এই যে কোরক চাঁদের, ফুটে উঠেছে ঝরনায়
আবার, পড়শী জানালা বরাবর এতো দরখাস্ত
অথচ নিশ্চুপ পাড়া শুনশান ঘুমে, যেন ফাঁকিবাজ
বেহারা পালকী রেখে নিদ্রাতুর হয়। আর
এসব দেখে কপাল আর নাকের ডগায় স্বেদ
ফুটে ওঠে চন্দনগন্ধা, আর বেজে ওঠে এস্রাজ।
তার রিংটোন নিশ্চুপ, ঘুনে ধরা স্পিকার আর
সংবেদনশীল শব্দটাকে কেমন আফিম খাইয়ে ভুলিয়ে দিয়েছে সব কথা।
রাংতা মেলে রাখি চোখে, জোছনা পড়লেই
সে এক সাগর হয়। মনে মনে ভাবি, ভালোবাসি এইসব।
আর মনে পড়ে চোখ। সেও এক উদগম, কলিকা বোল।
এতকিছু লিখে খুব অহংকারে আঙ্গুলের ডগা
গোটা পাহাড়টাকেই আলো করে বসে থাকে…
মা
মা, তুমি সমগ্র শীতকাল জুড়ে লেপের ওম। এতো এতো দূর থেকে কাছে যাওয়া যায় না আর। অভিভূত রোদের মত ডানায় তাপ আঁকি, আর যে নাম যপি সে তুমি। তুমিই ভালোবাসা, ভাটি ও উজান। তুমি অস্তিত্ব, তুমি সত্ত্বা। যে বৃষ্টিতে এবারে এমন কুয়াশা নেমে এলো সে খুব মুষলধার ছিলো না। তবু হালকা ফোটাতেও কী দারুণ ভাবে ভিজে গেছে সব, পাঁজরের হাড়গুলো জানে। একদিন কোথাও দেখা হলে, আমার মৃত্যুর পর, জেনে নিও কেমন শিউলির মত ঝরছো অস্তিত্বে। আর তাই বন্ধ করে সমস্ত জানালা উত্তরের মেঘ ঠেকিয়ে রাখি। এসব কিছুই বিলম্বিত করে, কখনো বিড়ম্বিতও। এইরকম বিড়ম্বনা কেও জ্বর বলে ডাকি, তবু এসো!
চলো দিগন্ত জুড়ে মেঘের পোস্টারে আঁকি কিছুটা আলো তোমার মুখের মতো, এমন শীতকালে তোমাকে ঈশ্বরের মতো ডাকি। একটু হাঁটো আলতো পায়ে, প্রাংশু হাত মাথায় রেখে বিড়বিড় করে বলো আগের মতো, 'নিজেকে কষ্ট দিস,বড় অন্যায় এসব'। শুনে শুনে আবার ভিজে উঠুক চোখ বারবার।
আর শীতকাল! লাল লাল বড় টিপের গায়ে খোদাই করুক অপরূপা জোছনা, আর হীম বাতাস। মাগো, তুমিই ভালোবাসা, তোমাকে ডাকি; অথচ তুমি শতাব্দীপূর্ব বধিরের মিছিলে চলে গেছো জানি, কেবল বিশ্বাস হয়না এখনো।
প্রেম ২
স্ফীত হয়ে আসে প্রচ্ছায়া কার ম্লান
ধীর রজনী বয়ে যায়, বসিবার কাল
মুখোমুখি। আরো কতো শত চন্দ্রবছর পর
চাঁদ দেখে দেখে ভাসে যদি মুখখানি মোর,
বুঝবে সেদিন দীপ্তি ছিলো কার, কার বুক
উচাটন, রক্ত ছলকে ওঠা চোখ জুড়ে সুখ
গ্রাস করে রেখেছিলো কাকে, করতলে অভিমান!
এই যে জলজ মরণ কূপের ধারে,
দুই চোখ জুড়ে শুধু ঘুম ভর করে
নিভে আসে জোছনা, ফোটে তারা ফুল
চোখের পাতায় তবু সে জ্বলে নিশ্চল
খুব কাছাকাছি এসে চলে যায় দূরে
ভালোবাসা খুব ভুল বলে ঘুরে ঘুরে
এমন বাতাস; ঘুম ভাঙ্গে বুঝি পাখী
সেই নাম জপে, প্রতি রোমকূপে ভোরের শিশির মাখি।
মনে মনে বলি, মরেই তো ছিলাম আজীবন জীবনের বেশে
জীবনে জীবন জড়িয়ে দিতে চেয়ে, মৃত্যুই দিলে শেষে!
নিন্দিত নন্দন কাল
মানুষ তীব্র জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে দ্যাখে
এইসব নষ্ট দ্রাঘিমায়; ম্যামথের দর্প চূর্ণ দর্পণ
আমাদের লৌকিকতায় শৌখিনতা নেই, তাই
এক্কাগাড়ির মতো দেহে বয়ে চলি শব; নিস্তব্ধতা
কায়ার অন্তে ছায়াই চূড়ান্ত সত্য বলে নুয়ে থাকা।
রক্তে যখন ঘাই মারে বিষ বল্লম, কথার আফিম
খুব পান করি হলাহল। নিজ নখের দিকে তাকাই
আর তারপর…
… কেটে ফেলি এক এক করে
এই সব নিকষ রাত্রির পথ সার্টিন সিল্কের মতো
আকাশ আলোহীন হলে মগজে রুয়ে দিয়ে নক্ষত্র বিদ্যুৎ
টেলিস্কোপ চোখে তাকিয়ে থাকি; সরু হতে হতে
নিজেকে এ্যামিবা মনে হলেও কোঁৎ করে গিলে ফেলি
গোটা মন; মাস্তুল সহ এক জাহাজ, বিপুল জলরাশি।
ঠোঁট গোল করে শীষ বাজিয়ে আঁকি জ্যান্ত কার্তিকেয়
পোতাশ্রয়; অজানু লম্বিত দীর্ঘশ্বাস আর নিশ্চুপ আর্তনাদ
দর্পের সিঁড়ি প্রকট হলে…
…খুঁজি বেলচা, কুঠার, ভাঙ্গি চৌকাঠ
তারপর? ড্রয়ার হাতড়ে ইনহিলার খুঁজে না পেয়ে
প্লাগ অন হয় নেবুলাইজার; হুশসস করে
ছেড়ে যায় ট্রেন। এই শেষ স্টেশন…
Информация по комментариям в разработке