Скачать или смотреть এটি একটি সাধারণ পুলিশ অফিসারের ভিন্নধর্মী গল্প। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি বৈদ্যনাথ বর্মন

Exclusive  Exclusive  Exclusive


এটি একটি সাধারণ পুলিশ অফিসারের ভিন্নধর্মী গল্প। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি বৈদ্যনাথ বর্মন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুর পুলিশ স্টেশনে বর্তমানে সাব ইন্সপেক্টর অফ পুলিশ পদে কর্মরত রয়েছেন। এই পুলিশ অফিসার ইতিমধ্যেই তার বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে স্থানীয় এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন। অসুস্থ বা বয়স্ক কোনো ব্যক্তি যাকে দেখার কেউ নেই, দুস্থ বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা, অনাথ ছোট বাচ্চা ছেলে-মেয়ে যাদের পড়াশোনা বা খাওয়া-দাওয়া অভাবের তাড়নায় প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে, স্থানীয় এলাকায় যে সমস্ত গরিব মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে না টাকা পয়সার অভাবের জন্য এবং সর্বোপরি ভবঘুরে কোন পুরুষ বা মহিলা যাদেরই যখন সাহায্যের দরকার হয়ে পড়েছে বৈদ্যনাথ বাবু সেই খবর পেলেই ছুটে গেছেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। তিনি তার সাধ্যমত তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই সমস্ত অভাব বা প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করেছেন। বৈদ্যনাথ বাবুর এই কাজের জন্য সারা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষ তাকে এক ডাকে চেনে।
বছর ৪০ এর বৈদ্যনাথ বাবুর জন্ম রায়গঞ্জের বিন্দোল গ্রামে। প্রত্যন্ত এলাকার অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা বৈদ্যনাথ বাবুর মা তাকে মুড়ি-চিড়া ভেজে কষ্ট করে মানুষ করেছেন। তার বাবা এবং মায়ের একমাত্র স্বপ্ন ছিল ছেলেকে পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষ করা যাতে পরবর্তীকালে সেই ছেলে ভালো চাকরি পেয়ে গরিব এবং দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ায়। ছেলে বাবা-মা কে কথা দিয়েছিল যে সে নিশ্চয়ই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দুস্থ এবং অভাবী লোকের পাশে দাঁড়াবে এবং তার নিজের সাধ্যমত তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করবে।
বৈদ্যনাথ বাবু বলেন, "ছোটবেলায় খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি। দারিদ্র্য এবং কষ্ট কি তা নিজের চোখে দেখেছি। মা-বাবা স্বপ্ন দেখেছিল ছেলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যারা তার মত দারিদ্র এবং কষ্টের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করছে একটু ভালোভাবে বাঁচার জন্য তাদের পাশে দাঁড়াবে। আমি তাই বাবা-মা কে কথা দিয়েছিলাম তাদের এই স্বপ্ন অবশ্যই আমি পূরণ করব। আর জীবনে কখনো কোন অসদুপায়ে রোজগার করবো না। ছোটবেলায় আমার ইচ্ছা ছিল আমি আর্মিতে যোগদান করবো কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। চলে আসলাম পুলিশের চাকরিতে। ২০০৩ সালে পুলিশে চাকরি পাই। ট্রেনিং এর পর যোগদান করি ২০০৫ সালে। তারপর জঙ্গলমহল, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় চাকরির পরে ২০১০ সালে প্রোমোশন পেয়ে জলপাইগুড়িতে জয়েন করি। তারপর বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার, রামপুর আউট পোস্ট এবং তপনে পুলিশ অফিসার হিসেবে কাজ করি। এখন আমি হরিরামপুর পুলিশ স্টেশনে সাব ইন্সপেক্টর অফ পুলিশ পদে কর্মরত।"
তপনে থাকাকালীন বৈদ্যনাথ বাবু ৮০ বছরের এক সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধা শান্তি মন্ডল যাতে দুবেলা দুমুঠো খেতে পেয়ে বাঁচতে পারে তার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।  একই রকম ভাবে বৈদ্যনাথ বাবুর মানবিক কাজের দ্বারা উপকৃত হয়েছেন।
বৈদ্যনাথ বাবুর বাড়িতে তার স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে দুই মেয়ে এবং এক ছেলে।
বৈদ্যনাথ বাবু তার এই মানবিক কাজে পাশে পেয়েছেন তা স্ত্রী রিতু সিংহ বর্মন কে। রিতু দেবী বলেন, "আমার স্বামী বিয়ের পর গরিব এবং দুস্থ মানুষদের সাহায্য করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং আমি তার ইচ্ছাতে সম্মতি জানিয়েছি। আমার স্বামী বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এই সমস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। স্ত্রী হিসাবে আমি তার জন্য খুব গর্ব অনুভব করি।"
বৈদ্যনাথ বাবু বলেন, "ইচ্ছা তো অনেকই হয় যে এই সমস্ত গরিব মানুষজনদের জন্য কিছু করার। তবে সাধ এবং সাধ্যের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ্যের অভাবে অনেক মানুষকে সাহায্য করতে পারিনা। বর্তমানে আমি একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলেছি এবং সেখানে বিভিন্ন শর্ট ফিল্ম আপলোড করছি। আমি ইতিমধ্যেই পাঁচটির মতো শর্ট ফিল্ম আপলোড করেছি। আমার ইচ্ছা আছে এই শর্ট ফিল্ম গুলো থেকে যদি কিছু রোজগার করতে পারি তাহলে সেই রোজগারের টাকা পুরোটাই গরিব মানুষদের কল্যাণে এবং সাহায্যার্থে ব্যবহার করব।"



#bignews #southdinajpur #breakingnews #newsupdate #banglanews #westbengal