Скачать или смотреть অস্থায়ী ক্যাম্প বানিয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান, জনমনে আতঙ্ক।

বর্মাছড়ি আর্যকল্যাণ বনবিহারের পাশে চলছে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পাঁয়তারা!
সাজেকের ভূয়োছড়িতে সেনা অভিযান, ৮ গ্রামবাসীর বাড়িতে তল্লাশি-হয়রানি, ১ জনকে আটক। পানছড়ির দুই স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প বানিয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান, জনমনে আতঙ্ক।

খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়নে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পাঁয়তারা চলছে—এমন খবর পাওয়া গেছে।
আর্যকল্যাণ বনবিহারের পাশের এক গ্রামবাসীর বসতভিটায় বাড়ি তৈরির জন্য প্রস্তুতকৃত জায়গায় দেওয়া হয়েছে হেলিপ্যাডের চিহ্ন, খাটানো হয়েছে বেশ কয়েকটি তাঁবু।
আজ ২২ অক্টোবর, বুধবার সকাল থেকে সেনারা গ্রামবাসীর সৃজিত বাগানের গাছ কেটে ক্যাম্পের জন্য জায়গা প্রস্তুত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর আগে, ১৮ অক্টোবর খিরাম আর্মি ক্যাম্পের মেজর সাইফুর রহমান তুর্যোর নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি সেনাদল বর্মাছড়ি এলাকায় যায় এবং সেখানেই তাঁবু খাটিয়ে রাখে।
এদিকে, আজ আর্যকল্যাণ বনবিহারে চলছে ১৮তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেনারা ভিক্ষুদের কাছে জানতে চেয়েছে, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না—না জানালে “ঝামেলা হতে পারে” বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, বর্মাছড়ি এলাকায় নতুন ক্যাম্পের কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ আশপাশেই খিরাম ও শুকনাছড়ি ক্যাম্প রয়েছে।
তারা নতুন ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা জানিয়েছেন।

রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নের ভূয়োছড়ি এলাকায় সেনাবাহিনী ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। গত ১৮ অক্টোবর ২০২৫ থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান এখনো চলমান রয়েছে। এ অভিযানে বাঘাইহাট সেনা জোনের অন্তত ১৮০ জন সেনা সদস্য অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযান চলাকালে সাধারণ গ্রামবাসীর ওপর নির্যাতন, ঘরবাড়ি তল্লাশি, জোর করে গবাদিপশু খেয়ে ফেলা, চাল জব্দসহ বিভিন্ন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এমনকি এক জুমচাষীর জুমঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সেনারা ১ জনকে আটক ও অন্তত ৮ গ্রামবাসীর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। আটক ব্যক্তি হলেন চিত্ত রঞ্জন চাকমা।
এছাড়া সেনা তল্লাশির সময় দীপন ত্রিপুরা, দেবাশীষ চাকমা, শুককো চাকমা, রুপন চাকমা, চোখকে চাকমা, মুনিচ চাকমা, চিত্তরঞ্জন চাকমা ও হিরোহিতো চাকমা নামের কয়েকজন গ্রামবাসী নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযানের কারণে এলাকায় চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী অবিলম্বে এই হয়রানিমূলক সেনা অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় দুই স্থানে সেনাবাহিনী অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এতে এলাকায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে পানছড়ি সাবজোন থেকে সাতটি গাড়িতে সেনা সদস্যরা পুজগাং মধুমঙ্গল পাড়ায় পৌঁছে, সেখান থেকে লোগাং নদী পার হয়ে মরিপাড়া হয়ে রঞ্জন কুমার পাড়ায় (চাম্মে আদাম) গিয়ে অস্থায়ী ক্যাম্প গড়ে তোলে।
অন্যদিকে, আরও প্রায় ৬০ জন সেনা সদস্য লোগাং আমতলী হয়ে চিকনচান পাড়া পুরানো বিজিবি পরিত্যক্ত ক্যাম্পের টিলায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে অবস্থান নিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেনাদের এমন অবস্থান সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
তাদের অভিযোগ, সেনারা এলাকায় অভিযান চালানোর সময় নিপীড়ন, হয়রানি ও ঘরবাড়ি তল্লাশির মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে।
এছাড়া স্থানীয়দের দাবি, সেনারা ‘অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’ খোঁজার কথা বললেও বাস্তবে সাধারণ মানুষই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, অথচ সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র দল কাছাকাছি অবস্থান করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে