Скачать или смотреть মূর্তি, মূর্তি পূজো এবং পাগলচাঁদ দর্শণ

"পাগলচাঁদ মহাসঙ্ঘ" নামে ইউটিউব চ্যানেলের এই কাজটি তিনটি দেশে বসে করা হয়েছে। লেখাটির ভাষ্যকার বাংলাদেশের শ্রী সম্রাট বালা, লেখক ভারতের শ্রীমতী সন্ধ্যালক্ষ্মী মন্ডল এবং ভিডিও এডিটিং করেছেন সুদূর আফ্রিকা মহাদেশের লিবিয়া থেকে শ্রী নিউটন গোলদার। চ্যানেলটির টেকনিক্যাল বিষয় এবং কপিরাইট দেখছেন কলকাতা যাদবপুরের অধ্যাপক দীপক বিশ্বাস।


মূর্তি, মূর্তি পূজো এবং পাগলচাঁদ দর্শণ

লেখা: শ্রীমতী সন্ধ্যালক্ষ্মী মন্ডল

আজকাল অনেক ভক্তের বাড়িতে পাগলচাঁদের মূর্তি দেখা যায়। এই মূর্তি কেবল দর্শনের জন্য। সেই মূর্তিকে পূজা করা বাংলাদেশের শ্রীধাম খেজুরতলা, শ্রীশ্রী পাগলচাঁদ সেবাশ্রম অথবা ভারতের শ্রীধাম নবখেজুরতলা, হাঁসপুর শ্রীশ্রী পাগলচাঁদ পাগলীমা সেবাশ্রম অনুমোদন করে না। চিত্র বা মূর্তি তৈরি হয় ব্যক্তির আবেগে, কল্পনায় এবং ভাবনায়।

আমরা জানি, পাগলচাঁদ এর যুগল মূর্তি আছে বাংলাদেশের শ্রীধাম খেজুরতলার কাছারি দালানের ছাদে। দুর থেকে সেই মূর্তি দেখা যায়। পূজোর জন্য নয়।

আমরা, আমাদের জ্ঞান ও যুক্তি দিয়ে পাগলচাঁদ এর দর্শন বিচার করতে চাই না। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান শুনে কেঁদে আবেগে মাতোয়ারা হই। একথা ঠিক, ভক্তি না হলে ধর্ম হয় না, কিন্তু ভক্তি সঙ্গে জ্ঞান যুক্ত না হলে যে সমস্যা তৈরি হয়। বেশির ভাগ ভক্তমিলন মেলায় অনুষ্ঠানে বেশির ভাগ ভক্ত আলোচনার থেকে গান শুনতে বেশি ভালোবাসেন। পাগলচাঁদ বলতেন আলোচনায় জ্ঞান বাড়ে গানে ভক্তি। দুটোরই দরকার।

মূর্তি পূজো অপ্রয়োজনীয় ও অবান্তর। জীবিত মাতাপিতার পুজোই শ্রেষ্ঠ। পিতামাতার অবর্তমানে তাঁদের ছবি পূজো হতে পারে তবে সেক্ষেত্রে নিজের পূজো নিজেকেই করা উচিৎ ভাড়াকরা লোক দিয়ে নয়, মন্ত্র হবে মাতৃভাষায় নিজের মনের আকুতি বা প্রার্থনা।

কিছু ভক্ত আবেগে বা ভালোবেসে অথবা প্রচারের জন্য পাগলচাঁদের মূর্তি তৈরি করে থাকেন, দেখানোর জন্য বা প্রচারের জন্য। সেটা কোনো অন্যায় নয়। আমরা কি চাই না খেজুরতলা দালানের উপরে অবস্থিত পাগলচাঁদের যুগল মূর্তির মতো শহরের মোড়ে মোড়ে পাগলচাঁদের যুগল মূর্তি বসুক ? যদি সেই মূর্তির গলায় কেউ ভক্তি ভরে ফুলের মালা দেয়, ধুপধুনা দেয় তবে তাকে কি আমরা পূজো বলব না কি পাগলচাঁদকে সন্মান করা বলব বা মান্য করা বলব?

মূর্তি পুজোর ব্যাখ্যা এবং পাগলচাঁদের নীতি আদর্শ এবং দর্শনের কথা শুনে ও অনুধাবন করে সমাজের জ্ঞানী মানুষ শুনে ধন্য ধন্য করে। তাঁরা আগ্রহী হন পাগলচাঁদ কে জানতে এবং বুঝতে। যদিও তাঁদের পক্ষে সবসময় ভক্তমিলন মেলায় উপস্থিত হওয়া সম্ভব হয় না। ফলে প্রকৃত এবং সঠিক ভাবে পাগলচাঁদকে উপলব্ধি করতে পারেন না। এই সমস্যা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় পুস্তক, পত্রিকা এবং সোশ্যাল ইলেকট্রনিক মিডিয়া। পাগলচাঁদ মহাসঙ্ঘের ফেজবুক গ্রূপ এবং ইউটিব চ্যানেল "পাগলচাঁদ মহাসঙ্ঘ" এই ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে চলেছে।

মূর্তি বা চিত্র এবং তাঁর পূজো নিয়ে পাগলচাঁদ দর্শণ সঠিক ভাবে প্রচার হলে যে সামাজিক পরিবর্তন ও আন্দোলন সঙ্ঘটিত হতে পারে, সেটাও সফলতার সাথে প্রচার দরকার। দুঃখের বিষয় কিছু ভক্তমিলন মেলা বা অনুষ্ঠান করার মধ্যেই আমরা নিমগ্ন থাকি, এর মধ্যে আবধ্য থেকেই যেন আমাদের আত্মতুষ্টি। মূর্তি পূজো নিয়ে পাগলচাঁদ দর্শণ সঠিক প্রচারে না হওয়াতে নিশ্চয়ই আমাদের কিছু ক্ষামতি আছে। সেগুলো নিয়ে সেমিনার ও আলোচনা দরকার। সত্যি যদি আমরা পাগলচাঁদকে ভালোবাসি বা একদিন এই মানবতাবাদী দর্শন বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হবে, এটা চাই তাহলে আমদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ভুলে এগিয়ে যেতে হবে। একদিন তা হবেই অন্তর থেকে একথা বিশ্বাস করি।

গাছের গোড়া শক্ত না হলে ডালপালা বাড়ে না তেমনি পাগলচাঁদ এর দর্শণ প্রচারের জন্য চাই একটি শক্তিশালী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। সুখের কথা এই ক্ষেত্রে শ্রীধাম নবখেজুরতলার শাখা সংগঠন "পাগলচাঁদ মহাসঙ্ঘ" নিরন্তর কাজ করে চলেছে।

জয় পাগলচাঁদ এর জয়।।
জয় পঞ্চাশক্তির জয়।।

#অন্তরেজ্ঞানেরবাতিজ্বলুক।। #কলকাতা