Скачать или смотреть দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার গান্ধর্ব বিবাহ । শকুন্তলার কাহিনী । বিশ্বামিত্র ও মেনকা অপ্সরা মিলন

শকুন্তলার কাহিনী । দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার গান্ধর্ব বিবাহ । বিশ্বামিত্র ও মেনকা অপ্সরা মিলন

#হিন্দুশাস্ত্রকথা #মহাভারতকৃষ্ণকথা #mahabharat #shakuntala

বিশ্বামিত্র নামে এক বড় ঋষি ছিল। সে উপাসনা করতে করতে অনেক এগিয়ে যাচ্ছিল। দেবতারা মনে করলো বিশ্বামিত্র মুনি যেভাবে তপস্যা করছে ক্ষমতায় তাদেরকেও ছাড়িয়ে যাবে। তাছাড়া বিশ্বামিত্র মুনি ইন্দ্রকে ভয় দেখিয়েছিল যে তপস্যা করে ক্ষমতা অর্জন করার পর সে নতুন করে আলাদা এক স্বর্গ গঠন করবে। এই কথাই ইন্দ্র দেব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তাই দেবতারা মেনকা নামের এক অপ্সরাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলো তার মনোযোগ সরানোর জন্য। তারা সফলও হলো। মেনুকার রূপ দেখে তার প্রতি আকৃষ্ট হলেন ঋষি বিশ্বামিত্র। স্বাভাবিক দুজনের মিলন হল। অপ্সরা মেনকার গর্ভে জন্ম নিল কন্যা যার নাম হয় শকুন্তলা।




শকুন্তলার জন্মের পর অপ্সরা মেনুকা শকুন্তলাকে জঙ্গলের মধ্যে রেখে চলে গেল। এই সময় এক ঝাঁক শকুন বা একটা শকুন্ত তাকে লালন পালন করতে লাগলো। এই শকুন্ত পাখি থেকেই তার নাম হয় শকুন্তলা। শকুন্তলা শকুন্ত পাখির পাখনার আশ্রয়ে বড় হতে থাকে। একসময় মহামুনি কণ্ব শকুন্তলাকে শকুন্তের কাছে দেখতে পান। তিনি শকুন্তলার দায়িত্ব নেন ।




শকুন্তলা কণ্বের আশ্রমে বড় হতে থাকে। একদিন দুষ্মন্ত নামে এক রাজা হরিণশিকারে বনে আসেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে তিনি কণ্বের আশ্রমে যান। তবে খন কণ্ব আশ্রমের বাইরে ছিলেন। কণ্বের আশ্রমে দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে দেখলো, শকুন্তলাকে তার পছন্দ হলো। এই সময় গান্ধর্ব মতে তারা বিবাহ করলো। তাদের বিয়ে হলো এবং মিলনের ফলে শকুন্তলা গর্ভবতী হলো।রাজা দুষ্মন্ত খবর পেলেন তার রাজ্যে তাকে প্রয়োজন। সে শকুন্তলাকে একটি আংটি দিয়ে বললো আমার রাজ্যে এটা নিয়ে গেলে তোমাকে আমি চিনবো।
এরপর রাজ কার্যের জন্য দুষ্মন্ত নিজ রাজ্যে ফিরে গেলেন।


কণ্ব একসময় ফিরে এলেন, ফিরে এসে শকুন্তলা ও দুষ্মন্তের কথা জানতে পারলেন। প্রথমে তিনি মেনে নিতে পারেন নি, কিন্তু পরে মেনে নিয়েছিলেন।






মাঝে এক ঘটনা ঘটলো। শকুন্তলার কাছে দুর্বাসা নামে এক ঋষি জল চেয়েছিলো। দুর্বাসা ঋষি কথায় কথায় অভিশাপ দিতো। শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তকে নিয়ে গভীর ভাবনায় ছিল, তাই জল দিতে দেরি হয়েছিলো। তাই দুর্বাসা ঋষি শকুন্তলাকে অভিশাপ দিলো- তুই যার জন্য আমাকে জল দিতে দেরি করলি সে তোকে কখোনোই চিনতে পারবে না। এই সময় শকুন্তলা ঋষি দুর্বাসার পা ধরে কাকুতি-মিনতি করলে দুর্বাসা অভিশাপটি পুনর্বিবেচনা করেন, এবং তিনি বলেন প্রমাণ হিসেবে কিছু দেখালে তবেই দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে চিনতে পারবে।












ইতিমধ্যে শকুন্তলা একটি ছেলে শিশুর জন্ম দিলো। তার নাম ছিল ভরত । কয়েকবছর পর আর থাকতে না পেরে ভরতকে নিয়ে শকুন্তলা রাজা দুষ্মন্তের সঙ্গে দেখা করতে গেল। শকুন্তলা ও ভরত নৌকা দিয়ে যাচ্ছিল এমন‌সময় শকুন্তলা জল খেতে গেলে তার হাত থেকে আংটিটা খুলে নদীর জলে পড়ে যায়।






আংটি খুঁজে না পেয়ে আংটি ছাড়াই শকুন্তলা দুষ্মন্তের কাছে যান। তাকে সব ঘটনা বলেন কিন্তু দুষ্মন্ত সব কথাই ভুলে গেছেন। অনেক চেষ্টা করেও শকুন্তলা দুষ্মন্তকে পুরনো কথা মনে করাতে ব্যর্থ হন। বাধ্য হয়ে শকুন্তলা প্রাসাদ থেকে বের হয়ে আসেন। সেই রাজ্যেই এক পরিবারে আশ্রয় নেন।






শকুন্তলার আংটিটা একটা মাছ গিলে ফেলেছিল। সেই মাছটা এক জেলে ধরে ফেলে। জেলে মাছের পেটের ভিতর আংটিটা পায় তাতে দেখে যে এটার মধ্যে দুষ্মন্তের নাম লেখা আছে, তখন সে আংটিটা দুষ্মন্তের কাছে নিয়ে গেল। তবুও রাজা দুষ্মন্ত মনে করতে পারলো না। পরে সে একটি দৈববাণী শুনতে পেলেন- আংটিটা শকুন্তলার এবং সে তোমার স্ত্রী।


এই জায়গায় আরেকটি কাহিনী প্রচলিত আছে। একদিন রাজা দুষ্মন্ত দেখেন একটা বাচ্চা সিংহকে হা করিয়ে তার দাঁত গুনছে। রাজা দুষ্মন্ত ছোটবেলায় এই একই ভাবে খেলা করতেন। বাচ্চা ছেলেটিকে দেখে দুষ্মন্ত তার কাছে গিয়ে তার পরিচয় চান। ছেলেটি বলে তার নাম ভরত এবং সে রাজা দুষ্মন্তের সন্তান। যাই হোক এই ঘটনার পর তিনি শকুন্তলাকে খুঁজে বের করেন এবং তাকে স্বীকার করে নেন। এইভাবে দুষ্মন্ত ও শকুন্তলার পুনর্মিলন ঘটে। একসময় ভরত বড় হয়। তাকে দায়িত্ব অর্পণ করে দিয়ে রাজা শেষ জীবন ধর্মকর্মে কাটিয়ে দেন।