Скачать или смотреть কুম্ভ। প্রয়াগরাজের পর বাংলার ত্রিবেনী কুম্ভের থিম Song প্রকাশ

#kumbh #kumbhmela #hoogly #hooglytribeni #kumbhmela2025 #ত্রিবেণী #কুম্ভ #মহাকুম্ভ #themesong #song #bongiokumbh

বঙ্গীয় ত্রিবেণী কুম্ভের অতীত ও বর্তমান : ধর্মীয় অর্থে তীর্থস্থান বলতে বোঝায় যে স্থানে দেবতা বা স্রষ্টার পূজা/প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় এবং যে স্থানে গমন করলে মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হয়। বঙ্গদেশের গঙ্গাসাগারের সমসাময়িক আরেক পবিত্র তীর্থক্ষেত্র হল সুহ্মক্ষেত্রে অধিষ্ঠিত সপ্তগ্রামের ত্রিবেণীধাম। হুগলি জেলার গঙ্গাতীরে ২২°৫৮’১০’’ উত্তর অক্ষাংশে ও ৮৮°২৬’৪০’’ পূর্ব দ্রাঘিমায় এই স্থান অবস্থিত। “তীর্থের চূড়ামণি” এই ত্রিবেণী সম্পর্কে কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম ও সাধকরঞ্জনের ত্রিপদী ছন্দের কাব্যেও স্তুতি ও মূলাধার ছিল প্রকট। ত্রিবেণীস্নানের মূলাধার হল, যেখানে ইড়া (ভগবতি গঙ্গা), পিঙ্গলা (যমুনা নদী) ও সুষুম্না (সরস্বতী নদী) এই তিনটি নাড়ি একসাথে মিলিত হয়েছে। অন্যদিকে, ইড়া হল ধমনী যার মধ্যে শুদ্ধ শোণিত প্রবাহিত হয়, পিঙ্গলা হল শিরা যার মধ্যে দূষিত রক্ত প্রবাহিত হয় পুনরায় শুদ্ধিকরণের জন্য এবং সুষম্না হল স্নায়ুতন্ত্র যা সকল প্রকার মানব উত্তেজনা ও অনুভূতির উৎসস্থল। এই তিন প্রকার নাড়ি মিলনস্থল হল ত্রিবেণী। তাই ত্রিবেণীতে স্নান করলে সাধকের সুপ্ত শক্তি জাগ্রত হয়, জ্ঞানলাভের পথ প্রশস্ত হয় এবং স্নানার্থী অপার্থিব শান্তিলাভ করে।

বাংলাতেও একসময়ে কুম্ভমেলা প্রচলিত ছিল, যার কথা ভুলে গেছে বিগত অনেকগুলি প্রজন্ম। বাংলায় ইসলামি শাসকদের অনুপ্রবেশ এবং অত্যাচারের ফলে মুছে যায় কুম্ভের নাম। গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতী তিন নদীর সঙ্গমস্থল ত্রিবেণীতে আনুমানিক ১৩১৯ খ্রিস্টাব্দে শেষবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছিলো কুম্ভ মেলা। ৭০৩ বছর অপেক্ষার পর সাধুসন্তদের প্রচেষ্টায় ২০২২ -এ পুনরুদ্ধার হলো বাংলার কুম্ভমেলা। প্রাচীনকালে এই ত্রিবেণী মুক্তবেণী নামেও পরিচিত ছিল। স্থানীয় ইতিহাসবিদ অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ত্রিবেণী কুম্ভ মেলার সঙ্গে গঙ্গাসাগর মেলার একটা যোগ ছিল। তৎকালীন সাধুসন্তরা, গঙ্গাসাগর মেলা শেষ হওয়ার পর তারা পদব্রজে ত্রিবেণীতে আসতেন। মাঘ সংক্রান্তি অর্থাৎ বিষুব সংক্রান্তির দিন তারা স্নান করতেন। এই দিনটাকেই অনুকূম্ভ হিসেবে ধরা হত ত্রিবেণীতে। সপ্তগ্রাম ও ত্রিবেণী শিক্ষা ও সংস্কৃতির তীর্থভূমি ছিল”। স্কন্দপুরাণ অনুযায়ী কুশদ্বীপের রাজা প্রিয়বন্ত’র মোট সাতজন পুত্র (অগ্নিত্র, মেধাতিথি, বপুস্মান, জ্যোতিস্মান, দ্যূতিস্মান, সবন আর ভব্য) ত্রিবেণীধাম সংলগ্ন এই স্থানে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন, সংলগ্ন সাতটি গ্রামে যথা বাসুদেবপুর, বাঁশবেড়িয়া, নিত্যানন্দপুর, কৃষ্ণপুর, দেবানন্দপুর, শিবপুর এবং বলদঘাটিতে তারা তাদের আশ্রম তৈরী করেছিল। তাই এর নাম সপ্তগ্রাম।
তথ্য বলছে, ১২৯২ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি সুলতানির সিপাহসালার জাফর খান গাজী ত্রিবেণী আক্রমন করলে তার নির্দেশাধীন তুর্কি সেনা ত্রিবেণীতে নাকি গণহত্যা চালায়। হিন্দুদের ধর্মীয় শোভাযাত্রা বন্ধ করে দেওয়া হয়।