Скачать или смотреть ডেঙ্গু জ্বর || (Dengue Fever) ||

ডেঙ্গু জ্বর (Dengue Fever)
#ডেঙ্গু #ডেঙ্গু_জ্বর #dengue #denguefever #DenguePrevention #DengueAwareness

ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাল রোগ যা এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। সাধারণত বর্ষাকালে এই মশা বেশি দেখা যায়, কারণ জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে এরা বংশবৃদ্ধি করে। ডেঙ্গু ভাইরাস ৪টি ভিন্ন সেরোটাইপের (DENV-1, DENV-2, DENV-3, DENV-4) মাধ্যমে ছড়ায়। একবার একটি সেরোটাইপ দিয়ে আক্রান্ত হলে সেই সেরোটাইপের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, কিন্তু অন্য সেরোটাইপ দিয়ে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে রোগের তীব্রতা অনেক বেশি হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণঃ
ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণগুলো হঠাৎ করেই দেখা দেয় এবং সাধারণত ৪ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
★ উচ্চ তাপমাত্রা: হঠাৎ করে ১০২°F থেকে ১০৫°F পর্যন্ত জ্বর আসে।
★ তীব্র মাথাব্যথা: চোখের পেছনে এবং কপালের দিকে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
★ মাংসপেশি ও হাড়ে ব্যথা: এই ব্যথা এত তীব্র হতে পারে যে একে "ব্রেকবোন ফিভার" বলা হয়।
★ চামড়ায় লালচে দাগ (র‌্যাশ): জ্বর শুরু হওয়ার ২-৩ দিন পর শরীর ও মুখে লালচে ফুসকুড়ির মতো দাগ দেখা দিতে পারে।
★ বমি বমি ভাব ও বমি: পেটের সমস্যা, বমি বমি ভাব এবং বমি হতে পারে।
★ ক্লান্তি ও দুর্বলতা: রোগী অতিরিক্ত দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করেন।
★ রক্তক্ষরণ: কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে হালকা রক্তপাত হতে পারে।

যাদের গুরুতর ডেঙ্গু বা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার হয়, তাদের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো আরও মারাত্মক রূপ নেয়। জ্বর কমে যাওয়ার পর হঠাৎ করে পেট ব্যথা, ঘন ঘন বমি, শ্বাসকষ্ট, শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণ (যেমন- প্রস্রাব বা মল দিয়ে রক্ত যাওয়া), এবং রক্তচাপ কমে যাওয়ার মতো গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন।

চিকিৎসাঃ
ডেঙ্গু জ্বরের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তাই লক্ষণ অনুযায়ী সহায়ক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
★ পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিন: ডেঙ্গু রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।
★ প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ: পর্যাপ্ত পানি, ডাবের পানি, ফলের রস এবং খাবার স্যালাইন পান করা খুবই জরুরি। এটি শরীরের পানি শূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে।
★ জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখুন: জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনো ব্যথানাশক যেমন- অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। এই ওষুধগুলো রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
★ চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি লক্ষণগুলো গুরুতর হয়, যেমন- অতিরিক্ত পেট ব্যথা, ক্রমাগত বমি, বা রক্তক্ষরণের লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়ঃ
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা। যেহেতু এই মশা পরিষ্কার ও স্থির পানিতে বংশবৃদ্ধি করে, তাই মশা তাড়ানোর জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
★ জমে থাকা পানি সরিয়ে দিন: ঘরের ভেতরে এবং আশেপাশে কোথাও যেন পানি না জমে থাকে তা নিশ্চিত করুন। ফুলের টব, টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, এয়ার কন্ডিশনারের নিচে জমে থাকা পানি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
★ মশারি ব্যবহার করুন: দিনের বেলায় বা রাতে ঘুমানোর সময় মশারির নিচে থাকুন।
★ প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরুন: মশার কামড় থেকে বাঁচতে লম্বা হাতাওয়ালা জামা এবং লম্বা প্যান্ট পরুন।
★ মশা তাড়ানোর স্প্রে বা লোশন ব্যবহার: মশা তাড়ানোর জন্য স্প্রে, কয়েল বা লোশন ব্যবহার করতে পারেন।

ডেঙ্গু একটি মারাত্মক রোগ হতে পারে। তাই এর লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। আপনার বা আপনার পরিবারের কারো মধ্যে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Dr. Md. Asaduzzaman Patwary
More details:
   / @asaduzzamanpatwary1983