#anzinfo360, #মসজিদের প্রতি সম্মান, #মিজানুর রহমান আজহারী,
মসজিদের প্রতি সম্মান একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, মিজানুর রহমান আজহারী ।
মসজিদের বিধানাবলী :
মসজিদের অনেক আদাব ও বিধান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হল।
১. কারুকার্য বাদ দিয়ে বিল্ডিং সুন্দর বানানো, কেননা কারুকার্য করা একটি বিদ্আত কাজ। এতে নামাজীর মনোযোগ নষ্ট হয় এবং মসজিদ নির্মাণ নিয়ে সমাজে অহংকারমূলক প্রতিযোগিতার প্রবণতা ছড়িয়ে পড়ে। ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমাকে মসজিদ সাজাতে নির্দেশ দেয়া হয়নি। ইবনে আব্বাস আরো বলেন, তারা অবশ্যই মসজিদসমূহ সাজাবে, যেমন ইহুদী ও খৃষ্টানরা করেছে।
ইমাম বোখারী রা. বলেন, উমার রা. মসজিদ বানাতে নির্দেশ দিলেন এবং বলেলেন, আমি মানুষকে বৃষ্টি থেকে হিফাজত করছি। সাবধান! লাল ও হলুদ রং করবে না। মানুষ ধোঁকায় পড়ে যাবে। আনাস রা. বলেন, মসজিদ বানানোর ব্যাপারে মানুষ প্রতিযোগিতা করবে, কিন্তু খুব কম লোকই মসজিদ আবাদ করবে।
২.কবরস্থানে মসজিদ তৈরি করা কিংবা মসজিদে কবর বানানো হারাম। কেননা কবরের তাযীম-সম্মান এমনকি ইবাদত শিরককর্মে নিপতিত হওয়ার মাধ্যম বনে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আল্লাহ তাআ’লার অভিশাপ ইহুদি ও খৃষ্টানদের উপর তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদে পরিণত করেছে। [ বুখারী ও মুসলিম ]
জুন্দুব রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পূর্বে পাঁচটি অসিয়ত শুনেছেন, তন্মধ্যে একটি হল কবরকে মসজিদে রূপান্তরিত করা বিষয়ে হুঁশিয়ারি। বর্ণনায় এসেছে –
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন তোমাদের পূর্ববর্তীরা নবী ও সৎ লোকদের কবরকে মসজিদ বানাতো। সাবধান! তোমরা কবরকে মসজিদ বানিও না। আমি তোমাদেরকে এ থেকে নিষেধ করছি। কবরস্থানে জানাজার সালাত ব্যতীত অন্য কোন সালাত বৈধ নয়। [ মুসলিম]
৩. মসজিদ সর্বদা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মসজিদ অপবিত্র করা বা কষ্টদায়ক জিনিস সেখানে রাখা হারাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন – মসজিদে থুতু ফেলা অন্যায়, তার প্রতিকার হলো মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়া। [ নাসায়ী : হাদীস নং ৭১৫]
যেখানে মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া সম্ভব নয়, সেখান থেকে দূর করে ফেলা। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম এ-রূপই করেতন ।
৪.মসজিদে ধীরে-সুস্থে ও শান্তভাবে যাওয়া। তাড়াতাড়ি বা দৌড়িয়ে না যাওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
যখন তোমরা সালাতে আসবে অবশ্যই ধীরস্থিরতা বজায় রাখবে । যে-টুকু পাবে আদায় করবে। আর যে-টুকু পাবেনা তা পূর্ণ করবে। [বুখারী : হাদীস নং ৫৯৯]
৫.মসজিদে প্রবেশ করতে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করবে। বের হবে বাম পা দিয়ে। আনাস রা. বলেন : সন্নত হল যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, ডান পা দিয়ে প্রবেশ করবে। আর যখন বের হবে বাম পা দিয়ে বের হবে।
প্রবেশের এবং বের হবার দোয়া পড়বে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:
৬. মসজিদে আগে যাওয়া এবং প্রথম কাতারে সালাত আদায়ের প্রতি আগ্রহী থাকা- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করে বলেছেন : যদি মানুষ জানতে পারত, আযান এবং প্রথম কাতারে সালাত আদায়ের মধ্যে কি ফজিলত, আর তা লটারি ব্যতীত অর্জন করা সম্ভব না হত, তবে তার জন্য লোকেরা অবশ্যই লটারি করত। আর যদি জানতে পারত মসজিদে আগে আসার মধ্যে কি ফযীলত, তাহলে তার জন্য প্রতিযোগিতা করে আসত। [বুখারী : হাদীস নং ৬১৫] আর যিনি মসজিদে আগে আসবেন, কোনো কারণ ছাড়া তার প্রথম কাতার বাদ দেয়া উচিত নয়। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ রা. বলেন,
যে ব্যক্তি আগে আসল এবং প্রথম কাতার বাদ দিয়ে বসল, সে শরীয়তের বিধান লঙ্ঘন করল।
সালাতে দেরি করে আসার দ্বারা বড় কল্যাণ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :তোমরা আগে এসো এবং আমার একতেদা করো। আর তোমাদের পরে যারা আসবে তারা তোমাদের পিছনে দাঁড়াবে। যেসব মানুষেরা দেরি করতে থাকবে আল্লাহ্ তাদেরকে পিছিয়ে দিবেন। [মুসলিম : হাদীস নং ৬৬২]
৭. মসজিদে প্রবেশকারী দুই রাকাআত তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আদায় ব্যতীত বসবে না।আবু কাতাদাহ আনসারী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : তোমাদের মধ্যে কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, দুই রাকাত সালাত আদায় না করে সে-যেন না বসে। [মুসলিম : হাদীস নং ১০৯৭]
ইমাম জুমুআর খুৎবা দেয়া অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করলে সংক্ষেপে দুই রাকাত সালাত আদায় করবে। যাবের রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে আর ইমাম খুৎবাবস্থায় থাকবেন, তাহলেও যেন দুই রাকাআত সালাত সংক্ষেপে আদায় করে নেয়।
৮. মুক্তাদী সর্বদা ইমামের অনুসরণ করবে। কোনো কার্য ইমামের আগে অথবা একেবারে সাথে সাথে আদায় করবে না। আবার অনেক বিলম্বেও আদায় করবে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : ইমাম বানানো হয়েছে তার অনুসরণের জন্য। অতঃপর তোমরা তার সাথে বিরোধ করো না। সে যখন আল্লাহু আকবার বলে তোমরাও আল্লাহু আকবার বলো। সে যখন রুকু করে, তোমরাও রুকুতে যাও । সে যখন সেজদা করে, তোমরাও তখন সেজদা করো। যখন বসে সালাত আদায় করে, তোমরাও সকলে বসে সালাত আদায় কর) [বুখারী : হাদীস নং ৩৬৫] ইমামের পূর্বে কোন কাজ করা হারাম হওয়া সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
সে ব্যক্তি তার মাথা ইমামের পূর্বে উঠিয়ে ফেলে তার কি এ-ভয় নেই যে আল্লাহ তাআ’লা তার মাথাকে গাধার মাথা বানিয়ে দিবেন কিংবা তার আকৃতিকে গাধার আকৃতি বানিয়ে দিবেন। [মুসলিম : হাদীস নং ৬৪৭]
Collected: http://imam.gov.bd/singlepost/4943,
► সুন্দর এই ভিডিওটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিন।
►ভিডিওতে লাইক দিন এবং কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান।
Информация по комментариям в разработке