Скачать или смотреть লাউ গাছের বাম্পার ফলন । লাউ শাকের উপকারিতা

লাউ গাছ এমন একটি সবজি, যার ফল (লাউ) এবং কচি ডগা-পাতা (শাক) উভয়ই খাওয়া হয়। সঠিক চাষ পদ্ধতি ও পরিচর্যা নিশ্চিত করলে লাউ এবং শাক—উভয়েরই ফলন বৃদ্ধি করা সম্ভব।


| |লাউ শাকের চাষ পদ্ধতি বিস্তারিত |
|---|---|
| ১. সময় ও মাটি | সময়: লাউ প্রায় সারা বছর চাষ করা গেলেও শীতকালে ফলন বেশি হয়। সাধারণত আগস্ট-অক্টোবর (শীতকালীন) ও ফেব্রুয়ারি-মে (গ্রীষ্মকালীন)।
মাটি: জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো-আঁশ বা এঁটেল দো-আঁশ মাটি উত্তম। পানি নিষ্কাশনের সুবিধা থাকতে হবে। |
| ২. জমি তৈরি ও মাদা | জমি ৩-৪ বার চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করতে হবে। লাউয়ের জন্য মাদা তৈরি করা ভালো (ব্যাস ও গভীরতা প্রায় ৫০-৫৫ সেমি)। প্রতি মাদার কেন্দ্রে ২-৩টি বীজ বা চারা রোপণ করতে হবে। |
| ৩. বীজ বপন ও চারা | বীজ শোধন: বীজ বপনের আগে ১৫-২০ ঘণ্টা পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
চারা তৈরি: সরাসরি বীজ বপনের চেয়ে পলিব্যাগে চারা তৈরি করে (১৬-১৭ দিন বয়সে) রোপণ করলে ফলন ভালো হয়। |
| ৪. সার প্রয়োগ | জমি তৈরির সময় এবং চারা রোপণের পর নিয়মিত উপরি প্রয়োগ হিসেবে ইউরিয়া (ইউরিয়া সার শাক ও গাছের দ্রুত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে), টিএসপি, এমওপি ও জৈব সার (গোবর/কম্পোস্ট) প্রয়োগ করতে হবে। |
| ৫. মাচা তৈরি | মাচায় চাষ করলে ফলন সবচেয়ে বেশি হয়। গাছ ১৫-২০ সেমি লম্বা হলে মাচা তৈরি করে দিতে হবে। মাটিতে চাষ করলে ফল পচে যাওয়া বা বাজারমূল্য কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। |
ফলন বৃদ্ধির বিশেষ কৌশল (শাক ও লাউ)
লাউ গাছের সঠিক পরিচর্যা এবং কিছু বিশেষ কৌশল অবলম্বন করলে শাক ও লাউয়ের ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।

শাকের ফলন বৃদ্ধির কৌশল

ইউরিয়া সার ব্যবহার: গাছের দ্রুত ডগা ও পাতা বৃদ্ধির জন্য অর্থাৎ শাকের ফলন বাড়ানোর জন্য নিয়মিত ইউরিয়া সার প্রয়োগ করুন।
নিয়মিত ডগা সংগ্রহ: গাছের কচি ডগা ও পাতা ঘন ঘন সংগ্রহ করলে গাছটি আরও বেশি শাখা-প্রশাখা ছাড়তে উৎসাহিত হয়, ফলে শাকের উৎপাদন বাড়ে।
আগাছা নিয়ন্ত্রণ: গাছের গোড়ায় আগাছা জমতে দেবেন না, এতে গাছের খাদ্য ও রস শাকের উৎপাদনে সঠিকভাবে পৌঁছাবে।

লাউয়ের ফলন বৃদ্ধির কৌশল

১. শোষক শাখা অপসারণ (কাটিং):
গাছের গোড়ার দিকে (মাটি থেকে প্রায় ৪০-৪৫ সেমি পর্যন্ত) যে ছোট ছোট ডালপালা বা শোষক শাখা জন্মায়, সেগুলোকে ধারালো ব্লেড বা ছুরি দিয়ে কেটে অপসারণ করতে হবে।
এগুলো গাছের যথাযথ শারীরিক বৃদ্ধিতে বাধা দেয় ও খাদ্য উপাদান শোষণ করে নেয়। এই কাটিং পদ্ধতি প্রধান শাখায় পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করে এবং পরবর্তী শাখাগুলোতে (যা থেকে স্ত্রী ফুল বেশি হয়) ফলন বাড়ায়।
২. কৃত্রিম পরাগায়ন (Hand Pollination):
প্রাকৃতিক পরাগায়ন কম হলে লাউয়ের ফলন কমে যায়। ফলন প্রায় ৩০-৩৫% পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য কৃত্রিম পরাগায়ন করতে পারেন।
পদ্ধতি: ফুল ফোটার দিন সন্ধ্যায় বা পরদিন ভোরে পুরুষ ফুল ছিঁড়ে পাপড়ি ফেলে দিন। এরপর পুরুষ ফুলের পরাগধানী (পরাগরেণুযুক্ত অংশ) সদ্য ফোটা স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে আলতো করে ঘষে দিন।
৩. সঠিক সময়ে ফল সংগ্রহ:
লাউ যখন কচি ও খাওয়ার উপযুক্ত হয় (ফলের গায়ে প্রচুর শুঁয়ো বা লোম থাকবে এবং নখ দিয়ে চাপ দিলে সহজে ডেবে যাবে), তখন দ্রুত সংগ্রহ করতে হবে।
গাছে লাউ যত বেশি থাকবে, নতুন ফল ধারণ তত কম হবে। তাই নিয়মিত ফল সংগ্রহ করলে লাউয়ের ফলন বাড়ে।
৪. ভিটামিন ও সার স্প্রে:
৩০ দিন বয়স থেকে গাছে স্ত্রী ফুল আসা বাড়ানোর জন্য জৈব সার, গোবর সারের পাশাপাশি অনুমোদিত ফসফেট ও পটাশিয়াম জাতীয় সার এবং কিছু ভিটামিন (যেমন: ক্রপ প্লাস) বা অনুমোদিত প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটর (PGR) ব্যবহার করা যায়। এটি গাছের ফুল ও ফল ঝরে যাওয়া কমায়।
৫. সেচ:
শুষ্ক মৌসুমে ৫-৭ দিন অন্তর সেচ নিশ্চিত করতে হবে। পানির অভাবে ফলন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং লাউয়ের গুটি ঝরে যায়।