স্ত্রীর যৌন চাহিদা পূরণে অক্ষম হলে করণীয় কি ???
====================================
এক ভাই প্রশ্নটি অনেকদিন যাবত ধরে করে আসছেন যে, শাইখ ! আমি আমার স্ত্রীর শারিরিক চাহিদা পুরো করতে পারিনা । সহবাসে দুর্বল । এখন কি করতে পারি আমাকে ও আমার স্ত্রীকে কিছু পরামর্শ দিন । উল্লেখ্য যে, আমার স্ত্রী গুনাহ-তে লিপ্ত হওয়ার আশংকা করেন, তাই সে আমার সাথে বর্তমানে সংসার করতে অনিচ্ছুক ।
.
উত্তর : প্রিয় ভাই ! আমি আপনাকে ও আপনার স্ত্রীকে কিছু কথা বলবো । আশা করি, আপনি আমার উত্তর-টি আপনার স্ত্রীকেও পড়ে শুনাবেন ।
প্রথমত,
আপনার উদ্দেশ্যে বলব - স্বামী স্ত্রীর চাহিদা পূরণ করাও সদাচারণের অন্তর্ভুক্ত । এটা স্ত্রী হিসেবে তার অধিকার । এই অধিকার পূরণ করা সক্ষম স্বামীর ওপর ওয়াজিব । কেননা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেছেন,
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ
‘আর তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচারণ কর ।
---- [ সূরা নিসা , আয়াত : ১৯ ]
আল মাউসুয়া’তুল ফিকহিয়্যা (৩০/১২৭)-তে এসেছে,
من حقّ الزّوجة على زوجها أن يقوم بإعفافها ، وذلك بأن يطأها ، وقد ذهب جمهور الفقهاء – الحنفيّة والمالكيّة والحنابلة – إلى أنّه يجب على الزّوج أن يطأ زوجته
‘স্বামীর ওপর স্ত্রীর অধিকারের মধ্যে অন্যতম হল, স্বামী স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমের মাধ্যমে তার পবিত্র জীবন যাপনের প্রতি যত্নশীল হবে । হানাফি, মালেকি ও হাম্বলী মাযহাবের অধিকাংশ ফক্বহী-র মতে স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া স্বামীর জন্য ওয়াজিব ।’
সঙ্গম কত দিন পর হতে হবে–এব্যাপারে ফক্বীহগণের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে । শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
يجب على الرجل أن يطأ زوجته بالمعروف ، وهو من أوكد حقها عليه ، أعظم من إطعامها ، والوطء الواجب قيل : إنه واجب في كل أربعة أشهر مرة ، وقيل : بقدر حاجتها وقدرته ، كما يطعمها بقدر حاجتها وقدرته ، وهذا أصح القولين
‘স্ত্রীর সঙ্গে ভালোভাবে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া ওয়াজিব । এটা স্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ অধিকার এবং ভরণপোষণের অন্যতম অংশ । কেউ কেউ বলেছেন, চার মাসে একবার ওয়াজিব । কারো কারো মতে এক্ষেত্রে ভরণপোষণের অন্যান্য বিষয়ের মত স্ত্রীর প্রয়োজন ও স্বামীর সক্ষমতাই মূল বিবেচ্য বিষয় । আর এটাই বিশুদ্ধ মত ।’
[ মাজমুউ ফাতাওয়া : ৩২/২৭১ ]
দ্বিতীয়ত,
আপনার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলব - প্রিয় বোন ! আপনার স্বামী আপনার এই অধিকার আদায়ে অক্ষম তার শারীরিক কিংবা মানসিক সমস্যার কারণে; যেমনটি আপনার স্বামীর কথা থেকে বুঝা যাচ্ছে । এক্ষেত্রে আপনার প্রতি আমাদের সুধারণা হল এই যে, একজন নেককার স্ত্রী হিসেবে তার এই পরিস্থিতিতে আপনি তার সঙ্গ দিবেন । তাকে যেকোনো ভাবে চিকিৎসকের শরণাপন্ন করবেন । দোয়া ও নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবেন ।
আর যদি তার এই অক্ষমতা অনীহা কিংবা আপনার প্রতি আগ্রহ অনুভব না করার কারণে হয় তাহলে তার জন্য সাজসজ্জা করে, তার সঙ্গে ভালোবাসাপূর্ণ নিত্যনতুন রোমান্টিক আচরণ করে তাকে আপনার প্রতি আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করতে পারেন ।
হতে পারে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা এর মাধ্যমে আপনাকে সফল করবেন । যদি আল্লাহর রহমত সঙ্গী হয় তাহলে হতে পারে আপনি তাকে মানসিক শান্তি দিলে তিনি আপনাকে মানসিক শান্তি দিবেন, শারীরিক সুখও দিবেন ।
জ্ঞাতব্য যে, মানবিক এই চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে সৃষ্টিগতভাবেই ব্যবধান আছে । নারী তার ঋতুকালীন সময় ও একান্ত অসুস্থতা ছাড়া স্বামীর চাহিদা যেকোন সময়ে পূরণ করতে পারে ।
এ ক্ষেত্রে তার উত্তেজনা থাকা জরুরি নয় । পক্ষান্তরে পুরুষ তা পারে না । পুরুষ তার স্ত্রীর এই চাহিদা পূরণ করতে হলে উত্তেজনা ও সক্ষমতার প্রয়োজন হয় । আগ্রহের দরকার হয় । এজন্য হাদিসে সঙ্গম অস্বীকারকারী স্ত্রীর ব্যাপারে ‘ধমক’ এসেছে । পক্ষান্তরে স্বামীর ব্যাপারে তা আসে নি ।
কেননা, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার নীতি হল,
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا
‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না ।’ ------ [ সূরা বাকারা, আয়াত : ২৮৬ ]
তৃতীয়ত,
আপনি [ প্রশ্নকারী ] বলেছেন, আপনার স্ত্রীর গুনাহ-তে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে । এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর প্রতি আমাদের উপদেশ হল, আল্লাহকে ভয় করুন ।
মহান আল্লাহ বলেছেন,
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না । নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ ।
---- [ সুরা বনী-ইসরাঈল, আয়াত :৩২ ]
সর্বশেষ কথা হচ্ছে :
যদি ডাক্তারের চিকিৎসা ও আপনার অভিজ্ঞতায় বলে যে, আপনার স্বামী আপনার যৌন চাহিদা পুরণে এক্কেবারে অক্ষম তাহলে তখন আপনার জন্য "খোলা" নেওয়া জায়েজ রয়েছে, এবং আপনি চাইলে সেটি করতে পারেন ।
তবে আমরা আপনার প্রতি এই সুধারণা রাখব যে, আপনি প্রাথমিক অবস্থায় এমনটি করবেন না । বরং আপনি আপনার স্বামীকে সুস্থ করে তোলার ব্যাপারে সচেষ্ট হবেন ।
তিনি যখন অসুস্থ; আপনাকে তো একটু কষ্ট করতে হবে, ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে । সর্বোপরি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে
জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أكثر من يموت من أمتي بعد قضاء الله وقدره بالعين
অর্থঃ আমার উম্মতের মধ্যে তাকদীরের মৃত্যুর পর সর্বাধিক মৃত্যু বদ নজর লাগার দ্বারা হবে। (মুসনাদে বাযযার)
সুন্নতি শিফা, sunnatisifa, SunnatiSifa, বদ নজর ও জিন, জাদুর সমস্যা ,magic,#বদনজর ও #জিন, #জাদুর #সুন্নতিশিফা
#স্বামীস্ত্রীমিলমহব্বত
#জ্বীনযাদু
#বদনজর
Информация по комментариям в разработке