Скачать или смотреть ধর্মসাগর দিঘী (০০১)।

ধর্মসাগর দিঘীর ইতিহাস :সমতটের রাজধানী খ্যাত কুমিল্লা জেলা বাংলাদেশের একটি অন্যতম অঞ্চল।কুমিল্লা জেলার ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত অধ্যায় হলো এই ধর্মসাগর।তৎকালীন ত্রিপুরার মহারাজ ধর্ম মাণিক্য ১৪৫৮ সালে এই ঐতিহাসিক দিঘীটি খনন করেন।ধর্মসাগর দিঘীর বর্তমান আয়তন ২৩.১৮ একর।তার নামানুসারে এই দিঘীর নামকরণ করা হয় ধর্মসাগর দিঘী।এটি কুমিল্লা সদর এর বাদুরতলা এলাকায় অবস্থিত।রাজা ধর্ম মাণিক্য নিজের নামানুসারে দিঘীটি উৎসর্গের সময় তাম্রলিপি চয়ন করেছিল।

"চন্দ্র বংশোতে মহামাণিক্য নৃপবর।
তানপুত্র শ্রী ধর্ম মাণিক্য শশধর।
তেরণ আশি শতকে সোমবার দিনে।
শুল্ক পক্ষ ত্রয়োদশী মেঘ সংক্রমণে।
তাম্রপত্রে লিখি দলি এসব বচন।
আমা বংশে মারি যেবা হয় তা রাজন।
তাহার দাগের দাশ হইবেক আমি।
আশা কীর্তি ব্রহ্মবৃত্তি না লঙ্ঘিয় তুমি।

চন্দ্র বংশোদ্ভূত মহামাণিক্যের সুধীপুত্র শশধর শ্রী ধর্মমাণিক্য ১৩৮০ শতকের মেঘ সংক্রম অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ তারিখে সোমবার শুক্ল ত্রয়োদশী তিথিতে কৌথুকান্দির তুষ্ঠ বিপ কক্ষে শস্য সমন্বিত ও ফল বৃক্ষাদি পূণ ঊনত্রিশ দ্রোন ভূমি দান করলেন। আমার বংশ বিলুপ্ত হলে যদি এই রাজ্য কোন ভূপতির হস্তগত হয়,তিনি এই ব্রহ্মবৃত্তি লোপ না করলে আমি তার দাসনুদাস হবো।

একসময়ের আমবাগানের গাছ কেটে পাণীয় জলের সংকট লাঘবে মানবতার কল্যাণেই ধর্মসাগর খনন করা হয়।শোনো গো দক্ষিণ হাওয়া,প্রেম করেছি আমি---,শচীন দেব বর্মণের গানে,জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম এর কবিতা এই ধর্মসাগরের পাড়ে বসেই রচিত।কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ত্রিপুরার রাজার আমন্ত্রনে রাণীর কুঠিরে রাত্রি যাপন করেন এবং ধর্ম সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে তিনি গেয়েছেন " যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে...।

এই অপরুপ সৌন্দর্যময় দিঘীটি পরিদর্শন করার জন্য প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থীর সমাগম হয়।এর পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও শীতল হাওয়া যে কোন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে মুগ্ধ করবে।
কুমিল্লা।