Скачать или смотреть দিঘার জগন্নাথ মন্দির: পর্যটনের নতুন দিগন্ত এবং ধর্মীয় সহাবস্থানের প্রয়োজনীয় বার্তা

দিঘার জগন্নাথ মন্দির: পর্যটনের নতুন দিগন্ত এবং ধর্মীয় সহাবস্থানের প্রয়োজনীয় বার্তা

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত দিঘায় নির্মিত হচ্ছে এক বিশাল জগন্নাথ মন্দির, যা রাজ্যের ধর্মীয় পর্যটনের মানচিত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে। ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে এই মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন নির্ধারিত হয়েছে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত, ৬৫ মিটার উচ্চতার এই স্থাপত্যটি ২২ একর জমির উপর বিস্তৃত, যার নির্মাণ ব্যয় প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।

এই মন্দির কেবলমাত্র হিন্দু ভক্তদের জন্য নয়—এর সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বও বিপুল। রথযাত্রার মতো ধর্মীয় উৎসব কেন্দ্র করে দিঘায় বছরের পর বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করবেন, যার ফলে হোটেল, রেস্তোরাঁ, গাইড, পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে কর্মসংস্থান ও ব্যবসার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তবে এই বিশাল উদ্যোগের পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও সামনে আসছে: দিঘা, যেটি আজ বহুধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হচ্ছে, সেখানে কি সব ধর্মের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে? বিশেষ করে, প্রতিবছর দিঘায় প্রচুর মুসলিম পর্যটক ভ্রমণে আসেন, কিন্তু তাদের নামাজ আদায়ের জন্য কোনও নির্ধারিত ও সম্মানজনক স্থান নেই। পর্যাপ্ত ও স্থায়ী মসজিদের অভাবে মুসলিম পর্যটকদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়—যা দিঘার ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালে এই মন্দির প্রকল্পের সূচনা করেন এবং নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ের তদারকি নিজে করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন, “এই মন্দির হাজার বছরের স্মারক হয়ে থাকবে।” পাশাপাশি তিনি সব ধর্মের মানুষের সমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন, যার প্রমাণ দেখা যায় ফুরফুরা শরীফের উন্নয়ন প্রকল্পে।

অতএব, যদি দিঘাকে সত্যিকারের 'সবার জন্য' পর্যটন হাব হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, তাহলে জগন্নাথ মন্দিরের পাশাপাশি একটি সুন্দর ও স্থায়ী মসজিদ প্রতিষ্ঠা শুধু সময়ের দাবি নয়—এটি হবে ধর্মীয় সহাবস্থানের এক দৃঢ় বার্তা।


---