Hingshay Unmatto Prithwi - Debabrata Biswas (Solo Live Recording)

Описание к видео Hingshay Unmatto Prithwi - Debabrata Biswas (Solo Live Recording)

হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী – দেবব্রত বিশ্বাস
ভেবেছিলাম পয়লা বৈশাখে এবারের আপলোডটা করব। সেইমতই এগোচ্ছিলাম ‘বসন্ত-বিদায়’ এবং ‘বৈশাখের আগমন’ উপলক্ষ করে দেবব্রত বিশ্বাসের কণ্ঠে একটা গানের রতনহার সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু বছরের শুরুটা যে ভাবে হল, তাতে শান্তিকামী যে কোনো মানুষই যে চিন্তান্বিত হবেন, সন্দেহ নেই। আপনারা সকলেই জানেন বিশ্ব জুড়ে যে যুদ্ধ যুদ্ধ রব উঠেছে তার খবর। গত সপ্তাহে প্রথমে ইরান আক্রমণ করে ইজরায়েল কে এবং পরবর্তীতে ইজরায়েল আক্রমণ করে ইরান কে। বিগত বছরে গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যে অশান্ত বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে প্যালেস্টাইন-ইজরায়েল সংঘাত কেন্দ্র করে, তা শান্ত হওয়ার আগেই শুরু হয়ে গেছে ইজরায়েল ইরানের যুদ্ধ। যত দিন যাচ্ছে জড়িয়ে পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলিও – সিরিয়া, ইরাক লেবানন ইত্যাদি। ওদিকে ২০২২ থেকে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে অসম লড়াই আজও জারি আছে। নিজের দেশের মধ্যে যখন তাকাই, নির্বাচন ঘিরে সংঘর্ষ – মানুষে মানুষে নির্মম হানাহানি, দমন-পীড়ন, একে অপরের প্রতি কুৎসিত আচরণ - মনকে পীড়া দেয়।

তাই পয়লা বৈশাখে, অশান্ত হৃদয়ে, আমার আপলোড করা হল না। বারে বারে একটা কথাই মনে হচ্ছে, মানুষের পক্ষে মনুষ্যত্ব ত্যাগ করে পশুত্ব বরণ করে নেওয়া যতটা সহজ, তার উল্টোটা ততটাই শক্ত। রবীন্দ্রনাথ প্রশ্ন করেছেন – ‘কেন এ হিংসা দ্বেষ, কেন এ ছদ্মবেশ, কেন এ মান অভিমান?’ কে দেবে এর উত্তর? আমার এই আপলোড যে সামান্য ক’জন মানুষ দেখেন, এবং যারা রবীন্দ্রনাথের ভাবকে আশ্রয় করে জীবনযাপন করেন, তারা ব্যতিরেকে রবীন্দ্রনাথের বাণী কজনের হৃদয়কে স্পর্শ করে জানি না। আজ কবি বেঁচে থাকলে হয়তো হতাশ হয়ে বলতেন – ‘কেহ শোনে না গান, জাগে না প্রাণ, বিফলে গীত অবসান’। হয়তো প্রার্থনায় বসতেন সেই বৃদ্ধ ঋজু কবি – বলতেন, ‘অন্ধজনে দেহ আলো, মৃতজনে দেহ প্রাণ’।

আমার মনে একটি প্রশ্নই বারবার তোলপাড় করে – কে দেবে সেই ঐশ্বরিক আলো? কে দেবে প্রাণ? কে থামাবে বিশ্বজোড়া এই অস্থিরতা? হিংসায় উন্মত্ত সারা পৃথিবী। এই পৃথিবীর বুকে আবারও আসবেন কি কোনো মহামানব, শান্তির বাণী নিয়ে? এ প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। শুধু আছে অনন্ত শবরীর অপেক্ষা।

তাই এবারের আপলোড জর্জদার কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের গান - হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী, নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্ব; ঘোর কুটিল পন্থ তার, লোভজটিল বন্ধ। এই গানটি মূলত ৫ই মার্চ, ১৯২৭ সনে, কবির ৬৫ বছর বয়সে গৌতম বুদ্ধ-র জন্মোৎসব উপলক্ষে শান্তিনিকেতনে রচিত তিন স্তবকের কবিতা যা ‘প্রবাসী’তে প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রজন্মোৎসব উপলক্ষে জোড়াসাঁকোয় ‘নটীর পূজা’ অভিনয়কালে রচনাটি ভিক্ষুদের গান হিসাবে সংযোজিত হয়। গীতবিতানের পূজা পর্যায়ের এই গানটির স্বরলিপিকার ছিলেন দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

১৯৪০-এ দেবব্রত বিশ্বাস তাঁর বৌদি কনক দাস (বিশ্বাস)-এর সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে সর্বপ্রথম যে দুটি গান রেকর্ড করেন, সে দুটি হল – ‘সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান’ এবং ‘হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী’। তৎকালীন 78 RPM গ্রামোফোন রেকর্ডে His Masters Voice থেকে এই রেকর্ড প্রকাশিত হয়। (Record Number – P11866 HMV)। দেবব্রত বিশ্বাসের যাত্রা শুরু যে দ্বৈতসঙ্গীত দিয়ে, সেই গানই একক কণ্ঠে তাঁর দীপ্ত, ঐশ্বরিক কণ্ঠে আপনাদের দরবারে পরিবেশিত হল এই অস্থির সময়ের দ্যোতক হিসাবে।

সকলে ভালো থাকবেন…
নমস্কারান্তে,
জয়ন্তানুজ ঘোষ
২২শে এপ্রিল, ২০২৪

Комментарии

Информация по комментариям в разработке