ট্রাম্প আর মোদী—এই দুজনের নাম শুনলেই মনে হয়, এরা যেন সে কবে একই মেলায় হারিয়ে যাওয়া দুই ভাই, যারা বছরের পর বছর পর আলাদা থাকার পরে একে অন্যকে খুঁজে পেয়েছে। আবার দেখা হয়ে গেছে দুজনায়! দুজনেই বড় বড় কথার মালিক, দুজনেই জঙ্গি জাতীয়তাবাদের পতাকা হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ান, দুজনেই ধুমধাড়াক্কা সিদ্ধান্ত নেন, আর দুজনেই দক্ষিণপন্থী ভাবনার পাক্কা সমর্থক। এদের মিল দেখলে বলতে ইচ্ছে করে হর্ষবর্ধন গোবর্ধন বা হবুচন্দ্র রাজা, গবুচন্দ্র মন্ত্রী— ,আসুন এদের মিলগুলো দেখা যাক।
প্রথম মিলটা হল এদের কথা বলার ধরনে—মনে হয় দুজনেই একই স্কুলে বক্তৃতা শিখেছে! ট্রাম্প যেমন “মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন” বলে গলা ফাটান, মোদীও “অচ্ছে দিন আনেওয়ালা হ্যায়” বলে ভোটের মঞ্চ মাতিয়ে দেন। দুজনেরই কথায় একটা জাদু আছে—হ্যাঁ ম্যাজিক আছে, শুনলে মনে হয়, এই তো, এবার সব ঠিক হয়ে যাবে! কিন্তু বাস্তবে কী হয়? ট্রাম্পের আমেরিকা আর মোদীর ভারত—দুটো জায়গাতেই লোকে বলে, “ভাই, এই গ্রেটনেস আর অচ্ছে দিন কবে আসবে, একটু ডেটটা বলে দাও!” সে দিন আর আসে না, এঁরা তখন নতুন কিছু নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন।
তারপর চলুন জাতীয়তাবাদ প্রসঙ্গে। ট্রাম্পের “আমেরিকা ফার্স্ট” আর মোদীর “মেক ইন ইন্ডিয়া” যেন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। ট্রাম্প বলেন, “বাইরের লোক এসে আমাদের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে,” তাই তিনি মেক্সিকোর সীমান্তে দেওয়াল তুলে দিলেন। মোদীও বলেন, “ভারতীয়দের জন্য ভারতীয় পণ্য,” তাই “আত্মনির্ভর ভারত” নিয়ে এলেন। দুজনেরই মনে একটাই ভাবনা—আমরা সেরা, বাকিরা পরে আসুক! এই জাতীয়তাবাদের চাকায় এত জোরে হাওয়া দিয়েছেন যে, বাকি বিশ্ব মাঝে মাঝে বলে, “ভাই, একটু ব্রেক কষো, আমরাও তো পৃথিবীতে আছি!” ওনারা চলেন নিজের মনে, বয়েই গেছে বিশ্বের মানুষজনের কথা শুনতে।
এবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ধরন। ট্রাম্প যেমন হঠাৎ একদিন ঘোষণা করে দিলেন, “মুসলিম দেশ থেকে কেউ আমেরিকায় ঢুকবে না,” মোদীও এক রাতে বলে দিলেন, “আজ থেকে ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট চলবে না!” দুজনেরই সিদ্ধান্তে একটা ধুমধাড়াক্কা ব্যাপার আছে—যেন বলছেন, “দেখো, আমি বড় নেতা, আমি যা বলবো তাই হবে!” কিন্তু এই ধুমধামের পর লোকে যখন লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলতে গেল, বা ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় বিমানবন্দরে আটকে পড়ল, তখন সবাই বলল, “ভাই, এত তাড়ার কী ছিল? মনে আছে করোনার সময়ে লকডাউনের কথা? ২৪ ঘন্টার নোটিশে লকডাউনের সত্যিই কী দরকার ছিল?”
Информация по комментариям в разработке