ঈদুল আযহার পূর্বে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং ডার্ড গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের নামে দায়েরকৃত মালমলা প্রত্যাহার,নিরীহ শ্রমিকদের হয়রানী বন্ধ,গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মুক্তির দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ ও মানববন্ধন।
১৯ জুন ২০২৩ ইং তারিখে সকাল ১১ ঘটিকায় গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গাজীপুর জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড গার্মেন্টসের গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মুক্তি,নিরীহ শ্রমিকদের হযরানি বন্ধ,বেআইনিভাবে চাকুরীচ্যুত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল,রিজাইনকৃত শ্রমিকদের আইনানুগ পাওনাদি পরিশোধের দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ ও মানবব্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক শ্রমিকনেতা তমিজ উদ্দিন তনু এবং পরিচালনা করেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট এন্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি ও পরিষদের সদস্য সচিব মোঃ শফিউল আলম।
শ্রমিক সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তি যোদ্ধা শ্রমিকনেতা হায়দার আলী,শ্রমিক নেতা আব্দুল আজিজ, শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম শহিদ,আজিজুল হক,শাহজাহান সিরাজ,শাহদাত হোসেন,শ্রমিকনেতা হামিদ সরকার,ইয়াকুব আলী,লিটন সরকার,আব্দুল কাদের,কুলসুম আক্তার,মোসাঃ শিমু আক্তার জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
ঘটনার বিবরণ ও কারখানার শ্রমিকদের দাবিঃ- গত ১৩ ই মে-২০২৩ ইং তারিখে এপ্রিল মাসের বকেযা বেতন ভাতা পরিশোধ, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ৫ বছরের রিজাইনকৃত শ্রমিকদের সকল আইনানুগ পাওনাদি পরিশোধ,২০২০ সালের ঈদুল ফিতরের বকেয়া থাকা হাফ বোনাস পরিশোধ, ২০২২ সালে অর্জিত ছুটির টাকা চলতি মাসে পরিশোধ,২০২১ ইং হইতে ২০২৩ ইং সনের সকল ইনসেপ্টি এবং নাইট বিল পরিশোধ,যে সকল শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা রয়েছে তাদের টাকা পরিশোধসহ প্রতি মাসের সাতকর্ম দিবসের মধ্যে বকেযা বেতন ভাতা পরিশোধের দাবিতে কারখানার সামনে শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
পরের দিন ১৪ই মে শ্রমিকরা দাবিতে অনর থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যান। বিকাল চারটার দিকে মালিক কারখানায় আসলে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, শিল্প পুলিশের প্রতিনিধি, সাধারণ শ্রমিকদের কে নিয়ে বৈঠকে বসেন, উক্ত বৈঠকে মালিক শ্রমিকের মধ্যে সমঝোতা না হওযার কারণে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন শ্রমিকরা। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
কারখানার পাশে থাকা একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পরলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বাসায় ফিরে যান।
ঐ ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে শ্রীপুর থানায়।একটি গত ১৫ ই মে ২০২৩ তারিখে এস আই মিনহাজুল হক শ্রীপুর সাব-জোন ইন্ডাস্ট্রিযাল পুলিশ- ২বাদী হয়ে ১৪৩/৩৩২/৩৩৩/ ৩৫৩/৪৩৬/৪২৭ ধারায় ঐ কারখানার/ (আট) ৮ জন শ্রমিককে আসামি করে, অজ্ঞাতনামা ৩০০ জন শ্রমিকের নামে মামলা দায়ের করেন শ্রীপুর থানায়।
২য় মামলাটি হয়েছে গত ১৭ ই মে ২০২৩ তারিখে ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার এস এম নুরুজ্জামান বাদী হয়ে। উক্ত ঘটনায় বেশ কিছু নিরীহ শ্রমিকরে গ্রেফতার করেছে দাবী শ্রমিক এবং পরিবারের।
উক্ত শ্রম অসন্তোষকে কেন্দ্র করে কারখানা কর্তৃপক্ষ ১৪ তারিখের একটি নোটিশের মাধ্যমে ১৫ তারিখ থেকে কারখানাটি ১২(১) ধারায় বন্ধ ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে ২৪ মে ২০২৩ তারিখে কারখানাটি খুলে দিয়ে প্রয় ৫০০ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে বরখাস্তের আদেশ দিয়ে চাকুরী হইতে বিরত রাখেন কারখানা কতৃপক্ষ দাবি শ্রমিকদের।
সমাবেশের যোগ দেওয়া শ্রমিক এবং নেতৃবৃন্দ দাবি করে বলেন কারখানার মালিক শ্রম আইনের কোন কিছুই তোয়াক্কা না করে শ্রমিকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছেন। সম্পূর্ণ হয়রানি মূলক এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুরাতন শ্রমিকদের বেছে বেছে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার জন্যই বাংলাদেশ শ্রম আইন,২০০৬ এর ধারা ২৩(৪) বেছে নিয়ে পুরাতন শ্রমিকদের বরখাস্ত করেছেন মালিকপক্ষ। শ্রমিকরা ন্যায়বিচার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
শ্রমিকরা ইতোমধ্যেই প্রতিকার চেয়ে উপমহাপরিদর্শক,কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর-গাজীপুর,জেলা প্রশাসক গাজীপুর,সভাপতি বিজিএমইএ,শিল্প পুলিশ-২ গাজীপুর এবং কারখানার মালিককে লিখিত দরখাস্ত দিয়েছেন কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমাধানের কোন উদ্যেগ গ্রহণ করেননি কেউ।
সমাবেশে যোগ দিয়ে বক্তারা বলেন সাম্প্রতিককালে লক্ষ করা যাচ্ছে শ্রমিকরা বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি তুললে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের নামে হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে চাকুরীচ্যুত করছেন মালিকপক্ষ যা মানবাধিকার লঙ্গন। বক্তরা বলেন ঈদকে সামনে রেখে ছাঁটাই নির্যাতন,হামলা মামলা বন্ধ,সময়মত বেতন বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে বক্তরা বলেন সাধারণ নিরীহ শ্রমিকরা জালাও পোরাও বিশ্বাস করে না, তারা কারখানায় কাজ করতে চান এবং সময়মত বেতন ভাতা পেলেই তারা খুশি থাকেন। উক্ত ঘটনায় প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্থির দাবি জানিয়ে বলেন কর্মরত শ্রমিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে যার ফলে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে আতংকো বিরাজ করছে এমনকি অনেকেই গ্রেফতারের ভয়ে কর্মস্থল ত্যাগকরে অন্যত্র চলেগেছেন। কোন নিরীহ শ্রমিককে যাতে হয়রানি করা না হয় সেব্যাপারে প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়ছেন বক্তরা।
Информация по комментариям в разработке