"যদি আপনি সামনের জনের ওপর আর্থিক দিক থেকে নির্ভর করে থাকেন, তবে তার পরিবর্তে আপনাকেও সেই মানুষটির সমস্ত চাহিদাও পূরণ করে যেতে হবে, এই সম্ভাবনা থাকবে। কারণ এটাই জগতের নিয়ম ... আদান-প্রদান, অর্থাৎ সে আপনায় আর্থিক আশ্রয় দিচ্ছে, বদলে সে আপনার কাছ থেকে কিছু নেবে। সেই চাহিদা হতে পারে তার অপ্রয়োজনীয় কাজ করানো, তার অশ্লীল বা অনৈতিক ইচ্ছা পূরণ, তার অর্ডার শুনে চলা, জোর করে সকলের সেবা করে চলা, সর্বদাই তার অনুমতি নিয়ে চলা, কার সঙ্গে কথা বলবেন, কার সঙ্গে নয়, তাও সে ঠিক করবে, মনের মধ্যে সবসময়ই এক অজানা ভয় দানা বেঁধে থাকবে, যদি সেই সম্পর্কে থাকার কোন অর্থ নাও থাকে, তবুও থাকতে হবে, আপনায় এইসব সহ্য করেই যেতে হবে আজীবন।
এই সমস্ত সমস্যার সমাধান হল ঠিক এর উল্টো, অর্থাৎ সামনের জনের ওপর আর্থিক দিক থেকে নির্ভর করে না থাকা। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব রোজগার শুরু করুন, তাতে বাধা আসুক বা না আসুক, এবং কমপক্ষে অন্ততঃ নিজের খাওয়া-পরা-থাকার দায়িত্ব নিন। ব্যস্। এই কাজই সমস্ত সমস্যার সমাধান এনে দেবে। এখন আপনি স্বেচ্ছায় কাজ করবেন, যেটা ঠিক সেটাই করবেন, যার সঙ্গে কথা বলা উচিত, বলবেন, যেখানে যাওয়া প্রয়োজন, কারোর অনুমতি না নিয়েই যাবেন, পরামর্শ নিতে পারেন প্রয়োজন হলে, কিন্তু অনুমতি নয়, সম্পর্কে প্রাণ থাকলে তাতে থাকবেন, সম্পর্কে সম্মান, যত্ন ও বিশ্বাস না থাকলে, তাতে থাকবেন না, কারোর সেবা করার প্রয়োজন ও করুণার ভাব ভেতর থেকে এলেই তবে করবেন, নচেৎ কারোর কথা পালন করার জন্য জোর করে সেবা নয়, কারণ সেবা ও করুণার ভাব সর্বদাই ভেতর থেকে আসা চায়, তবেই তা 'সেবা', বাইরের কারোর কথায় জোর করে তা করতে হলে, তা সেবা নয়, তা 'বোঝা'। সুতরাং এখন আপনি যা-ই করবেন, স্বাধীনভাবে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েই নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী করবেন।
শুধুমাত্র আর্থিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হলেই একজন মানুষ জীবনের সমস্ত প্রয়োজন মেটাতে পারে। বাকি সবদিক থেকে নিজের ও সবার জন্য যেটা ঠিক, তা ঠিকভাবে করে যেতে পারলেই জীবনকে অনেক উচ্চস্তরে নিয়ে যাওয়া যায়।
১০০ বছর পরাধীনতায় বাঁচার চাইতে ১ বছর স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার মূল্য বেশি।"
সুমন আচার্য্য।
Информация по комментариям в разработке