ডায়াবেটিক রোগী ভাত নাকি রুটি খাবেন? বলেছেনঃ ইসরাত জাহান
নিউট্রিশন ও ডায়েট কনসালট্যান্ট, (অনলাইনের রোগী দেখছেন) 0155-232-7102
#Nutritionist_Israt_Jahan
লাল চালের ভাত (ব্রান সহ), গমের আটার রুটি (ব্রান সহ), সবজি, বাদাম, বুট এবং কলাই জাতীয় খাদ্য রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায় তাই এই খাবার গুলি বেশি খেতে হবে। তবে ক্যালরির হিসেব রাখতে হবে অবশ্যই। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মোট ক্যালরির ২০% আসবে আমিষ থেকে, ৩০% আসবে ফ্যাট থেকে এবং ৫০% আসবে শর্করা থেকে।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা: বর্তমান বিশ্বে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটায় এরকম প্রধান পাঁচটি কারণের মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম।
পৃথিবীতে প্রতি ১০ সেকেন্ডে একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষ মারা যায় এবং প্রতি ১০ সেকেন্ডে দুইজন ডায়াবেটিস রোগী সনাক্ত করা হয়। তবে সঠিক নিয়ম মেনে খাবার খেলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডায়াবেটিস রোগীকে খাবার নিয়ে কিছু মিথ বা ভুল ধারনা–
ডায়াবেটিস রোগীকে খাবার নিয়ে কিছু ভুল ধারনা
আমাকে সব ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে
না, আপনি সবসময়ই আপনার প্রিয় চিনি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারবেন কিন্তু পরিমিত ভাবে ও বুঝে শুনে। যেমন, আপনি চাইলেই মিষ্টি দই বা কাস্টারড ইচ্ছে মত খেতে পারেন না। খেতে পারবেন, কিন্তু খেয়াল রাখবেন যাতে এটা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তালিকার অন্তর্ভুক্ত থাকে।
আপনাকে শর্করা খাবার বাদ দিতে হবে
কি পরিমাণ শর্করা খাচ্ছেন তা খেয়াল রাখতে হবে। খেয়াল রাখবেন পাতে যেন পাউরুটি, চাল বা ভাত, পাস্তা, ওটস ইত্যাদি স্টার্চ সমৃদ্ধ খাবার এর বদলে বার্লি, বাদামি বা লাল চালের ভাত, গম বা গম জাতীয় শস্য দানা ভুক্ত খাবার থাকে। কারণ শস্য দানা জাতীয় খাবার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে বেশি ভূমিকা রাখে।
আমাকে স্পেশাল ডায়াবেটিক খাবার খেতে হবে
পুষ্টিকর খাবারের মূলমন্ত্র সবার জন্যই প্রযোজ্য, আপনি ডায়াবেটিক বা নন ডায়াবেটিক হন না কেন, দামি ও স্পেশাল ডায়াবেটিক খাবার ( যা বাজারে পাওয়া যায়) খুব একটা ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখেনা।
বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি ভাল
সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত প্রোটিন জাতীয় খাবার বিশেষ করে প্রাণীজ প্রোটিন ইনসুলিন রেজিস্ট্যন্স এ ভূমিকা রাখে অর্থাৎ শর্করা নিয়ন্ত্রণের মূল হরমোন এর কর্মক্ষমতা হ্রাস করে। মূল কথা হল– শর্করা, আমিষ, ও চর্বি জাতীয় খাবার যাই খান না কেন তার সুষম বণ্টন কাম্য।
বিশেষত– প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি খাবার বা আন–প্রসেসড ফুড বা অপ্রক্রিয়াজাত খাবার এবং প্যাকেটহীন খাবার ডায়াবেটিস সুরক্ষা বান্ধব।
আরো পড়ুন: প্রতিদিনের সুষম খাদ্যের তালিকা
ডায়াবেটিস রোগ হলে কি খাবার বেশি খাবেন ?
উপকারী চর্বি যেমন, বাদাম, অলিভ ওয়েল, মাছের তেল ইত্যাদি।
শাক সবজি ও ফলমূল– মূলত পরিষ্কার, টাটকা ও রঙিন শাকসবজি ভাল। জুসের থেকে ফল বেশি খেতে হবে।
দেশজ মাছ ও মুরগি।
ভাল প্রোটিন জাতীয় খাবার– যেমন, ডিম, অল্প চর্বি জাতীয় দুধ, টক দই ইত্যাদি।
ডায়াবেটিস রোগ হলে কি খাবার কম খাবেন?
ডিপ ফ্রাই খাবার বা অতিরিক্ত রান্না করা খাবার
প্যাকেটজাত ফাস্ট ফুড, বিশেষ করে যাতে চিনি, বেকিং করা খাবার, মিষ্টি, ডেজারট, চিপস ইত্যাদি থাকে।
সাদা পাউরুটি, চিনিযুক্ত সেরিয়াল, প্রক্রিয়াজাত পাস্তা বা চাল
প্রক্রিয়াজাত মাছ বা মাংস
উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার ও স্লো রিলিজ কার্বোহাইড্রেট
আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট এর বিশাল ভূমিকা রয়েছে, এটি শরীরের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, এমন কি এটির ভূমিকা চর্বি বা প্রোটিনের তুলনায় বেশি। সুতরাং কি ধরনের শর্করা জাতীয় খাবার খাচ্ছেন এ ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত।
প্রক্রিয়াজাতকরণ শর্করা যেমন, সাদা পাউরুটি, চিনিযুক্ত সেরিয়াল, প্রক্রিয়াজাত পাস্তা বা চাল ছাড়াও সোডা, মিষ্টি, প্যাকেটজাত খাবার যাতে চিনি যুক্ত থাকে ইত্যাদির ব্যাপারে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিতমনযোগী হতে হবে স্লো রিলিজ কার্বোহাইড্রেট ও উচ্চ আঁশযুক্ত খাবারের প্রতি এগুলো ধীরে ধীরে শরীরে রক্তের সাথে মিশে যা ধীরে ইনসুলিন নিঃসরণে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট এবং খাদ্য তালিকা
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট এবং খাদ্য তালিকা
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের খাদ্যব্যবস্থা নিয়ে আমাদের অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে। তাদের জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাবার নিয়ে অনেকের মনেই নানা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।
আজকে আমরা আলোচনা করব ডায়াবেটিস রোগীদের আদর্শ খাদ্য তালিকা এবং ডায়েট চার্ট নিয়ে।
ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ হল এমন একটি রোগ যা আমাদের খাদ্যাভ্যাসের সাথে অনেকাংশে নির্ভরশীল। জানা যায় যে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যাক্তির হৃদ রোগজনিত সমস্যা, মানসিক রোগ, যেমন- ডিপ্রেশন এ আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা– নন ডায়াবেটিক এর থেকে প্রায় দ্বিগুণ।
কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ( যাতে ইনসুলিন লাগেনা, শুধুমাত্র ওষুধে চিকিৎসা দেয়া হয় ) নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং কিছু ক্ষেত্রে নিরাময়যোগ্য। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে – এমন না যে, সব ধরনের খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে বা মজার খাবার খাওয়া যাবেনা এর মানে হল, সব খাবারই খাওয়া যাবে, কিন্তু পরিমিত মাত্রায়, যাতে আপনার মুড ও শক্তির সমন্বয় ঘটে।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য শর্করা জাতীয় খাবার ক্ষতিকর কারণ এটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, তাই খাবারে শর্করা জাতীয় খাবার কমাতে হবে। কিছু শর্করা জাতীয় খাবার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা তাড়াতাড়ি বাড়ায় যেমন, চিনি, মিষ্টি, বেশি ছাঁটা চালের ভাত, ময়দার রুটি, সেগুলো কম খেতে হবে।
Информация по комментариям в разработке