বর্তমানে যেসব ভূমিকম্প ঘটছে, তা মহান আল্লাহর প্রেরিত সতর্ককারী নিদর্শনগুলোর একটি। এগুলো দিয়ে তিনি তাঁর বান্দাদের ভয় দেখিয়ে থাকেন। এগুলো মানুষের পাপের ফল। আল্লাহ বলেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা : ৩০) তাই মুসলমানদের খুবই আন্তরিকভাবে মহান আল্লাহর কাছে তাওবা করা উচিত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যদি জনপদের মানুষগুলো ইমান আনত এবং (আল্লাহকে) ভয় করত, তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান-জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দিতাম, কিন্তু তারা (আমার নবীকেই) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং তাদের কৃতকর্মের জন্য আমি তাদের পাকড়াও করলাম।’ (সুরা আরাফ : ৯৬)
মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘জনপদের মানুষগুলো কি নির্ভয় হয়ে ধরে নিয়েছে যে আমার আজাব তাদের ওপর মধ্যদিনে এসে পড়বে না—তখন তারা খেল-তামাশায় মত্ত থাকবে। কিংবা তারা কি আল্লাহর কলাকৌশল থেকেও নির্ভয় হয়ে গেছে? অথচ আল্লাহর কলাকৌশল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জাতি ছাড়া অন্য কেউই নিশ্চিত হতে পারে না।’ (আরাফ : ৯৮-৯৯)
আল্লামা ইবনু কাইউম (রহ.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ কখনো কখনো পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন, যার ফলে তখন বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। এটা মানুষকে ভীত করে। ফলে তারা মহান আল্লাহর কাছে তাওবা করে। পাপকাজ ছেড়ে দেয়। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে এবং তাদের কৃত পাপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়।’
তাই যখন কোথাও ভূমিকম্প হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয় কিংবা ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে অতি দ্রুত তাওবা করা। তাঁর কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা। মহান আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) সূর্যগ্রহণ সম্পর্কে বলেছেন, ‘যদি তুমি এমন কিছু দেখে থাকো, তখন দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহকে স্মরণ করো, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।’ (বুখারি ও মুসলিম) প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে মুক্তির জন্য দরিদ্র ও মিসকিনদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা এবং তাদের দান করা উচিত। কেননা রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দয়া প্রদর্শন করো, তোমার প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ)
বর্ণিত আছে, যখন কোনো ভূমিকম্প হতো, ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) তাঁর গভর্নরদের দান করার কথা লিখে চিঠি লিখতেন। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যা মানুষকে বিপর্যয় (আজাব) থেকে নিরাপদে রাখে। আর তা হলো, যথাসাধ্য সমাজে প্রচলিত জিনা-ব্যভিচার, অন্যায়-অবিচার রোধ করা। হাদিস শরিফে এসেছে, সমাজে ব্যভিচার বেড়ে গেলে ভূমিকম্প হয়।
প্রায়ই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে বাংলাদেশ। আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলার যে সামর্থ্য, তাতে উচ্চমাত্রার ভূকম্পনে এ দেশের কী হবে, তা মহান আল্লাহই ভালো জানেন। ২০০২ সালে চট্টগ্রামে ৪০ বার ভূমিকম্প হওয়া সেই ভয়াবহতার ইঙ্গিত বহন করে। অন্যদিকে ইতিহাসে পাওয়া যায়, ২০০৫ সালের ২৪ মার্চ ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় ভূমিকম্পে ১৩ লাখ, ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার আচেহ্ প্রদেশের ভূমিকম্প ও সুনামিতে দুই লাখ ২৬ হাজার, ১৯৬০ সালের ২২ মে চিলির ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় পাঁচ হাজার মানুষ।
ভূমিকম্পের অন্য নাম কিয়ামত। এর ক্ষতি ও ভয়াবহ পরিণতির জন্য দায়ী মানুষের অপকর্ম ও অনাচার। ধর্মদ্রোহীদের শাস্তি দান প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মিনহুম্ মান্ খাসাফনা বিহিল আরদা’—অর্থাৎ তাদের কাউকে আমি মাটির নিচে গেড়ে দিয়েছি। (আনকাবুত : ৪০) তাই সবার উচিত মহান আল্লাহকে ভয় করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো। কিয়ামতের ভূমিকম্প এক ভয়ংকর ব্যাপার।’ (সুরা হজ : ১)
সুনামি ও এর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে যেভাবে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়, কিয়ামতের ভয়াবহতা তার চেয়ে মারাত্মক। মহান আল্লাহ বলেন, ‘(যেদিন কিয়ামত হবে) প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে তা উিক্ষপ্ত ধূলিকণায় পর্যবসিত হবে।’ (সুরা ওয়াকিয়া : ৪-৬)
প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ মানুষের অপকর্ম। এগুলোর পথ ধরেই মানুষ কিয়ামতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘যখন জাতির নিকৃষ্ট ব্যক্তি তাদের নেতা হবে, ক্ষতির ভয়ে মানুষকে সম্মান করা হবে, সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো রক্তিম বর্ণের ঝড়ের (এসিড বৃষ্টি), ভূকম্পনের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন) পাথর বৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ্) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনগুলোর জন্য।’ (তিরমিজি)
সুতরাং বলাই যায়, ধেয়ে আসছে আরো ভয়াবহ ভূমিকম্প, যদি না আমরা নিজেদের শুধরে নিই। মহান আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন,
why is god's wrath on turkey.
কেনো তুরস্কের উপর আল্লাহর গজব আসলো.
the reason for the earthquake in turkey.
তুরস্কের ভূমিকম্প.
Информация по комментариям в разработке