ডায়াবেটিস থেকে কিডনি রোগ? । Virtual Clinic
#কিডনি
#কিডনি রোগ
#ডায়াবেটিস
ডা. মোঃ মাজহারুল হক তানিম
ডায়াবেটিস ও হরমোন বিশেষজ্ঞ
ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে কল করুন +8801670465423
ডায়াবেটিক কিডনি রোগ
দীর্ঘ দিনের ডায়াবেটিস, বিশেষত অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস সর্বোচ্চ কুড়ি (৫-২৫) বছরের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ (৩০-৪০%) ডায়াবেটিস রোগীকে ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগে আক্রান্ত করতে পারে। সাধারণত ডায়াবেটিস ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব ধরনের রক্তনালীতে স্থায়ী ক্ষতি করে থাকে।
মানবদেহের দুটো কিডনিতে সব মিলিয়ে প্রায় চব্বিশ লাখ ছাঁকনি থাকে। এ ছাঁকনিগুলো খুব সূক্ষ্ম রক্তনালীর জালি দিয়ে তৈরি; এগুলোর কাজ হলো দেহের জলে দ্রবীভূত বর্জ্যগুলো (অপ্রয়োজনীয় বিষাক্ত পদার্থগুলো) প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়া। এগুলো ঠিকমতো কাজ করতে না পারলে বর্জ্যগুলো রক্তের মধ্যেই থেকে যায়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস বা অনেক দিন যাবত রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজ এই জালিগুলোকে ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। শুরুতে প্রস্রাবের সাথে আমিষ যেতে থাকে, পরবর্তীতে কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস পেতে থাকে এবং কিডনি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়।
কিডনি আক্রন্ত হবার নমুনাসমূহ
ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগের প্রাথমিক নমুনা হলো প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন/আমিষ নির্গত হওয়া। যখন খুব স্বল্প পরিমাণ প্রোটিন যায় তখন একে মাইক্রোঅ্যালবুমিন বলা হয়। এ সময় যদি উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারলে কিডনি বিকল সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে। এরপরও ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থাকলে, প্রোটিন নির্গমনের হার বাড়তে থাকে এবং আক্রান্ত হওয়ার ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যেই কিডনিদ্বয় পুরোপুরি বিকল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
কিডনি বিকলের উপসর্গসমূহ
ক্রমান্বয়ে যখন কিডনির কার্যকারিতা কমতে থাকে তখন এদের অত্যাবশ্যকীয় কাজগুলো বাধাগ্রস্ত হয়। একে বলা হয় দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, যা শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি কিডনি বৈকল্যে পরিণত হয়। ফলে রক্তস্বল্পতা, উচ্চ রক্তচাপসহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে। আর তাই যখন কিডনির কার্যকারিতা কমার দৈহিক লক্ষণ দেখা দেয়, তার আগেই সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হয়ে যায়।
ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগের রোগীরা প্রথমেই সকালে ঘুম থেকে উঠার পর চোখ-মুখ ফোলা খেয়াল করতে পারেন। ক্রমান্বয়ে পায়ের নিচের দিকে ও শরীর ফোলা গোচরীভূত হবে। এরপর ক্ষুধামন্দা, বমিভাব ও বমি, গা চুলকানো, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, গায়ের রং ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত দুর্বলতা, ঘুমের ব্যাঘাত, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, হাত পা কামড়ানো বা ব্যথা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
শুরুর দিকে ডায়াবেটিক কিডনি রোগ
যত প্রাথমিক অবস্থায় ডায়াবেটিক কিডনি রোগ শনাক্ত করা যাবে, তত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে খুব সহজেই প্রাথমিক অবস্থায় কিডনি রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। প্রস্রাব থেকে মাইক্রোঅ্যালবুমিন ও অ্যালবুমিন এবং রক্তের ক্রিয়েটিনিন থেকে eGFR নির্ণয়ের মাধ্যমে কিডনি শতকরা কতভাগ কাজ করছে তা নিখুঁতভাবে বলে দেয়া যায়।
ডায়বেটিসজনিত কিডনি রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
১ম থেকে ৪র্থ ধাপে কিডনি রোগ নিয়ন্ত্রণের উপায়: যদি ১ম থেকে ৪র্থ ধাপে এ রোগ নির্ণয় করা যায় তবে নিম্নবর্ণিত উপায়ে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ডায়াবেটিক কিডনি রোগ ডায়াবেটিসের একটি জটিলতা, তাই আগে থেকেই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অর্থাৎ সকল ডায়াবেটিস রোগীকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়াবেটিসের অন্য রোগীর বেলায়ও যেমন- এক্ষেত্রেও তেমনি (আরও ঘন ঘন অনেকের বেলায়) নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ মাপতে হবে এবং প্রস্রাবের অ্যালবুমিন পরীক্ষা করার দরকার হবে। ডায়াবেটিসের তিন মাসের গড় বা রক্তের হিমোগ্লোবিন এ-ওয়ান সি (HbA1c) সাত এর নিচে রাখতে হবে। আক্রান্ত রোগীদের কিডনি কার্যকারিতা প্রতি ৬ মাস অন্তর পরীক্ষা করা উচিত।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা (১৩০/৮০ এর নিচে), যাদের প্রস্রাবে অ্যালবুমিন থাকে তাদের (১২০/৭০ এর নিচে)। সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা, তা নিয়মিত পরীক্ষা করা। আক্রান্ত রোগীদের কিডনি কার্যকারিতা প্রতি ৬ মাস অন্তর পরীক্ষা করা উচিত।
শারীরিক শ্রম: পরিমিত শারীরিক শ্রম বা নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস রাখতে হবে এবং দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
খাদ্য ব্যবস্থাপনা: সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে; সবজি ও ফল খাওয়া উচিত, চর্বি জাতীয় খাবার ও লবণ কম খাবেন এবং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। খাবারে কাচা লবণ খাওয়া সীমিতকরণ করতে হবে (প্রতিজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্যে দৈনিক ৫ গ্রাম খাবার লবণ বরাদ্দ)।
ওষুধপত্র সেবনে সতর্কতা: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে; তীব্র ব্যথার ওষুধ সেবন করবেন না।
রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অধিকাংশ ডায়াবেটিস রোগীর কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবার ওষুধ সেবন করতে হবে।
শেষ (৫ম) ধাপের ব্যবস্থাপনা
ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগের শেষ বা ৫ম ধাপে বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন। এগুলো সহজলভ্য হচ্ছে ক্রমশ- তবে এখনও ব্যয়বহুল। তবে সময়মতো সচেতন হলে পঞ্চাশ থেকে ষাট ভাগ ক্ষেত্রে এ ভয়াবহ কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডা. শাহজাদা সেলিম
সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ
ডায়াবেটিস থেকে কিডনি রোগ?,ডায়াবেটিক কিডনি রোগ,signs of kidney problems in females,signs of kidney problems lower back pain,kidney disease,symptoms of kidney problems,কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার,কিডনি রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা,কিডনি রোগের লক্ষণ কি কি,কিডনি রোগের কারন,কিডনি রোগের চিকিৎসা,kidney infection,bangla health tips,health tips bangla,doctorola bangladesh,কিডনি ভালো রাখার উপায়,kidni rog bangla,diabetes bangla,diabetes,diabetes information in bangla
Информация по комментариям в разработке