত প্রধান বন্দরগুলির মধ্যে আছে মালয় উপদ্বীপের পেনাং, পোর্ট ক্লাং ও মালাক্কা, এবং সুমাত্রা দ্বীপের বেলাওয়ান বন্দর। সিঙ্গাপুর এই প্রণালীর দক্ষিণতম প্রান্তে অবস্থিত।
পক প্রণালী:
ভারতের তামিলনাড়ু থেকে শ্রীলংকার উত্তর প্রদেশের মান্নার ডিসট্রিক্ট পর্যন্ত বিস্তৃত পক প্রণালীটি ৪০-৮৫ মাইল প্রশস্ত। এটি বঙ্গোপসাগরকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে পক উপসাগরের সাথে এবং দক্ষিন-পশ্চিম দিক থেকে মান্নার উপসাগরের সাথে যুক্ত করেছে। পক প্রণালীর আশপাশ দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেলপথ ও ফেরি চলাচল করে। প্রণালীর অগভীর পানি ও প্রবালপ্রাচীরের জন্য বড় জাহাজ এখান দিয়ে সহজে চলাচল করতে পারে না, তবে ছোট ছোট নৌকা ও মাছ ধরার জাহাজ শতশত বছর ধরে এখান দিয়ে চলাচল করছে।
পৃথিবীর প্রণালীসমূহ,প্রণালী মনে রাখার কৌশল,প্রণালী মনে রাখার সহজ উপায়,প্রণালী কি,প্রণালী সমূহ,প্রণালী সমূহ মনে রাখার কৌশল,প্রণালী মানচিত্র,প্রণালী ম্যাপ,প্রণালী বিসিএস,bcs প্রণালী,বেরিং প্রণালী,মালাক্কা প্রণালী,পক প্রণালী,দার্দানেলিস প্রণালী,বাব এল মান্দেব,হরমুজ প্রণালী,মেসিনা প্রণালী,ইংলিশ চ্যানেল,ডোভার প্রণালী,ফ্লোরিডা প্রণালী,bcs,bcs preparation,প্রণালী মনে রাখার সহজ উপায়,pronali bcs shortcut,ইউরোপের প্রণালী,আমেরিকার প্রণালী,সাধারণ জ্ঞান
Информация по комментариям в разработке