নাস্তিকসহ কিছু মডারেট মুসলিমদেরকেও বলতে শুনা যায় যে, ইসলামে গান-বাজনা কেন নিষিদ্ধ! গান-বাজনা শুনতে সমস্যা কোথায়! এই লেখাটিতে গান-বাজনার ক্ষতিকর দিক, ইসলামে গান-বাজনা হারাম হওয়ার রেফারেন্স এবং কেন গান-বাজনা হারাম তা তুলে ধরা হয়েছে। 
আল-কোরআনে গান-বাজনা হারাম 
● মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُهِينٌ
একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে অন্ধভাবে এবং উহাকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। 1
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা:) বলেন, "এ আয়াতে 'অবান্তর কথাবার্তা (لَهُمْ عَذَابٌ) বলে গান-বাজনা ও অন্যান্য মন্দকে বোঝানো হয়েছে।2 এমনিভাবে জাবির, ইকরিমা, সাঈদ ইবনু জুবাইর, মুজাহিদ, মাকহূল, আমর ইবনু শুআইব এবং আলী ইবনু নাদীমা (রহ:) থেকেও এই একই ব্যাখ্যা বর্ণিত আছে। বিখ্যাত তাবেয়ী হাসান বসরি (রহ:) বলেন, 'গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র সম্পর্কে এই আয়াত নাযিল হয়েছে।3 আব্দুর রহমান সা'দি (রহ:) উল্লেখিত শব্দের ব্যাখ্যায় যাবতীয় অশ্লীল কাজকর্ম, অনর্থক কথাবার্তা, গীবত, চোগখুরী, গালি-গালাজ, মিথ্যা, কুফর, ফিসক, পাপাচার, অবৈধ খেলাধুলা, গান-বাজনা ও সব রকমের বাদ্যযন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।4
ইবনুল কাইয়্যিম (রহ:) বলেন, সাহাবী ও তাবিয়িদের ব্যাখ্যা থেকে জানা ও সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায়, এই আয়াতে 'অবান্তর কথাবার্তা' বলে গান-বাজনা ও বাদ্যযন্ত্রকে বোঝানো হয়েছে। আবুস সাহাবা (রহ:) বলেন, 'আমি এই আয়াত সম্পর্কে ইবনু মাসউদ (রা:)-এর কাছে জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, "আল্লাহর কসম করে বলছি, এর মাধ্যমে কেবলমাত্র গান-বাজনাকেই বোঝানো হয়েছে।" এই কথাটি তিনি তিনবার পুনরাবৃত্তি করলেন।5 আল্লাহ তায়ালা সূরা লুকমানে বলেন, এদের জন্য রয়েছে অবমানকর শাস্তি। অর্থাৎ যারা গান-বাজনা শুনে তাদের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ কঠিন শাস্তি রয়েছে। 
গান-বাজনা শয়তানের সুর
● মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, 
قَالَ اذْهَبْ فَمَنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ فَإِنَّ جَهَنَّمَ جَزَاؤُكُمْ جَزَاءً مَوْفُورًاوَاسْتَفْزِزْ مَنِ اسْتَطَعْتَ مِنْهُمْ بِصَوْتِكَ وَأَجْلِبْ عَلَيْهِمْ بِخَيْلِكَ وَرَجِلِكَ وَشَارِكْهُمْ فِي الْأَمْوَالِ وَالْأَوْلَادِ وَعِدْهُمْ ۚ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلَّا غُرُورًا
আল্লাহ (শয়তানকে) বলেন: ঠিক আছে, তুমি যাও, এদের মধ্য থেকে যারাই তোমার অনুসরণ করবে, তুমি-সহ তাদের সবার জন্য জাহান্নামই হবে পূর্ণ প্রতিদান। তুমি যাকে-যাকে পারো তোমার আওয়াজের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করো। তাদের ওপর অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনীর আক্রমণ চালাও। ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হয়ে যাও। এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতির জালে আটকে ফেলো। আর শয়তানের প্রতিশ্রুতি ধোঁকা ছাড়া আর কিছু নয়।6
ইবনুল কাইয়্যিম (রহ:) বলেন, 'যারা আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতাপূর্ণ কথা বলে এবং বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে, যেমন: বাঁশি, নিষিদ্ধ জাতের দফ, ঢোল-তবলা ইত্যাদি এগুলো হলো শয়তানের আওয়াজ।7 
● মহান আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
أَفَمِنْ هَٰذَا الْحَدِيثِ تَعْجَبُونَ. وَتَضْحَكُونَ. وَأَنْتُمْ سَامِدُونَ
তোমরা কি এই বিষয়ে আশ্চর্যবোধ করছ? এবং হাসছ-ক্রন্দন করছ না? ররং তোমরা খেল-তামাশায় লিপ্ত রয়েছ!8
ইবনু কাসীর (রহ:) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন, "সুফ্ইয়ান সাওরি (রহ:)-এর পিতা ইবনু আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, '(সূরা নাজমের ৬১ নম্বর) আয়াতে ব্যবহৃত 'খেলা-তামাশা' (سَامِدُونَ) শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো গান-বাজনা। এটি ইয়ামানি শব্দ। যেমন 'ইসমিদ লানা (اِسْمِدْ لَنَا)-এর অর্থ হলো, আমাদের জন্য গান গাও৷" ইকরিমা (রহ:) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।9 কুরআন অনুযায়ী গান-বাজনা স্পষ্টভাবে হারাম নিষিদ্ধ। আল্লাহ তায়ালা গান-বাজনাকে হারাম করেছেন। যারা গান-বাজনা শুনবে তারা এর জন্য কঠোর শাস্তি ভোগ করবে। 
হাদীসের গান-বাজনা হারাম 
'আবদুর রহমান ইবনু গানাম আশ'আরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমার নিকট আবূ আমির কিংবা আবূ মালিক আশ'আরী বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ্র কসম! তিনি আমার কাছে মিথ্যে কথা বলেননি। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশমী কাপড়, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।
#alhamdutv  #banglawaz  #waz #banglanews
                         
                    
Информация по комментариям в разработке