নওগাঁ গাজা সমিতির কার্য্যালয়
অনেকেই হয়তো জেনে অবাক হবেন একসময় পাট, চা, ইক্ষুর মত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল ছিলো গাজা। এরশাদ মাত্র তিরিশ বছর আগে গাজা চাষ ও বিপনন নিষিদ্ধ করলেও এখনো কুষ্টিয়া-পাবনা অঞ্চলের চরাঞ্চলে গোপনে গাজার চাষ হয়। নওগাঁ, বগুড়া এসব জেলা গাজা চাষের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলো। নওগাঁ শহরের বিভিন্ন জায়গায় গাজা সোসাইটির বিশাল সব স্থাপনা চোখে পড়লো। এগুলোই এখন নওগাঁর পর্যটন আকর্ষক স্থান।
নওগাঁয় বাস থেকে নেমে রিকসা ডাকলেই গাজা সমিতি নিয়ে যাবে
গাজার ইতিহাস ৪০০০ বছরের জানা যায়। বিভিন্ন রাজবংশ, সাম্রাজ্য ও মানুষের দ্বারা গাজা শাসিত হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে, আবার জনবহুল হয়েছে[১]। মূলত একটি কনানীয় উপনিবেশ, ফিলিস্তিনীদের দখলে আসা, এবং একটি প্রধান শহর হওার আগে এটা প্রায় ৩৫০ বছর ধরে প্রাচীন মিশরীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছিল। গাজার প্রায় ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইস্রায়েলীয়দের দখলে আসে, কিন্তু প্রায় ৭৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আসিরীয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে পরে। ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহান আলেকজান্ডার এই শহরকে ঘেরাত্ত ও দখল করে। অধিকাংশ অধিবাসীই হামলার সময় নিহত হন, এবং এই শহর, নিকটবর্তী বেদুইনরা দ্বারা পুনর্বাসিত হয় ও হেলেনীয় শিক্ষা ও দর্শনের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়। ৯৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হাসমনিয়ান দের দখলে আসার আগে এটি দুই গ্রিকের উত্তরাধিকারী, সিরিয়ার সেলুসিড ও মিশরের টলেমির মধ্যে বারংবার হাতবদল হতে থাকে।

২০০৭ সালে গাজা
গাজা রোমান জেনারেল নিয়াস পম্পেয়াস ম্যাগনাস দ্বারা পুনর্নির্মিত হয় এবং ৩০ বছর পরে মহান হিরোদকে (যিহূদিয়ার রাজা) প্রদান করা হয়। রোমান সময়ের সময়ে গাজা বিভিন্ন সম্রাট থেকে অনুদান পেতে থাকে এবং তার সমৃদ্ধি বজায় রাখে। গ্রীক, রোমান, ইহুদি, মিসরীয়, পারসি ও নবতাঈের ৫০০ জন সদস্যের একটি বৈচিত্র্যময় রাষ্ট্রীয় পরিষদ এই শহরকে নিয়ন্ত্রণ করত। শহরে খ্রিস্ট ধর্মে রূপান্তর শুরু ও সম্পন্ন হয় সেন্ট পরফায়রিয়াসের অধিনে, যিনি ৩৯৬ ও ৪২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ৮ টি পৌত্তলিক মন্দির ধ্বংস করেন। ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে, গাজা, মুসলিম সেনাপতি আমর ইবনুল আস দখল করেন, এবং অধিকাংশ গাজাবাসী গোড়ার মুসলমান শাসনকালে ইসলাম গ্রহণ করে। অতঃপর শহরের সমৃদ্ধি ও পতন সময়কাল মাধ্যমে চলতে থাকে। ১১০০ খ্রিষ্টাব্দে ক্রুসেডাররা, ফাতেমীয়দের কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেয়, কিন্তু সালাহউদ্দিন আইয়ুবী তাদের বিতাড়িত করেন। ১৩ শতাব্দীর শেষের দিকে গাজা মামলুকদের হাতে থাকে, এবং সিনাই উপদ্বীপ থেকে কায়েসরা পর্যন্ত একটি বিশাল প্রদেশের রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৬শ শতকে, উসমান নিযুক্ত, রিদোয়ান রাজবংশের অধিনে এটি সুবর্ণ যুগের সাক্ষী হয়।
গাজা ১৯০৩ এবং ১৯১৪ সালে ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প সম্মুখীন হয়। ১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ বাহিনী শহর দখল করে (গাজার তৃতীয় যুদ্ধে)। ২০শ শতাব্দীর প্রথমার্ধে, মেন্ডেটরি শাসনাধীনে গাজা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৮ -এর আরব-ইসরাইলি যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনিদের দেশত্যাগের ফলে শহরের জনসংখ্যা ফুলে ফেঁপে ওঠে। ১৯৬৭র ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরাইলদের দ্বারা দখল করার আগে পর্যন্ত গাজা মিশরের শাসনাধীনে ছিল। গাজায় প্রথম ইন্তিফাদার সময় রাজনৈতিক প্রতিরোধের একটি কেন্দ্র বিন্দু হয়ে ওঠে, এবং ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির অধীনে, এটি নতুন গঠিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকার জন্য নির্ধারিত হয়। ২০০৫ সালে ইসরাইল একতরফাভাবে গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। ২০০৭এ, হামাস, উভয় ফিলিস্তিনের নির্বাচনে বিজয়ী হিসেবে এবং শহরে প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহ সঙ্গে বিরোধপূর্ণ যুদ্ধে জিতে এবং তারপর থেকেই একমাত্র শাসক কর্তৃপক্ষ হয়েপরে। ইস্রায়েল পরবর্তীকালে ভূখণ্ড অবরোধ করে এবং ২০০৮-২০০৯, ২০১২ এবং ২০১৪ সালে এটির বিরুদ্ধে নিপীড়নের শুরু করে, কথিত রকেট হামলার একটি প্রতিক্রিয়া হিসেবে।
Информация по комментариям в разработке