হুজুর ও হুজুরের ভালোবাসার গল্প। Hujur O Hujurnir Valobashar Golpo. #youtube #foryou #trending #foryou
#iclamic #bangladesh #golpo
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে যে গল্পটি শেয়ার করব, তাহলো হুজুর ও হুজুরনীর ভালোবাসা। তো চলুন বেশি দেরি না করে ভিডিওটি শুরু করা যাক।
১. পরিচয়
হুজুরের নাম ছিল মাওলানা রাফি উল্লাহ। বয়স চল্লিশ ছুঁই ছুঁই, কিন্তু মুখে এমন প্রশান্তি, যেন শতবর্ষের ইবাদতের আলো তার চেহারায় নেমে এসেছে। গ্রামের মসজিদের খতিব, কিন্তু শুধু মিম্বারে নয়, মানুষের হৃদয়েও তিনি ইমাম হয়ে ছিলেন।
তার স্ত্রী – আয়েশা খাতুন – বয়সে তার চেয়ে প্রায় ১৫ বছর ছোট, সদ্য ত্রিশ পেরিয়েছে। আয়েশা ছিল অত্যন্ত ধার্মিক, নম্র আর মিষ্টি ভাষার অধিকারিণী। তাদের বিয়ে হয়েছিল প্রায় আট বছর আগে। ভালোবাসা? ছিল—কিন্তু সেটা চিঠি লেখা বা চোখে চোখ রেখে চাওয়া-পাওয়ার মতো প্রেম নয়, ছিল দোয়ার ভেতর লুকানো ভালোবাসা, ইবাদতের মাঝখানে হাত ধরা এক নীরব অনুরাগ।
২. ভালোবাসার শুরু
বিয়ের পর প্রথম কয়েক মাসে আয়েশা হুজুরের স্বভাব বুঝে ফেলেছিল। তিনি খুব কম কথা বলেন, কিন্তু প্রতিটি কথা ছিল ভারী অর্থবহ। একদিন বিকেলে আয়েশা এক কাপ চা নিয়ে হুজুরের সামনে বসল।
— “আপনার তো আমাকে সময় দেওয়ার সময় হয় না,” আয়েশা একটু অভিমান করে বলল।
হুজুর হেসে বললেন, “আমি সময় দেই, শুধু তুমি সেটা খেয়াল করো না।”
— “কোথায় দেন?” আয়েশার চোখে প্রশ্ন।
— “তোমার জন্য দোয়া করি। রাতে তাহাজ্জুদের সিজদায় আমি আল্লাহর কাছে বলি—‘হে আল্লাহ, আমার স্ত্রীকে জান্নাতের রানি করো।’ এটাই কি সময় দেওয়া নয়?”
আয়েশার চোখ ভিজে যায়। এমন ভালোবাসা যে মানুষ দোয়ার ভেতরে লুকিয়ে রাখে, সেটার চেয়ে পবিত্র ভালোবাসা আর কী হতে পারে?
৩. দাম্পত্য জীবনের ছোট ছোট রোমান্স
তারা কোনো দিন হাত ধরে বাজারে যায়নি, কিংবা একে অপরকে "আই লাভ ইউ" বলেনি। কিন্তু প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পর হুজুর বাড়ি ফিরে আয়েশার রান্না করা খিচুড়ি খেতেন, আর প্রশংসা করতেন, “আল্লাহ যেন তোমার রন্ধনশক্তিকে বরকত দেন।”
আয়েশা জানতো, তার স্বামী চা ভালোবাসেন। তাই প্রতিদিন বিকেলে আজান দেওয়ার আগে আয়েশা বারান্দায় এক কাপ চা নিয়ে দাঁড়াতো। হুজুর এসে চুপচাপ চা খেতেন, কখনো কিছু না বলেই, কিন্তু একবার বলেছিলেন—
— “এই চা না, বরং যিনি বানান, তার হাতে জান্নাতের ঘ্রাণ পাই।”
৪. পরীক্ষার সময়
এক বছর হুজুর খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। হাসপাতালে ভর্তি করতে হলো। আয়েশা সারা রাত বসে থাকতেন পাশে। এক রাতে হুজুর হালকা কাশির মাঝে ফিসফিস করে বললেন—
— “তুমি কি জানো, আয়েশা, আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি যেন তুমি আমার আগেই মারা যাও। আমি তোমার জানাযা পড়াতে চাই।”
— “এ কেমন দোয়া!” আয়েশা চোখে পানি নিয়ে বললেন।
— “কারণ তুমি জান্নাতি। আমি চাই, তোমার জানাযায় আমি কাঁদি আর আল্লাহর কাছে বলি, ‘হে আল্লাহ, আমার স্ত্রীকে ক্ষমা করো, তাকে জান্নাত দাও।’”
সেই রাতে আয়েশা অনেক কেঁদেছিল। সে বুঝেছিল, ভালোবাসা মানে একে অপরকে আগে মরতে বলা নয়—ভালোবাসা মানে, একে অপরের জন্য আগে জান্নাত চাওয়া।
৫. শেষ অধ্যায়
আজ ১৫ বছর কেটে গেছে। তাদের দুই ছেলে, এক মেয়ে। আয়েশা এখন বৃদ্ধা, হুজুর আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর আয়েশা কুরআন পড়ে হুজুরের রূহের মাগফিরাত চায়।
তার নাতিরা যখন জিজ্ঞাসা করে, “দাদু, দাদাজান কি আপনাকে ভালোবাসতেন?”
তিনি হেসে বলেন, “তোমরা আজকাল মোবাইল আর চ্যাটে ভালোবাসা খোঁজো। তোমার দাদাজান আমার জন্য আল্লাহর কাছে জান্নাত চেয়েছিলেন। এত বড় ভালোবাসা আর কোথায়?”
শেষ কথা:
ভালোবাসা শুধু শব্দে নয়, বরং কাজে, দোয়ায়, চাহনিতে আর সম্মানে প্রকাশ পায়। হুজুর ও আয়েশার ভালোবাসা আমাদের শেখায়—যে ভালোবাসা আল্লাহকে কেন্দ্র করে, তা কোনো দিন ফুরোয় না।
Информация по комментариям в разработке