Скачать или смотреть শ্রীমদ্ভাগবতম প্রথম স্কন্ধ তৃতীয় অধ্যায় শ্লোক ২১ থেকে ২৫। প্রবক্তা : উত্তমস্বরূপ নিতাই দাস।।

শ্রীমদ্ভাগবতম প্রথম স্কন্ধ তৃতীয় অধ্যায়: শ্লোক ২১-২৫ এর বর্ণনা

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার প্রথম স্কন্ধের তৃতীয় অধ্যায়ে ভগবানের বিভিন্ন অবতারের বর্ণনা করা হয়েছে। ২১ থেকে ২৫ নং শ্লোকগুলিতে বিশেষভাবে পৃথিবী এবং অন্যান্য লোকে ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য ভগবানের বিভিন্ন রূপ ধারণের মহিমা তুলে ধরা হয়েছে।

শ্লোক ২১

বর্ণনা: এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যখন এই পৃথিবীতে অধর্ম বৃদ্ধি পায় এবং ধর্ম বিলুপ্তির পথে চলে যায়, তখন ভগবান শ্রীহরি ধর্ম সংস্থাপনের জন্য এবং সাধুদের পরিত্রাণের জন্য স্বয়ং আবির্ভূত হন। তিনি মৎস্য, কূর্ম, বরাহ ইত্যাদি বিভিন্ন রূপে অবতীর্ণ হয়ে জগতকে রক্ষা করেন। এটি ভগবানের পরম করুণা ও জগতের প্রতি তাঁর ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

শ্লোক ২২

বর্ণনা: এই শ্লোকে নৃসিংহ অবতারের কথা বলা হয়েছে। যখন হিরণ্যকশিপু নামক অসুর নিজের তপস্যার প্রভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল এবং দেব-দানব, মানুষ - কেউই তাকে বধ করতে পারছিল না, তখন ভগবান নৃসিংহদেব রূপে আবির্ভূত হয়ে তাকে বধ করেন। নৃসিংহদেব অর্ধ-মানব এবং অর্ধ-সিংহ রূপ ধারণ করেছিলেন, যা ব্রহ্মার বরকে লঙ্ঘন না করেই হিরণ্যকশিপুকে বধ করার জন্য উপযুক্ত ছিল। এই অবতার দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

শ্লোক ২৩

বর্ণনা: এই শ্লোকে বামন অবতারের কথা বলা হয়েছে। যখন বলি মহারাজ অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ত্রিলোক জয় করে নিয়েছিলেন এবং স্বর্গের দেবতাদের অধিকার হরণ করেছিলেন, তখন ভগবান বামন রূপ ধারণ করে এক বামন ব্রাহ্মণের বেশে তাঁর কাছে উপস্থিত হন। বামনদেব বলির কাছে তিন পাদ ভূমি ভিক্ষা করেন। বলি মহারাজ হাসতে হাসতে এই সামান্য প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। কিন্তু বামনদেব বিশ্বরূপ ধারণ করে এক পদে সমস্ত পৃথিবী, দ্বিতীয় পদে সমস্ত অন্তরিক্ষ ব্যাপ্ত করে ফেলেন। তৃতীয় পদের জন্য যখন আর স্থান রইল না, তখন বলি মহারাজ নিজের মস্তক নিবেদন করেন। এই অবতারের মাধ্যমে ভগবান দেখিয়েছেন যে, অহংকার বিনাশের কারণ এবং প্রকৃত দান মহিমান্বিত হয়।

শ্লোক ২৪

বর্ণনা: এই শ্লোকে ভগবান পরশুরামের অবতারের কথা বলা হয়েছে। যখন পৃথিবীতে ক্ষত্রিয় রাজারা অত্যন্ত স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিলেন এবং ধর্মের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে প্রজাদের উপর অত্যাচার শুরু করেছিলেন, তখন ভগবান পরশুরাম রূপে আবির্ভূত হন। তিনি একুশবার পৃথিবী নিঃক্ষত্রিয় করেছিলেন এবং ক্ষত্রিয়দের দর্প চূর্ণ করেছিলেন। এই অবতারের উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীতে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করা এবং অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের দমন করা।

শ্লোক ২৫

বর্ণনা: এই শ্লোকে ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের অবতারের কথা বলা হয়েছে। যখন রাবণ নামক অসুর ত্রিলোক জুড়ে নিজের অত্যাচার বিস্তার করেছিল এবং সাধু-সজ্জনদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল, তখন ভগবান শ্রীরাম রূপে অযোধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সীতার বিবাহ করেন, চোদ্দ বছর বনবাস করেন এবং অবশেষে রাবণকে বধ করে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। শ্রীরামচন্দ্র হলেন ধর্ম, সত্য এবং ন্যায়ের প্রতীক। তাঁর জীবন আদর্শ মানবজীবনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

গুরুত্বপূর্ণ হ্যাশট্যাগ

#শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা

#ভাগবতপুরাণ

#ভগবানেরঅবতার

#মৎস্যঅবতার

#নৃসিংহঅবতার

#বামনঅবতার

#পরশুরামঅবতার

#শ্রীরামঅবতার

#সনাতনধর্ম

#ধর্মসংস্থাপন

#আধ্যাত্মিকজ্ঞান