Скачать или смотреть হুগলি জেলার বিখ্যাত কালীবাড়ি ত্রিবেণী ডাকাত কালীবাড়ি জয় মা কালী 🌺🙏🙏

ত্রিবেণীর ডাকাত কালী মন্দিরটি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার একটি বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক স্থান। এই কালী মন্দিরটি মূলত *রঘু ডাকাতের* নামে পরিচিত হলেও, জনশ্রুতি অনুসারে এটি তার ভাই *বুধো ডাকাত* দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

এই মন্দিরের ইতিহাস ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিচে দেওয়া হলো:

*প্রতিষ্ঠা ও প্রেক্ষাপট:* প্রায় ৫০০ বছর আগে, ত্রিবেণীর এই এলাকাটি ছিল ঘন জঙ্গলময় এবং জনবসতিহীন। রঘু ও বুধো ডাকাতের দল এই জঙ্গলেই তাদের আস্তানা গড়েছিল। তারা ডাকাতি করার আগে এই মন্দিরে মা কালীর পূজা করতেন এবং বিশ্বাস করতেন যে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে বের হলে তারা সফল হবেন।
*রঘু ও বুধো ডাকাত:* যদিও মন্দিরটি বুধো ডাকাত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এটি রঘু ডাকাতের নামে বেশি জনপ্রিয়। তারা ডাকাতি করলেও অনেক সময় গরীবদের সাহায্য করতেন, তাই তারা 'ভালো ডাকাত' হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
*রামপ্রসাদ সেনের ঘটনা:* মন্দিরের সঙ্গে একটি বিখ্যাত কাহিনী জড়িত আছে সাধক কবি রামপ্রসাদ সেনের। কথিত আছে, একবার রামপ্রসাদ যখন এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন ডাকাতরা তাকে নরবলি দেওয়ার জন্য ধরে নিয়ে আসে। বলি দেওয়ার ঠিক আগে রামপ্রসাদ তার শেষ ইচ্ছা হিসেবে মায়ের উদ্দেশ্যে গান গাইতে চান। তার গান শুনে মা কালী নাকি সাক্ষাৎ দর্শন দেন এবং ডাকাতরা নরবলি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে মন্দিরে নরবলি প্রথা বন্ধ হয়ে যায়।
*বর্তমান অবস্থা:* সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। একসময়কার মৃন্ময়ী মূর্তিটি ১৯৭০-এর দশকে ডাকাতির সময় ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে সেখানে নতুন একটি সিমেন্টের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মন্দিরের হাতে থাকা তরবারিটি ছিল ডাকাতদের ব্যবহৃত তরবারি, যা এখন মায়ের হাতে শোভা পায়।

আজও এই মন্দিরে কালীপূজা অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় এবং দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা মায়ের কাছে আশীর্বাদ নিতে আসেন। মন্দিরের আশেপাশে সেই ভয়াল পরিবেশ আর না থাকলেও, এর ইতিহাস এবং লোকমুখে প্রচলিত কাহিনীগুলো আজও মানুষকে আকর্ষণ করে।