Скачать или смотреть ক্ষমা চাইবার সঠিক পদ্ধতি

ইদানীং ক্ষমা চাইবার একটা অদ্ভুত রেওয়াজ দেখা যাচ্ছে। এলোপাথাড়ি কথা বলে, আমজনতার মাথা গরম করে, আম-ছালা হারাতে বসা লোকদের উপর ক্ষমা চাওয়ার চাপ আসলে তারা এই আচরণ দেখাচ্ছেন। তাদের একটা সংলাপ হুবহু এক – “যদি কারো মনে কোন কষ্ট দিয়ে থাকি...” বা “যদি কোন দোষ-ত্রুটি বা ভুল করে থাকি...”। সংলাপের সাথে শারীরিক ভাবভঙ্গিও কেমন যেন গা ছাড়া বা আন্তরিকতা-বিহীন। অনেকে আবার হাসিমুখেও ক্ষমা চাচ্ছেন।

এতে ক্ষমা চাওয়াটাও আন্তরিক দেখায় না। আর যাদের কাছে ক্ষমা চাইলেন তারাও ক্ষমা প্রার্থীকে মন থেকে ক্ষমা করতে পারেন না। তাতে আলাপ-আলোচনার পরিবেশ দিনে দিনে বিষাক্ত থেকে বিষাক্ত হচ্ছে। আর ক্ষমা প্রার্থীরা গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছেন। আন্তরিকতা-বিহীন ক্ষমা চাওয়ার চেয়ে না চাওয়া ভালো।

ক্ষমা মূলত: ৩ কারণে চাওয়া হয় –
১) দোষ-ত্রুটি বা ভুল করলে
২) কারো মনে বা শারীরিক কষ্ট দিলে
৩) দোষ-ত্রুটি বা ভুল করে কারো মনে বা শারীরিক কষ্ট দিলে
এগুলোর কোনটা হলেই সবাই ক্ষমা আশা করে।

দোষ-ত্রুটি বা ভুল করলে ক্ষমা চাওয়াটা ভদ্রতা। দোষ-ত্রুটি বা ভুল করে কারো মনে কষ্ট দিলে ক্ষমা চাওয়া নৈতিকভাবে বাধ্যতামূলক। তবে দোষ বা ভুল না করে প্রয়োজন সাপেক্ষে কারো মনে বা শারিরিক কষ্ট দিলে ক্ষমা চাওয়াটা অনেকটা ঐচ্ছিক হয়ে যায়।

তবে যে কারণেই ক্ষমা চাওয়া হোক, তা যেন অন্তত বাহ্যিক ভাবে আন্তরিক দেখায়। একথাটা এভাবে বলার কারণ হচ্ছে, কার মনে কি ভাবনা চলছে আমরা আসলে সঠিকভাবে সব সময় আঁচ করতে পারিনা। তাই বাহ্যিক হাবভাবকে সত্য হিসেবে মেনে নেয়া ছাড়া প্রায় সময় উপায় থাকেনা। এটা অবশ্য যারা অভ্যাসগত ভাবে মিথ্যা বলেন তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

আন্তরিক ক্ষমা চাওয়ার কয়েকটি লক্ষণ হলো –
১) ক্ষমা চাওয়ার সময় না হাসা। কারণ, হাসি পরিস্থিতির গাম্ভীর্যকে হালকা করে ফেলে।
২) শারীরিকভাবে আন্তরিকতার ছাপ প্রকাশ পাওয়া।
৩) দোষ-ত্রুটি বা ভুল ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত ছিল তা ক্ষমা প্রার্থী নিজ থেকে পরিষ্কার করে বলা এবং অনুতাপ করা। এবং পুনরাবৃত্তি না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা।
৪) ক্ষতিগ্রস্তকে মানসিক বা শারীরিকভাবে আক্রান্ত করেছেন সেটা ক্ষমা প্রার্থী নিজ থেকে নিঃশর্ত ভাবে স্বীকার করা। আর কষ্টটা যদি প্রয়োজনে দেয়া হয়, তাহলে সে প্রয়োজনটা কি ছিল সেটা উল্লেখ করা উচিৎ।

ক্ষমা যদি আপনি চাইতে চান, তাহলে উপরে উল্ল্যেখিত শর্তগুলো পূরণ করে ক্ষমা চান। এছাড়া নিজের বা অন্যের সময় নষ্ট করবেন না।
ক্ষমা প্রার্থী উপরের শর্তগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হলে, আন্তরিকতার ঘাটতি আছে বলে ধরে নিতে হবে। এ ধরনের লোকদের বর্জন করা উচিৎ। এদের ব্যাপারে সাবধান থাকা উচিৎ।
আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যারা ক্ষমা চাওয়ার পরও একিই ভুল বারবার করে, তাদের ক্ষমা প্রর্থনার কোন মূল্য ন‍েই। তাদেরকে ক্ষমা চাইতে বলা সময়‍ের অপচয় ছাড়া কিছু নয়।