গ্রামের নামকরা আহমেদ ভিলা সেজে উঠেছে নতুন সাজে। আহমেদ বংশের বুড়া-বুড়ি গত যাওয়ার পর এই আহমেদ ভিলা ছন্নছাড়া হয়ে পরে। গ্রাম ছেড়ে সবাই ঢাকায় পারি জমায়। কোনো বিশেষ কারন ছাড়া এখন আর এই আহমেদ ভিলা প্রান ফিরে পায় না। দীর্ঘ পনেরো বছর পর বিয়ের আমাজে মেতে উঠেছে আহমেদ বংশের সদস্যরা। বংশের বড় মেয়ের বিয়ে বলে কথা। আহমেদ বংশের বড় ছেলে সফিউল আহমেদের বড় মেয়ে তন্নি, মেজো মেয়ে তৃনা, ছোট মেয়ে তুলি। তার এই তিন মেয়ে তার জীবন। বড় মেয়েটা খুব শান্ত হলেও মেজো মেয়ে আর ছোট মেয়ের সম্পর্ক টম-জেরির মতো, তাদের খুনশুটিতে মেতে থাকে সফিউল আহমেদ।
জামাকাপড় প্যাকিং করছে তন্নি, শ্যামসুন্দর চেহারার গঠন সরল মেয়েটার,হাওয়ায় বারবার চেহারায় চুল আচড়ে দিচ্ছে, হাত দিয়ে চুল গুলো কানের কাছে গুজতে ব্যস্ত তন্নি।ধপধপ পা ফেলে চেচিয়ে উঠলেন সাহেলা খানম, তৃনা কোথায় তন্নি, এই ফাজিল মেয়েটাকে নিয়ে আর পারি না, গ্রামে যেতে হবে, পই পই করে বলে দিয়েছি সব গুছিয়ে রাখতে, এই মেয়ের কোনো হেলদোলই নেই, বোনের বিয়ে আরো আগ বাড়িয়ে সব করবে তা না, এখনও ছোটদের মতো আচরণ করে, তুলি কই, ওই পাজিটাকেও একটা শিক্ষা দিতে হবে। বারান্দা থেকে তুলি বেড়িয়ে আসে, সাহেলা খানমের কথায় জবাব দেয়, আমাকে নয় বরং তৃনাকে দেও, ওকে আমি বারণ করছিলাম, আইসক্রিম খেতে যাস না ২ঘন্টা পরেই আমাদের বের হতে হবে। আমার কথা শোনে নি। তন্নি ঠান্ডা গলায় বলে উঠল আহা মা থাক না, আমি তো সব গুছাচ্ছি। ও আমায় দেখিয়ে দিয়ে গেছে কি কি নিতে হবে। সাহেলা খানম দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন,অরঃপর রুম ত্যাগ করলেন।
স্কুটার নিয়ে আইসক্রিমের দোকানের সামনে গিয়ে থামল তৃনা। হেলমেট খুলে ঝুলিয়ে দিল স্কুটারে। মাথায় বেনী করা চুল গুলো হাটু ছুই ছুই। দুধ সাদা বর্নের মেয়েটা তরতর করে ঢুকে পড়লো শপে। লম্বা তেমন নয় ৫ফিট, যাকে বলে পুতুল সাইজ। যেকেউ দেখলে এই মেয়ের প্রেমে পড়তে বাধ্য, তবে তৃনা মেয়েটি এতোই দুষ্টু প্রকৃতির, কোনো ছেলে যে তাকে সামলাতে পারবে তার কোনো গ্রান্টি নেই। তৃনা বলে উঠে, এই মামা চটপট করে আইসক্রিম দেও তো।
আইসক্রিম খেয়ে আবার যেতে হবে।
দোকানী এক গাল হেসে বলল, তুমি তো আমার রেগুলার কাস্টমার, এতো তাড়া কিসের।আর বইলো না মামা, বড় টার বিয়ে হবে, গ্রামের বাড়িতে বিয়ে হবে, যেতে হবে তাড়াতাড়ি করো,এখানে বসেই শেষ করে বাসায় যাবো।
আইসক্রিম খেয়ে বাসার উদ্দেশ্যে ছুটলো তৃনা। পা টিপে টিপে বাসায় ডুকলো তৃনা, এর মধ্যেই সাহেলা খানম সামনে দাড়িয়ে পড়লো,বলতে লাগলো, তোকে কতবার বলব এতো আইসক্রিম খাবি না, কথা কেনো শুনিস না, কয়টা বাজে দেখ, তৃনা থতমত খেয়ে বলল, আম্মু ৫মিনিটে রেডি হচ্ছি, এই বলেই তৃনা ধপাস করে দরজার খিল আটকে দিল। সাহেলা খানম বলল, এই ফাজিল মেয়েটা জীবনে ভালো হবে না।
Информация по комментариям в разработке