Piyasara Sarkar Barir Durga Puja || পিয়াসাড়া সরকার বাড়ির দূর্গা পূজা || জমিদার বাড়ির দূর্গা

Описание к видео Piyasara Sarkar Barir Durga Puja || পিয়াসাড়া সরকার বাড়ির দূর্গা পূজা || জমিদার বাড়ির দূর্গা

ইতিহাস কে জানা এবং তার সাথে ভ্রমণ। এই দুয়ের মেলবন্ধন যখন ঘটে তখন ভ্রমন সার্থক মনে হয়। আমি চেষ্টা করবো ভ্রমনের সাথে সাথে সেই জায়গার কিছু ইতিহাস আপনাদের সামনে তুলে ধরতে। এই ভিডিওটির মধ্যে বিশ্বনাথ বাবু যে কথা বলেছেন তা সম্পূর্ণ তার নিজস্ব বক্তব্য। এখানে আমি কখনোই এটি Verify করিনি।
এই জায়গাটি পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার তারকেশ্বর থানার অন্তর্গত গ্রাম পিয়াসাড়াতে। এখানে একটি কথা বলে রাখি পিয়াসাড়া আলাদা আর গ্রাম পিয়াসাড়া আলাদা জায়গা। যদিও দুটো জায়গাই খুব কাছাকাছি। তারকেশ্বর স্টেশন থেকে আসতে পারেন আবার লোকনাথ স্টেশন দিয়ে আসতে পারেন। বাইক নিয়ে ২৬ নং রুট ধরে এলে গোবরহারা স্কুলের বিপরীত রাস্তা দিয়ে সোজা চলে আসুন এখানে। আরমবাগ বা চাঁপাডাঙ্গার দিক থেকে এলেও একই রাস্তা। তবে ১২ নং রোড দিয়ে এলে লোকনাথ স্টেশন যাওয়ার রাস্তা দিয়েও আসতে পারেন।
এবার বলি এই বাড়ির ইতিহাস নিয়ে। যদিও এই লেখাটি আমার নয়, ওই গ্রামেরই একজন শিক্ষক শ্রী মানব মন্ডল মহাশয়ের লেখা। এবং এই ভিডিওটি করার পিছনে ওনার অবদান কম নয়। ওনাকে অনেক ধন্যবাদ জানি। 🙏💕🙏💕🙏💕

গ্রামের ইতিহাস আরম্ভ হয় আনুমানিক অষ্টাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে। ষোড়শ শতাব্দীতে হাওড়া ও হুগলীর বিস্তীর্ণ অঞ্চল ছিল ভুরশুট পরগণার অন্তর্ভুক্ত। ১৭১৩ খৃষ্টাব্দে বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচন্দ্র রায় ভুরশুট আক্রমণ করেন এবং হাওড়া হুগলীর একাধিক অঞ্চল বর্ধমান রাজের অধীন হয়। পরবর্তীকালে এই বিশাল অঞ্চল ছোট ছোট জমিদারীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এইসব স্থানীয় জমিদাররা সময়মত বর্ধমানের মহারাজাকে কর দিয়ে নিজের এলাকা স্বাধীনভাবে শাসন করতেন। এরকমই একটি জমিদার বংশ হল পিয়াসাড়ার সরকার বংশ। সরকারদের বংশতালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে বর্তমানে সরকারদের ১২ তম পুরুষ চলছে। এবার একপুরুষে ২৫ বছর ধরে হিসেব করলে সরকার বংশ আনুমানিক ১২X২৫= ৩০০ বছরের প্রাচীন হয়। এই সময়কাল কীর্তিচন্দ্রের ভুরশুট আক্রমণের সাথে প্রায় মিলে যায়। এই সময়কালকে মাথায় রাখলে বলা যায় যে জনৈক শরৎচন্দ্র সরকার আনুমানিক ১৭২০ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ পিয়াসাড়া জমিদারির প্রতিষ্ঠা করেন। ইনি জাতিতে সদগোপ ছিলেন। পিয়াসাড়া গ্রামে আর সদগোপ বলতে আছেন গ্রামের মণ্ডলরা। কিন্তু জমিদার সরকারবংশ সম্ভবত বর্ধমানের নিকটবর্তী কোন স্থান থেকে আগত। বর্ধমানের মহিষগড়িয়া নামক স্থানে এই বংশের একটি শাখা এখনো বসবাস করছে।
এই বংশের পঞ্চম পুরুষ জমিদার আনন্দমোহন সরকারের সময়( আনুমানিক ১৮৩০-৩২ খ্রিষ্টাব্দ) একটি অভূতপূর্ব ঘটনা পিয়াসাড়ার সরকারদের ভাগ্যের চাকা ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেয়। খাজনা বাকি থাকার কারণে বর্ধমানের মহারাজা আনন্দমোহন সরকারকে বর্ধমানে নিয়ে এসে কারাবন্দী করে রাখেন। সময়টা শরৎকাল। জমিদারবাবু মহারাজাকে জানান যে তাঁকে এভাবে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রাখলে এবছর পিয়াসাড়ায় দুর্গাপুজো হয়ত হবে না। তারপর জমিদার মশাইয়ের ব্যবহারে মহারাজা সন্তুষ্ট হন এবং তাঁকে এই শর্তে মুক্তির নির্দেশ দেন যে তিনি যেন ফিরে গিয়ে তাঁর গ্রামে অবশ্যই দুর্গাপুজো করেন। ফিরে এসে অল্প সময়ের মধ্যেই জমিদারবাবু দুর্গাপুজোর আয়োজন করলেন। পুজো শেষের পর বর্ধমান-রাজ পিয়াসাড়া জমিদারীকে নিষ্কর ঘোষণা করলেন। তারপর থেকেই সরকাররা নির্ঝঞ্ঝাট জমিদারী ভোগ করতে লাগলেন।
এদিকে ততদিনে তারকেশ্বরে বনের মধ্যে শিবশিলা আত্মপ্রকাশ করেছেন। তারকেশ্বরকে ঘিরে গড়ে উঠেছে দশনামী সন্ন্যাসীদের মঠ। তারকেশ্বরের মঠের বিপুল সম্পত্তি নানা কারণে বেদখল হয়ে যেতে থাকলে তৎকালীন মোহান্ত রঘুচন্দ্র গিরি তারকেশ্বরের বিপুল সম্পত্তি দেখাশোনার ভার জমিদার আনন্দমোহন সরকারের হাতে অর্পণ করেন। বর্ধমান রাজের তারকেশ্বর পৃষ্ঠপোষকতার কথা সুবিদিত। ফলে তারকেশ্বরের সাথে পিয়াসাড়ার জমিদাররা যুক্ত হলেও বর্ধমান রাজের তাতে আপত্তি থাকার কথা ছিল না। তাই একদিকে মোহান্তর সমর্থন, আর অন্যদিকে বর্ধমান রাজের প্রশ্রয়, এই দুয়ে মিলে পিয়াসাড়ার জমিদারদের প্রতাপ ও প্রতিপত্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে।

দুঃখের বিষয় হল বিষয়সম্পত্তি ভোগ ও প্রজা নিপীড়ন ছাড়া নিজেদের কীর্তি চিরকালীন করে রাখার ক্ষেত্রে পিয়াসাড়ার জমিদাররা মোটেই যত্নবান ছিলেন না। তাই বোধ হয় হুগলী জেলার ইতিহাসে এইরকম প্রতাপশালী জমিদার-বংশের ইতিহাস প্রায় গুরুত্বহীন ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের কাছেই অজানা।
কিন্তু পিয়াসাড়া গ্রামের জমিদারদের সুবিশাল বাড়ি দেখলে আজও থমকে দাঁড়াতে হয়। উঁচু উঁচু থামগুলো আজও অতীতের ঔদ্ধত্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেই দুর্গাপূজো আজও এখানে হয়। এখানকার দুর্গাপ্রতিমার বিশেষত্ব হল যে ইনি চতুর্ভুজা। অন্যান্য বনেদী বাড়ীর মত এখানেও একচালার মধ্যেই বিরাজ করছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্ত্তিক। সরকার বাড়ীর কুলদেবতা শান্তিনাথ শিব। গাঁয়ে আছে একটি কালীমন্দির ও একটি ধর্মরাজ ঠাকুরের মন্দির। চৈত্র মাসে শিবের গাজনের সময় এখানে মিলে-মিশে যান ধর্মরাজ ঠাকুর ও শিব। সরকার বাড়ীর ঠাকুর দালানে মহাসমারোহে পালিত হয় নীলাবতীর বিয়ে।
জমিদারবাড়ীর একটা অংশকে বলা হয় নতুন-বাড়ি। পুরনো বাড়িতে দুর্গাপূজোর সাথে পাল্লা দিয়ে এ বাড়িতে বসন্তকালে আয়োজিত হত বাসন্তী-পূজা। কিন্তু সেই বাসন্তী-পূজা আজ আর হয় না। কেবলমাত্র দুর্গোৎসবই সরকারবাড়ীর এই প্রাচীন ঐতিহ্যকে আজও বাঁচিয়ে রেখেছে। জমিদারদের সেই রমরমা আজ আর নেই। সরকারদের বর্তমান বংশধররা গ্রামের আর পাঁচটা মানুষের মতোই ছোট-বড় নানান পেশায় যুক্ত।

যদি কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করতে চান তবে 👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
যোগাযোগ করতেই পারেন। কোনও অসুবিধা নেই। আমার ফেসবুক পেজ "The Informatic" এবং ইনস্টাগ্রাম আইডি "the_Informatic_skd" তে মেসেজ করতে পারেন। আর ভিডিও ভালো লাগলে সাবস্ক্রাইব করে পাশে থাকবেন।
email :- [email protected]

#Theinformaticskd #PujoiVromon01

Комментарии

Информация по комментариям в разработке