Скачать или смотреть পাগল মানুষের কথা শুনে সবাই অবাক /গল্প নং ১৭/ সত্য গল্প /ওয়াজ

পাগলের কথা শুনে সবাই অবাক গল্প নং ১৭ Syed channel 24 Syed imam azam waz

মনের অসুখ হলে মানুষ পাগল হয়েছে বলা হয়। ফারুক ভাই বলছিলেন তার বোন জামাই তখন বাংলাদেশ সরকারের জয়েন্ট সেক্রেটারি। তিনি ছিলেন খুবই গুরুগম্ভীর ধরনের মানুষ। অফিস থেকে ফাইল নিয়ে বাসায় আসতেন এবং অনেক রাত পর্যন্ত সেগুলোর নিষ্পত্তি করতে ব্যস্ত থাকতেন। এর বাইরের অবসর সময়টা বিভিন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞানের বই-পুস্তক পড়ে কাটাতেন। ফারুক ভাইয়ের বোন অতিব্যস্ত স্বামীর বিরুদ্ধে প্রায়ই বিষোদগার করতেন তবে অবস্থার উন্নতি না হওয়াতে তিনিও এ নিয়ে আর কথা বলতেন না।
একদিন সকালবেলা জয়েন্ট সেক্রেটারি সাহেব নাস্তার টেবিলে সহসাই নানারকম অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেন। তিনি তাঁর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানারকম হুমকি পূর্ণ কথা বলতে শুরু করেন যা কিনা কোনভাবেই তাঁর উচ্চ দায়িত্ব সম্পন্ন সরকারি পদ এবং মানসিক অবস্থার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তাঁর স্ত্রী ঘাবড়ে গিয়ে ডাক্তার ভাগ্নেকে ফোন করলেন।
পাশের ভবনে ডাক্তার ভাগ্নে বাস করত। মামির জরুরী ফোন পেয়ে ডাক্তার সাহেব দ্রুতই বাসায় এলেন। মামার এলোমেলো আচরণ দেখে এবং অসংলগ্ন কথা শুনে বুঝতে পারলেন জয়েন্ট সেক্রেটারি সাহেবের মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। ডাক্তার ভাগ্নে ফোন করে সেদিন বিকেলে মনোরোগ চিকিৎসক ডাক্তার মোহিত কামালের অ্যাপোয়েন্টমেন্ট নিলেন। তারপর মামাকে বুঝিয়ে বিশ্রাম নিতে বলে নিজ কর্মস্থল হাসপাতালে চলে গেলেন।
বিকেলবেলা হাসপাতাল থেকে ফিরে জয়েন্ট সেক্রেটারি মামাকে নিয়ে ডাক্তার ভাগ্নে মনোরোগ চিকিৎসক মোহিত কামালের কাছে যেতে চাইলেন। কিন্তু মামাকে তিনি ডাক্তারের চেম্বারে যেতে কিছুতেই রাজি করাতে পারলেন না। মামা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে বলতে লাগলেন, আমি কি পাগল হয়ে গেছি যে পাগলের ডাক্তারের কাছে যাব? একপর্যায়ে তিনি ভয়ানক ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন এবং ঘরে থাকা জিনিষপত্র ভাঙচুর করতে লাগলেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ভাগ্নে পাশের রুমে গিয়ে ডাক্তার মোহিত কামাল কে ফোন করলেন। ডাক্তার মোহিত রোগী সহিংস হয়ে উঠেছে জেনে বললেন, রোগীকে কোনরকমে ঘন্টাখানেক সামলিয়ে রাখুন আমি টিম পাঠাচ্ছি। ওই টিম তাঁকে আমার চেম্বার কাম হাসপাতলে নিয়ে আসবে।
ঘন্টাখানেক পরে এম্বুলেন্স সহ তিনজন দশাসই চেহারার লোক বাসায় এল। জয়েন্ট সেক্রেটারি সাহেব সোফায় বসে চিৎকার-চেঁচামেচি করছিলেন। ডাক্তার সাহেবের চেম্বার থেকে আসা দুইজন চট করে সোফার দুই পাশে বসে পড়লেন তারপর তৃতীয় জনের সহায়তায় তাঁকে নিয়ে এম্বুলেন্সে তুললেন। ঘটনার আকস্মিকতায় জয়েন্ট সেক্রেটারি সাহেব ঘাবড়ে গিয়েছিলেন তবে এম্বুলেন্স চলতে শুরু করতেই তিনি পকেট থেকে মোবাইল বের করে রমনা থানার ওসি সাহেবকে ফোন দিয়ে বললেন, আমি কেবিনেট সেক্রেটারিয়েটের জয়েন্ট সেক্রেটারি বলছি। আমাকে একদল দুর্বৃত্ত কিডন্যাপ করে নিয়ে যাচ্ছে, আমাকে উদ্ধার করুন। জয়েন্ট সেক্রেটারি সাহেবের স্ত্রী তাঁর কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে বললেন, ওসি সাহেব, আমি ওনার স্ত্রী বলছি। তিনি অসুস্থতা বোধ করাতে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। কিন্যাপের মত কিছু ঘটেনি। কথা শেষ না হতেই জয়েন্ট সেক্রেটারি সাহেব ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তৎকালীন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি, অর্থনীতি বিষয়ে গ্রন্থ প্রণেতা এবং নিয়মিত টেলিভিশনে টক শোতে অংশ গ্রহণকারী বসকে ফোন করলেন। তিনি বলতে লাগলেন স্যার একদল দুর্বৃত্ত আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, আমাকে উদ্ধার করার জন্য ব্যবস্থা নিন।