Скачать или смотреть অভিশপ্ত ইহুদি জাতির ইতিহাস, ইহুদী জাতির অপরাধের ইতিহাস, ইসরাঈলী গণহত্যার পঞ্চাশ বছর Part-6

চার : আবার যখন ইহুদিয়া রাষ্ট্রে প্রকাশ্যে মুর্তিপূজা ও ব্যভিচার চলতে
থাকে এবং হজরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে
সোচ্চার হন তখন ইহুদি রাজা ইউআস-এর নির্দেশে তাকে মূল হাইকেলে
সুলাইমানীতে “মাকদিস' (পবিত্র স্থান) ও “যবেহ ক্ষেত্র'-এর মাঝখানে
প্রস্তরাঘাতে হত্যা করা হয়।- ২ বংশাবলী, চব্বিশ অধ্যায়, একুশ শ্লোক।

পাচ : অতপর আশুরিয়াদের হাতে যখন সামারিয়াদের ইসরাঈলী রাষ্ট্রের
পতন হয় এবং জেরুযালেমের ইহুদি রাষ্ট্র মহাধ্বংসের সম্মুখীন হয় তখন
ইয়ারমিয়াহ' নবী নিজের জাতির পতনে আর্তনাদ করে ওঠেন । তিনি পথে - ঘাটে
অলিতে গলিতে নিজের জাতিকে সম্মোধন করে বলতে থাকেন সতর্ক হও,
নিজেদেরকে সংশোধন করো, অন্যথায় তোমাদের পরিণাম সামারিয়া
জাতির চেয়েও ভয়াবহ হবে ।” কিন্তু জাতির পক্ষ থেকে এ সাবধান বাণীর
বিরূপ জবাব আসে । চারদিক থেকে তার ওপর প্রবল বৃষ্টিধারার মতো
অভিশাপ ও গালি-গালাজ বর্ষিত হতে থাকে । তাকে মারধর করা হয়।
কারারুদ্ধ করা হয । ক্ষুধা ও পিপাসায় শুকিয়ে মেরে ফেলার জন্য রশি দিয়ে
বেঁধে তাকে কর্দমাক্ত কুয়ার মধ্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে জাতির
সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার এবং বিদেশী শক্রর সাথে আতাত করার
অভিযোগ আনা হয় ।- যিরমিয়, পনের অধ্যায়, দশ শ্লোক; আঠারো অধ্যায়,
বিশ থেকে তেইশ শ্লোক; বিশ অধ্যায়, এক থেকে আঠারো শ্লােক; ছত্রিশ থেকে চল্লিশ অধ্যায়।

ছয় : “আমুস' নামক আর একজন নবী সম্পর্কে বলা হয়েছে : যখন তিনি
সামারিয়ার ইসরাঈলী রাষ্ট্রের ভ্রষ্টতা ও ব্যভিচারের সমালোচনা করেন এবং এ
অসতকাজের পরিণাম সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করে দেন তখন তাকে চরমপত্র
দিয়ে বলে দেয়া হয়, এদেশ থেকে বের হয়ে যাও এবং বাইরে গিয়ে নিজের
নবুওয়াত প্রচার করো ।-আমুস, ৭ অধ্যায়, দশ থেকে তেরো শ্লোক ।

সাত : হজরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম যখন
ইহুদি শাসক হিরোডিয়াসের দরবারে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত ব্যভিচার ও নৈতিকতা
বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান তখন প্রথমে তাকে কারারুদ্ধ
করা হয়। তারপর বাদশাহ নিজের প্রেমিকার নির্দেশানুসারে জাতির এই
সবচেয়ে সৎ ও ন্যায়নিষ্ট ব্যক্তিটির শিরচ্ছেদ করে । কর্তিত মস্তক একটি থালায়
করে নিয়ে বাদশাহ তার প্রেমিকাকে উপহার দেয় ।-মার্ক, ৬ অধ্যায়, শতেরো থেকে উনত্রিশ
শ্লোক।

আট : সবশেষে হজরত ঈসা আলাইহিস সালামের বিরুদ্ধে বনী
ইসরাঈলের আলেম সমাজ ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের ক্রোধ উদ্দীপিত হয়। কারণ
তিনি তাদের পাপ কাজ ও লোক দেখানো সৎকাজের সমালোচনা করতেন ।
তাদেরকে ঈমান ও সৎকাজের দিকে আহ্বান জানাতেন। এসব অপরাধে তার
বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তৈরি করা হয়। রোমান আদালত তাকে প্রাণদণ্ড দানের
সিদ্ধান্ত করে । রোমান শাসক পীলাতীস যখন ইহুদিদের বললো, আজ ঈদের
দিন, আমি তোমাদের স্বার্থে ঈসা ও বারাব্বা ডাকাতের মধ্য
থেকে একজনকে মুক্তি দিতে চাই। আমি কাকে মুক্তি দেবো ? ইহুদিরা
সমস্বরে বললো, আপনি বারাব্বাকে মুক্তি দিন এবং ঈসাকে ফাসি দিন।-মথি,
সাতাইশ অধ্যায়, বিশ থেকে ছাব্বিশ শ্লোক।

এই হচ্ছে ইহুদি জাতির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের একটি কলংকজনক
অধ্যায় । কুরআনের উল্লেখিত আয়াতগুলোতে সংক্ষেপে এদিকেই ইংগিত করা
হয়েছে। বলা বাহুল্য যে জাতি নিজের ফাসেক ও দুশ্চরিত্র সম্পন্ন লোকদেরকে
নেতৃত্বের আসনে বসাতে এবং সৎ ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী লোকদেরকে
কারাগারে স্থান দিতে চায় আল্লাহ তাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ না করলে আর
কাদের ওপর অভিশাপ বর্ষণ করবেন ?

-তাফহীমুল কুরআন ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা - চুড়াশী থেকে ছিয়াশী।