#Sajek # Sajek-Tour#Travelvlog#সাজেকভ্যালী
#খাগড়াছড়ি #আলুটিলা-গুহা#sajek vally travell guide
#ভিরাল
সাজেক ভ্যালি
সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley), বর্তমান সময়ে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্য সাজেক। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হিসাবে খ্যাত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ১৮০০ ফুট। সাজেকের অবস্থান রাঙামাটি জেলায় হলেও ভৌগলিক কারণে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেক যাতায়াত অনেক সহজ। খাগড়াছড়ি জেলা থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার আর দীঘিনালা থেকে ৪০ কিলোমিটার।
কি দেখবেন
চারপাশে মনোরম পাহাড় সারি, সাদা তুলোর মত মেঘের ভ্যালি আপনাকে মুগ্ধ করবেই। সাজেক এমনই আশ্চর্য্যজনক জায়গা যেখানে একই দিনে প্রকৃতির তিন রকম রূপের সান্নিধ্যে আপনি হতে পারেন চমৎকৃত। কখনো বা খুব গরম অনুভূত হবে তারপর হয়তো হটাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাবেন কিংবা চোখের পলকেই মেঘের ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাবে আপনার চারপাশ। প্রাকৃতিক নিসর্গ আর তুলোর মত মেঘের পাহাড় থেকে পাহাড়ে উড়াউড়ির খেলা দেখতে সাজেক আদর্শ জায়গা।
কংলাক পাহাড় হচ্ছে সাজেক ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। আর সাজেক ভ্যালির শেষ গ্রাম কংলক পাড়া লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকা। কংলাক পাড়া থেকেই কর্ণফুলী নদী উৎপত্তিস্থল ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায়। চাইলে রুইলুই পাড়া থেকে দুই ঘন্টা ট্রেকিং করে কমলক ঝর্ণা দেখে আসতে পারবেন। সুন্দর এই ঝর্ণাটি অনেকের কাছে পিদাম তৈসা ঝর্ণা বা সিকাম তৈ
দিন কিংবা রাত সাজেক যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মত, সময় গড়ায় তবু সাজেক পুরাতন হয় না। সাজেকে গেলে অবশ্যই সকালে ভোরের সময়টা মিস করবেন না। মেঘের খেলা আর সূর্যোদয়ের আলোর মেলা এই সময়েই বসে। এই জন্যে আপনাকে খুব ভোরে উঠে চলে যেতে হবে হ্যালিপ্যাডে, সেখান থেকেই সবচেয়ে সুন্দর সূর্যোদয় দেখা যায়। বিকেলের কোন উঁচু জায়গা থেকে সূর্যাস্তের রঙ্গিন রূপ আপনাকে বিমোহিত করবেই। আর সন্ধ্যার পর আকাশের কোটি কোটি তারার মেলা, আপনার প্রাণ জুড়িয়ে দিবে নিমিষেই। আকাশ পরিস্কার থাকলে দেখা পাবেন মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথের।
ঘুরে দেখতে পারেন চারপাশ ও আদিবাসীদের জীবন যাপন। সহজ সরল এই সব মানুষের সান্নিধ্য আপনার ভাল লাগবে। আর হাতে সময় থাকলে সাজেক ভ্যালি থেকে ফেরার পথে ঢু মেরে আসতে পারেন হাজাছড়া ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহার থেকে।
কখন যাবেন
সাজেকের রূপের আসলে তুলনা হয় না। সারা বছরই বর্ণিল সাজে সেজে থাকে সাজেক। বছরের যে কোন সময় আপনি সাজেক ভ্রমণ করতে পারেন। তবে জুলাই থেকে নভেম্বর মাসে সাজেকের চারপাশে মেঘের খেলা দেখা যায় বেশি। তাই এই সময়টাই সাজেক ভ্রমণের জন্যে সবচেয়ে ভালো।
সাজেক যাবার উপায়
সাজেকের অবস্থান রাঙামাটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা হয়ে সাজেক যাতায়াত অনেক সহজ। তাই প্রথমেই আপনাকে খাগড়াছড়ি আসতে হবে। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, সৌদিয়া, শ্যামলি, শান্তি পরিবহন, এস আলম, ঈগল ইত্যাদি বাসে করে যেতে পারবেন। নন এসি এইসব বাস ভাড়া ৬২০ টাকা। এসি বাসে যেতে চাইলে সেন্টমার্টিন হুন্দাই রবি এক্সপ্রেস, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, রিলাক্স ট্রান্সপোর্ট, শ্যামলী, দেশ ট্র্যাভেলস, ইকোনো সার্ভিস ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন। আর বাসগুলো সাধারণত রাত ১০ টার মধ্যে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া শান্তি পরিবহন বাস সরাসরি দীঘিনালা যায়, ভাড়া ৬৮০ টাকা। ঢাকায় গাবতলী, কলাবাগানসহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে এইসব পরিবহণের কাউন্টার। ছুটির দিন গুলোতে যেতে চাইলে আগে থেকেই টিকেট কেটে রাখা ভালো নয়তো পড়ে টিকেট পেতে ঝামেলা পোহাতে হতে পারে।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরের কাছ থেকে জীপগাড়ি/চাঁন্দের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে সাজেক ভ্যালি ঘুরে আসতে পারবেন। যাওয়া আসা সহ দুইদিনের জন্যে ভাড়া নিবে ৯,০০০-১০,৫০০ টাকা। এক গাড়িতে করে ১২-১৫ জন যেতে পারবেন। তবে লোক কম থাকলে অন্য কোন ছোট গ্রুপের সাথে কথা বলে শেয়ার করে গাড়ি নিলে খরচ কম হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে সিএনজি দিয়ে সাজেক যেতে পারবেন। রিজার্ভ ভাড়া লাগবে ৪০০০-৫০০০ টাকা। তবে পাহাড়ি উঁচু নিচু রাস্তা বলে সিএনজি দিয়ে ভ্রমণ না করাই ভালো।
জীপ সমিতি ও পার্বত্য যানবাহন মালিক কল্যান সমিতি কর্তৃক খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার ভাড়ার তালিকা
যাত্রার ধরণ পিক আপ গাড়ি জীপ (চাঁদের) গাড়ী
সাজেক যাওয়া ও আসা ৬,০০০ ৬,০০০
সাজেক ১ রাত্রি যাপন ৮,৩০০ ৭,৭০০
সাজেক ১ রাত্রি যাপন, আলুটিলা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত ব্রিজ সহ ১০,৪০০ ৯,০০০
সাজেক ২ রাত্রি যাপন ১১,১০০ ৯,৬০০
সাজেক ২ রাত্রি যাপন, আলুটিলা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত ব্রিজ সহ ১৩,২০০ ১১,৪০০
এছাড়া আপনি যদি একা বা ২-৩ জন হন তাহলে খাগড়াছড়ি শাপলা চত্ত্বর থেকে অনেক গ্রুপ পাওয়া যায়, সেখানে অন্য গ্রুপের সাথে কথা বলে তাদের সাথে শেয়ার করে যেতে পারবেন।
সাজেক এর খাওয়া দাওয়া
সব রিসোর্টে খাবার ব্যবস্থা আছে তাই আগেই রিসোর্টগুলোতে বলে রাখলে পছন্দমত রান্না করে দিবে সেক্ষেত্রে প্রতিবেলা প্রতিজন ১০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে আর মেনু হিসেবে পাবেন ভাত আলুভর্তা, মুরগীর মাংস ইত্যাদি। চাইলে রাতে বার বি কিউও করতে পারবেন। এছাড়া আদিবাসী ঘরেও খাওয়া যায়, আগে থেকেই বলে রাখতে হবে কি খাবেন, তাহলে রান্না করে দিবে। সাজেকে খুব সস্তায় পেঁপে, আনারস, কলা ইত্যাদি ফল পাবেন চেখে দেখতে ভুল করবেন না।
সাজেক ভ্রমণ টিপস
সাজেকে অনেক জায়গায় বিদুৎ নেই, সোলার পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। সাথে করে পাওয়ার ব্যাংক রাখতে পারেন।
সাজেকে শুধুমাত্র রবি, এয়ারটেল ও টেলিটক এর নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায়।
সাজেক যাবার পথ অনেক আঁকাবাঁকা ও উঁচু নিচু, তাই এই পথ বিপদজনক। জীপের ছাঁদে ভ্রমনে সতর্ক থাকুন।
সাজেক যেতে গাইডের প্রয়োজন হয় না।
আদিবাসীদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিয়ে নিন। অনুমতি ছাড়া ছবি তুলবেন না।
আদিবাসী মানুষজন সহজ সরল তাদের সাথে ভদ্র ব্যবহার করুন ও তাদের কালচারের প্রতি সম্মান দেখান।
Информация по комментариям в разработке