Скачать или смотреть বেলা শেষে একদম একাকী এক শিক্ষকের গল্প-ড. সুনীতি ভূষণ কানুনগো

Dr. Suniti Bhushan Kanungo.

ড. সুনীতি ভূষণ কানুনগো। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরের ডিগ্রি লাভ করা প্রথম ছাত্র। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপনা জীবন শেষে আছেন লেখালেখি ও গবেষণা নিয়ে। মহষী নারী, পরান রহমান প্রতিষ্ঠিত- স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘ঘাসফুল’ এ মানুষটির হাতে এ বছর (তাঁর মৃত্যুর পর প্রবর্তিত) “পরান রহমান স্মৃতি পদক ২০১৭” তুলে দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করেছেন।
স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিরাশিউর্ধ এ প্রবীণ এখন জীবন যাপন করছেন একা একটি ভাড়া ফ্ল্যটে। বিভিন্ন কক্ষে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য বই। আসবাব আর দেয়ালে ভরে আছে পুরুনো ধুলো আর ঝুল। দু’বেলা কাজের লোক এসে রান্না করে দিয়ে চলে যায়। বলতে গেলে এইটুকু তার মানব সঙ্গ। শুনেছি মানুষ একা বাঁচতে পারে না। তবে এ মানুষটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে একা বেঁচে আছেন। সঙ্গী শুধু বই। একমাত্র সন্তান আমেরিকা প্রবাসী। তার স্ত্রী আমেরিকান। তাদের আছে দুটো ছেলে মেয়ে। আজকের এ ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল টেকনোলজির দেশে বসবাসকারী ছেলে বাবাকে নাকী ফোন করে ২০/২২ দিন পর। তাও ভাইবার, হোয়াটসএ্যপ বা ইমুতে ভিডিও কল নয়। টেলিফোনে। অথচ যে বাবা আজ এতটা বয়সী একা, তাঁর খোঁজ নেয়ার কথা ছেলের দিনে কম পক্ষে তিন বার! এটাই হলো বাস্তবতা। ছেলে নাকী বলেছে, “বাবা তোমার খারাপ লাগলে সঙ্গে সঙ্গে ফোন করো, আমি আমার পাসপোর্ট রেডি রেখেছি, ২/৩ দিন মাত্র লাগবে দেশে পৌঁছুতে।” তিরাশি বছর বয়সী এ মানুষটি কী আসলে পারবেন তাঁর অসুস্থতায় ছেলেকে ফোন করে জানাতে? খারাপ লাগলে, কষ্ট হলে বা চরম মুহূর্তে এ মানুষটির মুখে সামান্য পানি তুলে দেয়ার মতোও কেউ নেই। আমার ধারনা সন্তানহীন প্রবীণরা এ প্রবীণের জীবনের গল্প জেনে তাঁদের নিজেদের সন্তান না থাকার কষ্ট ভুলতে প্রেরণা পাবেন। আর তরুণ, তরুণী যারা ভবিষ্যতের বাবা-মা, এবং এখন যারা বাবা-মা তারা নিজেদের এমন ভবিষ্যৎ কল্পনা করে দুঃখ পাবেন।