Скачать или смотреть আমি দেখি- শক্তি চট্টো.

বিশ্লেষণধর্মী বা বর্ণনাধর্মী উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নাবলী-
প্রতিটি প্রশ্নের মান 5 ।
কমবেশি 150 টি শব্দে উত্তর দাও।

1) "আমার দরকার শুধু গাছ দেখা।" - বক্তা কে ?
তার গাছ দেখা দরকার কেন? 1+4 =5
( উচ্চ মাধ্যমিক 2016)
উত্তর : কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের 'আমি দেখি' কবিতায় আলোচ্য উক্তিটির বক্তা কবি স্বয়ং।
নগর জীবনের বিস্তৃতির সাথে সাথে সবুজ ধ্বংস হয় অকাতরে। সেই সবুজ হারিয়ে শহর হয়ে ওঠে ইঁট, কাঠ, পাথর আর কংক্রিটের জঙ্গল - জড় নিষ্প্রাণ নিস্পন্দ। কবির মনে হয়েছে সুস্থ জীবনের প্রয়োজনে সবুজের ভীষণ দরকার। যে সবুজ সজীবতায় প্রাণে আসে শান্ত স্নিগ্ধতা। তাই চোখ সেই স্নিগ্ধ সবুজের সন্ধান করে এবং দেহ আরোগ্যের জন্য চায় সবুজের সান্নিধ্য। কবি ক্লান্তিকর অবসাদময় নগর জীবনের অবক্ষয়িত মূল্যবোধে আনতে চেয়েছেন প্রাণের স্পর্শ। প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতি প্রেমিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় অরণ্যানীর সবুজ প্রাণের সমারোহে হারিয়ে যেতে চান। কিন্তু নাগরিক কর্মব্যস্ততার কারণে বহুদিন সেই জঙ্গলে যাওয়া হয়নি বলে আক্ষেপ করেছেন কবি। নগর জীবনের শ্রান্ত ক্লান্ত মুহূর্তে তার মনে হয়েছে শহরের অসুখ কেবল হাঁ করে সবুজ খায়। অর্থাৎ যে নগরায়ন সবুজকে ধ্বংস করছে সেই সবুজকে রক্ষা করতে আমাদের সকলকে গাছ লাগাতে হবে। তাহলে সবুজের মুক্ত প্রাঙ্গণে শরীর ও মনে আনন্দ নিকেতন গড়ে উঠবে। শুধুমাত্র আরোগ্যের জন্য নয়, মন ও শরীরের রোগগ্রস্ততা থেকে মুক্তির জন্য, হৃদয়ের পবিত্রতাময় শান্ত স্নিগ্ধতার প্রয়োজনে আমাদের গাছ দেখা দরকার।

2) "আরোগ্যের জন্য ওই সবুজের ভীষণ দরকার।"
ওই সবুজ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তার দরকার কেন? 2 + 3 = 5
উত্তর: উত্তর আধুনিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের এক মননধর্মী সৃষ্টি সার্থকতা 'আমি দেখি' কবিতা। নাগরিক মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং পাশাপাশি প্রাকৃতিক অক্ষয়ের দিকটি সূচিত করেছেন আলোচ্য কবিতায়। আদিম সভ্যতার মানুষ যে তার বুকভরা নিঃশ্বাসে পেত বেঁচে থাকার অক্সিজেন, এখন নাগরিক সভ্যতায় 'অসুখে'র কলেবর বৃদ্ধিতে সবুজ বৃক্ষ নষ্ট হওয়ায় মানব সভ্যতার সম্মুখে এখন বিপদের হাতছানি। যে কারণে কবি সবুজের প্রয়োজন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ব্যক্ত করে গাছ লাগিয়ে 'ওই সবুজের' পক্ষে সওয়াল করেছেন।
নগর কলকাতার সবুজহীন বিষন্ন ফ্যাকাশে রূপ সচেতন কবি মনকে পীড়া দেয়। এখানে একঘেয়েমি ক্লান্তি, চরম ব্যস্ততা। নগরায়নের 'অসুখে' সবুজ ধ্বংস করে সবুজের অনটন ঘটায়। ক্লান্তির শহর থেকে দূরে তাই সবুজের মাখামাখিতে জঙ্গলে কবি বারবার যেতে চেয়েছেন। সবুজের সমারোহ হারিয়ে যাওয়ায় তিনি বেদনাহত এবং অসুস্থ বোধ করেন। তাই কবির আকাঙ্ক্ষা শহরের মানুষ সবুজের সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধন গড়ে তুলুক। তাহলে সবুজের মুক্ত প্রাঙ্গণে শরীর ও মনে আনন্দ নিকেতন গড়ে উঠবে। কেননা সবুজ মানুষকে সতেজ রাখে। শুধুমাত্র আরোগ্যের জন্য নয়, মন ও শরীরের রোগগ্রস্ততা থেকে মুক্তির জন্য গাছ তুলে এনে বাগানে বসিয়ে শেষ পর্যন্ত কবি এই শহরকেই সবুজ করতে চেয়েছেন।

3) "শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়" - একথা বলার কারণ কি? এর মধ্য দিয়ে কবির কি অভিপ্রায় ব্যক্ত হয়েছে? 2 + 3 = 5
উত্তর : উত্তর আধুনিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মননধর্মী রচনার স্বতন্ত্র এক সৃষ্টি সার্থকতা 'আমি দেখি' কবিতা। নগরায়নের ব্যস্ত আলোড়নে অন্তহীন আকাশচুম্বী বাড়ির কংক্রিটের জঙ্গলে শহরের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সবুজহীন 'মৃত শহরে' বৃক্ষ নিধন ধ্বংসযজ্ঞকে আলোচ্য উদ্ধৃতিতে প্রকাশিত করেছেন।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর 'আমি দেখি' কবিতায় সবুজ সৌন্দর্যের প্রতি প্রবল আকর্ষণের কথা ব্যক্ত করেছেন। নাগরিক জীবন যুদ্ধের নাগপাশে বন্দি কবির দীর্ঘদিন জঙ্গলে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সেই ক্ষোভকে আরো দগ্ধ করেছে নগর সভ্যতার ইঁট, কাঠ, পাথর ও কংক্রিটের বহুতল প্রাসাদ ও রাস্তাঘাটের কারণে সবুজকে ধ্বংস করার প্রয়াস। আতঙ্কিত দুঃস্বপ্নে হৃদয়হীন শহর থেকে উচ্ছেদ হয় সবুজ কিন্তু এই সবুজ ছাড়া জীবনে কোথাও প্রশান্তি নেই। শহর জীবন তার অবক্ষয়িত মূল্যবোধ, একঘেয়েমি ও ক্লান্তির মাঝে সবুজের অনটন সচেতন কবিকে পীড়িত করে। নগর সভ্যতার বিকাশে কংক্রিটের জঙ্গলে বৃক্ষ সংহার যেন 'গলিত মাংসের স্তূপে তার সাক্ষ্য কীট ও শকুন'। রাক্ষসীর মত নগরায়ন নামক অসুখ শুধু সবুজ ধ্বংস করে। এর থেকে কবি মুক্তি পেতে সাধারণ মানুষকে গাছ লাগানোর আর্তি জানান।

4) 'আমি দেখি' কবিতার মর্মবস্তু আলোচনা করো।
অথবা, 'আমি দেখি' কবিতার নামকরণ
কতদূর সার্থক আলোচনা করো। 5
উত্তর : উত্তর আধুনিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের স্বতন্ত্র এক সৃষ্টির সার্থকতা 'আমি দেখি' কবিতা। এখানে আধুনিক কবি প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি নাগরিক মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের দিকটিও সূচিত করেছেন। যাইহ
নগর কলকাতার সবুজহীন বিষন্ন ফ্যাকাশে রূপ সচেতন কবি মনকে পীড়া দেয়। সবুজের সমারোহ হারিয়ে যাওয়ায় তিনি বেদনাহত এবং অসুস্থ বোধ করেন। তাই কবির আকাঙ্ক্ষা শহরের মানুষ সবুজের সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধন গড়ে তুলুক। তাহলে সবুজের মুক্ত প্রাঙ্গণে শরীরে ও মনে আনন্দ নিকেতন গড়ে উঠবে কেননা সবুজ মানুষকে সতেজ রাখে মনে ও প্রানে। নগরায়নের ব্যস্ত আলোড়নে অন্তহীন আকাশচুম্বী বাড়ির কংক্রিটের জঙ্গলে শহরের নগরায়নের কলেবর বৃদ্ধি করে বৃক্ষ ধ্বংস করে সবুজের অনটন ঘটায়। সভ্যতাকে সংকটের সম্মুখীন করে। নাগরিক সবুজের সমারোহে জঙ্গলে বারবার যেতে চেয়েছেন।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের 'আমি দেখি' কবিতা অনুপম সবুজ সৌন্দর্যের প্রতি প্রবল আকর্ষণের কথা ব্যক্ত করে। আতঙ্কিত দুঃস্বপ্নে হৃদয়হীন শহর থেকে উচ্ছেদ হয় সবুজ কিন্তু এই সবুজ ছাড়া জীবনে মনে কোথাও শান্তি নেই। কবি দেখতে চান মন ও শরীরের রোগগ্রস্ততা থেকে মুক্তির জন্য গাছ তুলে এনে বাগানে বসিয়ে শেষ পর্যন্ত এই শহরকেই সবুজ করতে চেয়েছেন। শুধু তাই নয়, জড় এই নগর সভ্যতায় সবুজ আনবে প্রাণের স্পর্শ, অবক্ষয়িত মূল্যবোধে আসবে সজীব সচেতনতার প্রসার। তাই এই নামকরণ বিষয়ধর্মী এবং ব্যঞ্জনা ধর্মী উভয় দিক থেকেই সার্থক।দ্বাদশ শ্রেণী