এই ভিডিওতে কুলার্ণব তন্ত্রের *চতুর্দশ উল্লাস—'গুরু-শিষ্য-পরীক্ষা'* এর কঠোর নিয়মাবলী, মন্ত্রোপদেশ লাভের ক্রম এবং দীক্ষার বিভিন্ন প্রকারভেদ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। দেবী পার্বতীর প্রশ্নের উত্তরে ঈশ্বর (শিব) এই অধ্যায়ে সাধনার মূল ভিত্তি স্থাপন করেছেন।
*আলোচিত মূল বিষয়বস্তু এবং সাধন রহস্য:*
১. *পরীক্ষার আবশ্যকতা ও সময়কাল:* গুরুকে অবশ্যই শিষ্যের *বিধিবদ্ধ পরীক্ষা* (vidhivat pariksha) নেওয়ার পরেই তাকে মন্ত্রোপদেশ (mantropadesh) দেওয়া উচিত। অন্যথায় সেই মন্ত্র নিষ্ফল হয়। যদি কোনো গুরু ও শিষ্য একে অপরের পরীক্ষা না করে মোহাদ্দ্বেষবশত (mohdvesh) উপদেশ আদান-প্রদান করেন, তবে তারা উভয়েই বহু বছর ধরে *নরকে বাস করেন**। শিষ্যের জ্ঞান (gyan) এবং ক্রিয়া (kriya) উভয় প্রকারের পরীক্ষা **এক বছর পর্যন্ত* বা কমপক্ষে *তিন মাস পর্যন্ত* নেওয়া উচিত।
২. *যোগ্য শিষ্যের লক্ষণ:* যে শিষ্য গুরু কর্তৃক রুষ্ট বা তাড়িত হলেও দুঃখী না হয়ে সর্বদা মনে করে যে এটি *গুরুদেবের কৃপা**। যিনি গুরুদেবের স্মরণ, কীর্তন, দর্শন, বন্দনা ও আজ্ঞাপালনে আনন্দ অনুভব করেন, তিনিই **ব্ৰহ্ম শিষ্য* হওয়ার যোগ্য।
৩. *উদ্দ্বোধক গুরু:* যে মহাপুরুষ জপ, ধ্যান, হোম-অর্চনা থেকে আনন্দ লাভ করেন এবং জ্ঞানোপদেশে নিযুক্ত থাকেন এবং মন্ত্রে সিদ্ধি লাভ করেন, তাকেই *'উদ্দ্বোধক'* (Uddhbodhak) গুরু রূপে গ্রহণ করা উচিত।
৪. *দীক্ষার প্রকারভেদ:* কর্মকাণ্ড (Karmakaand) রহিত দীক্ষা তিন প্রকারের বলা হয়েছে: *স্পর্শদীক্ষা* (Sparsha Diksha), *দৃগ্দীক্ষা* (Drigd Diksha) এবং *মোহদায়িনী দীক্ষা* (Mohadayini Diksha)।
৫. *গুরুত্বপূর্ণ দীক্ষা সমূহ:*
*ক্রিয়াদি দীক্ষা (Kriyadi Diksha):* এটি আট অঙ্গের এবং সাত প্রকারের—সময়, সাধিকা, পুত্রক, বৈধিক, পূর্ণা, চর্যা এবং নির্বাণ।
*বর্ণাদি দীক্ষা:* শরীরের বর্ণগুলিতে ন্যাস করে দেবত্বের ভাব জাগ্রত করা হয়।
*কলাদীক্ষা:* এতে পাঁচটি কলাকে (নিবৃত্তি, প্রতিষ্ঠা, বিদ্যা, শান্তি ও শান্ততীত) পায়ের পাতা থেকে ব্রহ্মরন্ধ্র পর্যন্ত ন্যাস করা হয়, যার ফলে শিষ্যের *দিব্যভাব* প্রাপ্তি হয়।
*স্পর্শদীক্ষা:* গুরুদেব মূলক্ষামালিনী মন্ত্র জপ করে শিবের ধ্যান সহ শিষ্যকে নিজ হাতে স্পর্শ করেন।
*বাগদীক্ষা (Vāg-Diksha):* গুরুদেব নিজের চিত্তকে পরতত্ত্বে (paratattva) স্থিত করে মন্ত্রোপদেশ করেন।
*দৃগ্দীক্ষা (Drig-Diksha):* প্রসন্ন দৃষ্টিতে শিষ্যকে দেখে গুরুদেব পরতত্ত্বের ধ্যান করেন।
*শম্ভবী দীক্ষা (Shambhavi Diksha):* গুরুদেবের দর্শন, ভাষণ বা স্বরমাত্রার দ্বারা যখন তত্ত্বজ্ঞান তৎক্ষণাৎ জানা যায়, তখন তাকে শম্ভবী দীক্ষা বলা হয়।
*মনোদীক্ষা (Mano-Diksha):* এটি তীব্র ও তীব্রতমা দুই প্রকারের। গুরুদেব যখন শিষ্যের দেহে ষট্চক্রের স্মরণ সহকারে বেধ (pierce) করেন, তখন শিষ্য পাপসমূহ থেকে মুক্ত হয়ে সমস্ত বাহ্য ক্রিয়া-ব্যাপার শূন্য হয়ে ভূতলে পতিত হন।
৬. *পূর্ণাভিষেক ও শিবত্ব প্রাপ্তি:* গুরুদেব কুলদ্রব্যের পূজা করে এবং *যুগলের দর্শন* করিয়ে যে *'কৌলিক দীক্ষা'* দেন এবং পঞ্চগব্যাদি দ্বারা শিবদ্রব্যের পূর্ণাভিষেক করেন, সেই অভিষেক দ্বারা যারা পবিত্র হন, তারা *শিবের সাযুজ্য* (Shiv ka saayujya) লাভ করেন।
৭. *দীক্ষার ফল:* দীক্ষার দুটি প্রধান ভেদ: বাহ্য ও আভ্যন্তরী। দীক্ষা শরীর, জাতি বা কর্মের সংস্কার করে না, *আত্মারই দীক্ষা হয়**। মন্ত্রপ্রভাবের দ্বারা ভববন্ধন থেকে সমস্ত পাপ নষ্ট হয় এবং **জ্ঞান প্রাপ্তি* হয়ে সাধক *শিবস্বরূপ* (Shivroop) হয়ে যান। দীক্ষা ছাড়া কৃত সমস্ত পূজা-জপাদি নিষ্ফল হয়ে যায়।
---
*Tags (ট্যাগস)*
```
কুলার্ণব তন্ত্র ১৪শ উল্লাস, Kularnava Tantra Chapter 14, গুরু শিষ্য পরীক্ষা, Guru Shishya Pariksha, দীক্ষা প্রকার, Types of Diksha, স্পর্শদীক্ষা, Sparsha Diksha, বাগদীক্ষা, শম্ভবী দীক্ষা, Shambhavi Diksha, পূর্ণাভিষেক, Purna Abhishek, শিবত্ব লাভ, Shivroop, উদ্দ্বোধক গুরু, Uddhbodhak Guru, মনোদীক্ষা, Mano Diksha, কুলার্ণব তন্ত্র রহস্য, দীক্ষা ছাড়া পূজা নিষ্ফল
```
Информация по комментариям в разработке